ঔষধ তৈরিতে সাধারণত বিভিন্ন ভেষজ উপাদান ব্যবহার করা হয়। এসব ভেষজ উপাদান যদি সরাসরি আপনার বাড়িতেই থাকে বা আপনি যদি এসব ভেষজকে সরাসরি ব্যবহার করতে পারেন তবে তো আর কোনো কথাই নেই।
এমনটা করতে পারলে দু’টো লাভ! এক. সরাসরি প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ উপাদান গ্রহণ করাটা নিশ্চিত হবে এবং দুই অতিরিক্ত ঔষধ গ্রহণের মতো নিরাপদ বিষপান করবার প্রয়োজন পড়বে না!
চলুন তবে আজ বাড়ির পাশেই বেড়ে উঠা এমন একটি ভেষজ উদ্ভিদ নিয়ে কথা বলা যাক, চিরতার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয় ই রয়েছে, যদি সঠিকভাবে এই ভেষজকে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার জীবনের স্বাস্থ্যগত দিকের অনেককিছুই পরিবর্তন করে দিবে।
চিরতা কি?
চিরতা একটি ভেষজ উপাদান। সারা পৃথিবী এটিকে Swertia Chirayita নামে চিনে থাকে। যা সরাসরি প্রকৃতি থেকেই পাওয়া যায় এবং আলাদাভাবে এটি তৈরি করার প্রয়োজন পড়ে না।
এই চিরতার মূল কাজ হলো বিভিন্ন রোগ নির্মুলে সহায়ক কিংবা কখনো কখনো প্রধান ভুমিকা পালন করা। বিশেষ করে ম্যালেরিয়া, ডায়াবেটিস এবং লিভারের রোগের মতো বিভিন্ন রোগ দূর করতে চিরতাকে প্রধান ভেষজ উপাদান হিসাবে কাজে লাগানো হয়।
চিরতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলগুলিতে বেড়ে উঠা। পুরো পৃথিবীর অধিকাংশ চিরতার অভাব দূর করে কাশ্মীর এবং ভুটানে জন্মানো চিরতা। এই দুটো স্থানে অনেক বেশি পরিমাণ চিরতা জন্মায় বলে সারা পৃথিবীতে তারা এটি সরবরাহও করে থাকে।
এক একটি চিরতার উচ্চতা হয় প্রায় প্রায় ০.৫ থেকে ১.৫ মিটার পর্যন্ত। সম্পূর্ন চিরতা গাছটিই দাঁড়িয়ে থাকে একটি লম্বা খাড়া কান্ডের উপর ভর করে। যা বিশেষ একটি ছাল দ্বারা আবৃত থাকে সবসময়।
চিরতার পাতার ব্যাপারে যদি আলোচনা করি তবে বলবো এই ভেষজ উদ্ভিদের পাতাগুলি ল্যান্সোলেট টাইপের। ফলে এর কোনো ডালপালাও থাকে না৷ সাধারণত প্রতিটি চিরতা গাছে হুলদ রঙের ছোট ছোট ফুল থাকে।
যারা এই চিরতার বৈজ্ঞানিক তথ্য জানতে চান তারা আমাদের সাথেই থাকুন।
চিরতার বৈজ্ঞানিক পরিচয়
চলুন এবারে জেনে নেওয়া যাক চিরতা সম্পর্কিত এমনকিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য, যা হয়তো আপনি পূর্ব থেকে জানতেনই না:
- বৈজ্ঞানিক নাম: Swertia chirayita
- হিন্দি নাম: চিরায়িতা
- গাছের উচ্চতা: প্রায় ১০ সে.মি
- ফলের উচ্চতা: ৬ মি.মি.
- আকৃতি: লম্বা এবং ডিম্বাকৃতি
- প্রজাতি: বর্ষজীবি উদ্ভিদ
- উন্নত প্রজাতি: Swertia perennis
- ব্যবহার: বিভিন্ন ঔষধ তৈরিকরণ
চিরতার পুষ্টিগুণ
চিরতার আলাদা পুষ্টিগুণ রয়েছে। ফলে এটিকে বিভিন্ন ঔষধে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে ব্যবহার করা হয়। চলুন এবারে জেনে নেওয়া যাক এই চিরতায় ঠিক কোনো কোন উপাদান নির্দিষ্টভাবে রয়েছে:
- জ্যান্থোনস
- অ্যালকালয়েড
- গ্লাইকোসাইড
- ওফেলিক অ্যাসিড
- চিরাটিন
- স্টেরিক অ্যাসিড
- ওলিক অ্যাসিড
- পামিটিক অ্যাসিড
চিরতার উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রকৃতি থেকে আমরা সরাসরি বিভিন্ন উপাদান পেয়ে থাকি, যা সুস্বাস্থ্য কিংবা বিভিন্ন শারীরিক অবস্থা উন্নত রাখতে ব্যবহার করা যায়। সোজা বাংলায় এসব উপাদান আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যথেষ্ট উপকারে আসে।
এর বিপরীতে কিন্তু এসব উপাদান অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে দেহে এর নেতিবাচক প্রভাবও পড়ে। সুতরাং সর্বোচ্চ সচেতনতার খাতিরে জেনে নেওয়া যাক চিরতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
চিরতার উপকারিতা
শুরুতেই আমরা জানবো চিরতার বেশকিছু উপকারিতা সম্পর্কে। যা হয়তো আপনি জানতেন না কিংবা জানলেও হয়তো জোর দিয়ে মেনে চলার চেষ্টা করেননি।
জ্বর কমাতে সাহায্য করে
ঠাণ্ডা ও ফ্লুর কারণে যদি আপনার দেহে জ্বর আসে বা প্রচন্ড জ্বর সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে চিরতার সাহায্যে উপকৃত হতে পারেন। কারণ চিরতা যেকোনো জ্বর বা ম্যালেরিয়াল জ্বর, হিস্টিরিয়া এবং খিঁচুনিতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে৷ জ্বর কমাতে চরিতার সাহায্য নিতে চাইলে আপনাকে চিরতার নির্যাস সরাসরি খেতে হবে।
লিভারের সুস্থতা নিশ্চিত করে
আপনি কি জানেন চিরতাতে প্রচুর পরিমাণে হেপাটোপ্রোটেকটিভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে? যারা হেপাটোপ্রোটেকটিভ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানেন না তাদের বলে রাখা ভালো, এটি কিছুটা লিভারের সুস্থতা সম্পর্কিত বৈশিষ্ট্য। যা লিভারকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে থাকে।
চিরতা শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে থাকে। লিভারের নতুন কোষের পুনর্জন্মেও সাহায্য করে থাকে এই চিরতা। সুতরাং লিভারের সুস্থতা নিশ্চিত করতে যদি কোনো প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্য নিতে চান সেক্ষেত্রে চরিতাকে ব্যবহার করতে পারেন। আশা করি ধারণার বাইরে উপকৃত হবেন।
ত্বকের যত্নে কাজ করে
চিরতাকে সাধারণ স্কিনের বেস্টফ্রেন্ড বলা হয়। চিরতাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য থাকায় এটি ত্বকের শতভাগ উপকারিতা নিশ্চিত করে। ত্বকে যদি লালচে ভাব দেখা যায়, ফুসকুড়ি দেখা যায়, ঘাঁ হয়, ব্রণ হয় তবে আপনাকে চিরতা ব্যবহার করতেই হবে।
কারণ চিরতা এসব সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে একাই একশো হিসাবে কাজ করে। তাছাড়া যারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ত্বক চান তাদের ক্ষেত্রেও চিরতা বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
রিলেটেডঃ মেয়েদের মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় ২০২৩
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
চিরতার অন্যতম উপকারিতা হলো এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতির কারণেই এমনটা করতে সক্ষম হয় চিরতা। বিশেষ করে লিভার ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর ভুমিকা পালন করতে সক্ষম হয় এই চিরতা।
ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখে
ডায়াবেটিসের মতো লাগামহীন এবং জটিল রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে চিরতা। মানসিক অশান্তি, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং অনুপযুক্ত জীবনযাত্রার কারণে যারা ডায়াবেটিস রোগে ভোগে তারা শেষ ভরসা হিসাবে চরিতাকে ব্যবহার করে।
কারণ চিরতা রক্তে উপস্থিত চিনির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ইনসুলিন নিঃসরণেও কাজ করে থাকে চিরতা।
অ্যানিমিয়া রোগ দূর করে
অ্যানিমিয়া রোগ বিশেষ করে লোহিত রক্তকণিকার অপর্যাপ্ত পরিমাণের কারণে সৃষ্ট রোগ নিরাময় করতে চিরতা ব্যবহার করা হয়। স্বাস্থ্যখাতে এই উদ্ভিদ ব্যবহার করে অ্যানিমিয়া রোগের বিভিন্ন ঔষধ তৈরি করা হয়।
এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো চরিতা নারীদের ক্ষেত্রে বেশ উপকার সাধন করে। কারণ প্রতি মাসের নির্দিষ্ট একটি সময়ে নারীদের রক্ত নিঃসরণ হয়। ফলে দেখা দেয় রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া। এমতাবস্থায় চরিতার নির্যাস খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
বদহজম দূর করে
পাচনতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা যেমন গ্যাস্ট্রাইটিস বা গ্যাস্ট্রিক, বদহজম (পেট খারাপ), পেটে গ্যাস জমা, পেট ফোলাভাব, বুকজ্বালা এবং পেট ব্যথায় চিরতা সহায়ক হতে পারে। কারণ চিরতায় রেচক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এবং এই বৈশিষ্ট্য কোষ্ঠকাঠিন্যের বিরুদ্ধে বেশ ভালোই কাজ করে!
পাশাপাশি যদি কেউ হুট করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় সেক্ষেত্রেও চরিতার সাহায্য নেওয়া যেতে পারে৷ সুতরাং হজম সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যাকে বিদায় জানাতে চিরতাকে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
রিলেটেডঃ হজমশক্তি বৃদ্ধির উপায়, কার্যকারী টিপস ২০২৩
চিরতার অপকারিতা
অতিরিক্ত পরিমাণে চিরতা গ্রহণ করাটাও উচিত নয়। কারণ এতে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হবে! চিরতার অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে নিচের লেখাগুলিতে চোখ রাখুন:
ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে
ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে চিরতা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। তবে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের অতিরিক্ত পরিমাণে চরিতা গ্রহণ না করাই উচিত। এক্ষেত্রে চিরতাকে ডায়াবেটিস রোগের প্রতিকার হিসেবে ব্যবহার করার সময় রোগীর রক্তে শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।
সার্জারির সময়
সার্জারি করার ২/৩ সপ্তাহ আগে থেকেই চরিতা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ চরিতা সার্জারির ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণে বিপদ ঘটাতে পারে। এই সময়ে রোগীর রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ ঠিক থাকা জরুরি। নতুবা সার্জারির সময় সুস্থতা বজায় রাখতে রক্তে শর্করার বিষয়টি বাধা দিতে পারে।
গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে
গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় চরিতা না খাওয়াই ভালো। কারণ গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে চরিতা ব্যবহার করা নিরাপদ কিনা তা নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। ভালো কি মন্দ… কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি বলে এই সময় চরিতা গ্রহণ করা বা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
অন্ত্রের আলসার হলে
অন্ত্রের আলসার আছে বা দেহে অন্ত্রের আলসার হলে চিরতা এড়িয়ে চলা জরুরি। কারণ এটি দেহে আলসারের অবস্থার অবনতি ঘটাতে পারে।
বমি বমি ভাব সৃষ্টি করে
চিরতার অন্যতম অপকারিতা হলো এটি খেলেই বমি বমি অনুভুত হয়। সুতরাং যারা খাবারের স্বাদের ব্যাপারে খুব সচেতন থাকেন তারা চিরতা এড়িয়ে চলতে পারেন। নতুবা এটির স্বাদ নিতে পারার মতো মন-মানসিকতা সৃষ্টি করে তবে চিরতা খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
চিরতা খাওয়ার নিয়ম
চিরতাকে বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। তবে আপনি চাইলে নিম্নোক্ত নিয়ম ব্যবহার করে চিরতা খেতে পারেন:
সোরিয়াসিস সারিয়ে তুলতে:
- রাতে ৪ গ্রাম চিরতা নিন
- এতে ১২৫ গ্রাম মিশিয়ে নিন
- পরের দিন সকালে পান করুন
- ৩/৪ ঘন্টা কিছুই না খেয়ে থাকুন
অথবা এভাবে খেয়ে দেখতে পারেন:
- ১৫ থেকে ৩০ মিলি বা ১ থেকে ২ টেবিল চামচ চিরতা নিন
- হালকা গরম পানি করে নিন
- এবারে লবঙ্গ বা দারুচিনি দিয়ে মিশিয়ে নিন
এছাড়াও চাইলে সহজ উপায়ে এভাবে খেতে পারেন:
- চিরতার পাতা নিন
- পিষিয়ে নিন বা ব্লেন্ড করে নিন
- হালকা মধু বা চিনি মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন
চিরতার ব্যবহার
যেহেতু চিরতা একটি ভেষজ খাবার বা উদ্ভিদ সেহেতু এটিকে বিভিন্ন ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিভিন্ন কোম্পানি এবং সাধারণ মানুষেরা এই চিরতাকে কোন কোন পদ্ধতিতে ব্যবহার করে উপকৃত হতে পারে সে-সম্পর্কে:
ডায়াবেটিসের ঔষধে ব্যবহার করা হয়
অনেকেই ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যা দূর করতে গ্লিমিপিরাইড (অ্যামারিল), গ্লাইবারাইড (ডায়াবেটা, গ্লাইনেস প্রেসট্যাব, মাইক্রোনেজ), ইনসুলিন, পিওগ্লিটাজোন (অ্যাক্টোস), রোসিগ্লিটাজোন (অ্যাভান্ডিয়া), ক্লোরপ্রোপামাইড (ডায়াবিনিস), গ্লিপিজাইড (গ্লুকোট্রল), টোলবুটামাইডের মতো ইত্যাদি ঔষধ সেবন করেন। এসব ঔষধ তৈরিতে চিরতা ব্যবহার করা হয়।
বিভিন্ন চর্মরোগের চিকিৎসায় কাজে লাগানো হয়
চর্মরোগের বিভিন্ন চিকিৎসা বিশেষ করে একজিমা এবং ব্রণ দূর করতে যেসব ঔষধ ব্যবহার করা হয় সে-সব ঔষধ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় এই চিরতাকে। কারণ চিরতা থেকে প্রাপ্ত ক্বাথ ত্বকের ফুসকুড়ি সারাতে শতভাগ সাহায্য করতে পারে।
এছাড়াও যদি ত্বকে জ্বালাপোড়া, শুষ্কতা এবং চুলকানির সমস্যা থাকে তা দূর করতেও আপনি চিরতা ব্যবহার করতে পারেন। তবে যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তারা ত্বকে চিরতা ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না কিন্তু।
কৃমি দূর করতে ব্যবহার করা হয়
চিরতা মানবদেহে সরাসরি কৃমি দূর করার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। চিরতায় থাকা হেলমিন্থ নামের উপাদান মানবদেহে কৃমি দূর করতে কাজ করে থাকে।
এছাড়াও কৃমির মতো বিভিন্ন পরজীবি অর্থ্যাৎ রাউন্ডওয়ার্ম, ফ্লুকস এবং টেপওয়ার্মও দূর করতে সক্ষম এই চিরতা। সেকারণেই মেডিসিনবিশেষজ্ঞেরা চিরতাকে কৃমির ঔষধের অন্যতম উপাদান হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন।
শেষ কথা
জ্বর, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট খারাপ, ক্ষুধামন্দা, পিত্তথলিতে কৃমি, ত্বকের বিভিন্ন রোগ, লিভারে জ্বালাপোড়া, পেটের ব্যাথা এবং ক্যান্সারের মতো রোগের বিরুদ্ধে যারা নিরাপদভাবে যুদ্ধ করতে চান, তাদের জন্যে এই চিরতা হতে পারে সেরা সহায়তা প্রাকৃতিক ঔষধ।
ডেটাবেস কনজিউমার সংস্করণ দ্বারা সরবরাহ করা হচ্ছে এই চিরতাকে। বহু আগেই এটি একটি ভেষজ উপাদান হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সুতরাং বিশ্বস্ততার দিক দিয়ে চিরতাকে কোনোভাবেই অবমূল্যায়নের সুযোগ নেই।
চিরতার সাথেই হোক সকল রোগের যুদ্ধ এবং দিনশেষে জিতে যাক প্রতিটি মানুষের সুস্বাস্থ্য। এমনটা কামনা করে আজকের আর্টিকেলের ইতি টানছি। ধন্যবাদ সবাইকে।
FAQs:
চিরতা কি কোনো ঔষধের সাথে মিথস্ক্রিয়া করতে পারে?
চিরতা ডায়াবেটিস রোগের জন্যে ব্যবহৃত বিশেষ কিছু ঔষধের সাথে সহজেই মিথস্ক্রিয়া করতে পারে। এক্ষেত্রে গ্লিমিপিরাইড, ইনসুলিন, গ্লাইবারাইড, ক্লোরপ্রোপামাইড, টলবুটামাইড ইত্যাদি ঔষধের ব্যাপারে বলা যেতে পারে।
এসব ঔষধ যেমন ডায়াবেটিস রোগ সারাতে দেহের রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয়, চিরতা গ্রহণের ফলেও ঠিক তেমনই আমাদের দেহে শর্করার মাত্রা কমে আসে।
সার্জারির ক্ষেত্রে কি চিরতা কোনো খারাপ প্রভাব ফেলবে?
যারা ভবিষ্যতে সার্জারি করাবেন ভাবছেন তারা অন্তত অপারেশনের ঠিক ২/৩ সপ্তাহ পূর্ব থেকেই চিরতা গ্রহণ করা বা ব্যবহার করা বন্ধ করে দেবেন৷ কারণ এটি অপারেশনের পরে দেহের শর্করার মাত্রা নিয়ে বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
এতে করে রোগী প্রচুর পরিমাণে দূর্বল হয়ে পড়বে এবং নানান ধরণের জটিলতার সম্মুখীন হবে।
চিরতা কি কিডনির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়?
চিরতা কখনোই কিডনির ক্ষতি করে না। বরং কিডনি ঠিক রাখতে চিরতা খাওয়াটা জরুরি। বিশেষ করে কিডনিতে যদি পাথর জমে তবে এ-থেকে মুক্তি পেতে চিরতা খেতে পারেন।
তথ্যসুত্রঃ
২। https://en.wikipedia.org/wiki/Swertia
৩। https://www.rxlist.com/chirata/supplements.htm
৪। https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4709473/
৫। https://www.frontiersin.org/articles/10.3389/fphar.2015.00308/full