Skip to content

ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া, ঋণ পরিশোধের দোয়া | ২০২৪

ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া

সৃষ্টিকর্তা প্রতিপালক আল্লাহর সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কীভাবে স্থাপিত হতে পারে? মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে কোনো রকম মুখাপেক্ষী নন। তিনি সকল সৃষ্টিজীব থেকে অমুখাপেক্ষী। সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান। তিনি মহা শক্তির অধিকারী, তাঁর ওপর কেউ বিজয়ী হতে পারে না। আকাশমণ্ডল ও তাবৎ জগতের প্রতিটি বিষয় তাঁর আয়ত্বাধীন। তাই মানুষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে, তাঁর কাছে নিজের প্রয়োজন প্রার্থনা করতে, বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে সর্বদা তাঁর কাছেই মুখাপেক্ষী। তিনি কারীম-মহান। 

তাঁর কাছে প্রার্থনা করলে তিনি খুশি হন। তিনি ভালবাসেন মানুষ তাঁর কাছে তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু চেয়ে নেবে। তিনি তাদের প্রার্থনা কবুল করেন। এই লেখাতে আমরা জানবো যে দোয়া পড়লে ও আমল করলে ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বা ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া। তাহলে চলুন দেখে নেই দোয়াগুলি।

ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া

চলুন দেখে নেই ঋণ থেকে মুক্তির দোয়াগুলি

ঋণ পরিশোধের দোয়া ১

আলীর (রা) নিকট এক ব্যক্তি ঋণমুক্তির জন্য সাহায্য প্রার্থনা করলে তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ আমাকে কিছু বাক্য শিখিয়ে দিয়েছেন, আমি তোমাকে তা শিখিয়ে দিচ্ছি । তোমার যদি পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকে তাহলেও আল্লাহ তোমার পক্ষ থেকে তা আদায় করে দেবেন এবং তোমাকে ঋণমুক্ত করবেন । তুমি বলবে:

বাংলা উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাকফিনী বিহালা-লিকা ‘আন হারা-মিকা ওয়া আ’গনিনী বিফাদলিকা ‘আম্মান সিওয়াকা।

বাংলা অর্থঃ “হে আল্লাহ, আপনি আপনার হালাল প্রদান করে আমাকে হারাম থেকে রক্ষা করুন এবং আপনার দয়া ও বরকত প্রদান করে আমাকে আপনি ছাড়া অন্য সকলের অনুগ্রহ থেকে বিমুক্ত করে দিন।”

ঋণ মুক্তির দোয়া ও আমল ২

আনাস (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ বেশি বেশি নিচের দোয়াটি বলতেন:

বাংলা উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল ‘হাযানি ওয়াল ‘আজযি ওয়াল কাসালি, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া দিলা’ইদ দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল ।

বাংলা অর্থঃ  “হে আল্লাহ আমি আপনার আশ্রয় গ্রহণ করছি দুশ্চিন্তা, দুঃখ-বেদনা, মনোকষ্ট, অক্ষমতা, অলসতা, কৃপণতা, কাপুরুষতা, ঋণের বোঝা এবং মানুষের প্রাধান্য বা প্রভাবের অধীনতা থেকে।”

ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া_ঋণ পরিশোধের দোয়া
ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া_ঋণ পরিশোধের দোয়া

ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া ৩

হযরত আনাস (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ হযরত মু’আযকে (রা) বলেন, যদি তুমি এই দু’আটি বলে প্রার্থনা কর তাহলে তোমার পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকলেও আল্লাহ তা তোমার পক্ষ থেকে আদায় করে দেবেন:

বাংলা উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা, মা-লিকাল মুলকি, তু’তিল মুলকা মান তাশা-উ ওয়া তানযিউল মুলকা মিম্মান তাশা-উ। ওয়াতু ই মান তাশা-উ ওয়া তুযিলু মান তাশা-উ বিইয়াদিকাল খাইরু, ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। রাহমা-নাদ দুনইয়া- ওয়াল আ-খিরাতি ওয়া রাহীমাহুমা-, তু‘তিহিমা- মান তাশা-উ ওয়া তামনা’উ মিনহুমা- মান তাশা-উ। ইরহামনী রাহামতান তুগনীনী বিহা- ‘আন রা‘মাতি মান্ সিওয়া-কা।

বাংলা অর্থঃ “হে আল্লাহ, রাজাধিরাজ সকল রাজত্বের মালিক, আপনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব প্রদান করেন এবং যার থেকে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নেন। আপনি যাকে ইচ্ছা সম্মানিত করেন এবং যাকে ইচ্ছা অপমানিত করেন। আপনার হাতেই কল্যাণ। নিশ্চয় আপনি সকল বিষয়ের উপর শক্তিমান। পার্থিব জগৎ এবং পারলৌকি জগতের মহাকরুণাময় ও অপার দয়াশীল। আপনি যাকে ইচ্ছা এই করুণারাজী প্রদান করেন এবং যাকে ইচ্ছা বঞ্চিত করেন। আপনি আমাকে এমন রহমত প্রদান করুন যে রহমত আমাকে আপনি ছাড়া অন্য কারো করুণা থেকে অমুখাপেক্ষী বানিয়ে দেবে।”

রিলেটেডঃ দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া ২০২৩

পরিশেষে

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- দোয়া হচ্ছে ইবাদাত । আরেক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন— দোয়া হচ্ছে ইবাদাতের মস্তিষ্ক।

সুতরাং প্রকৃত মুমিন হিসেবে আল্লাহর দাসত্ব করার পূর্ণ হক আদায় করার জন্য দোয়ার প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যকীয়। 

অন্য অর্থে একজন আনুগত্যশীল মু’মিন বান্দাকে আল্লাহ তা’য়ালার বিধান অনুযায়ী জীবন গড়তে হয়; আর এ পথে রয়েছে মানুষ ও জ্বিন-শয়তানদের প্রচন্ড বাধা। 

এ জন্য আল্লাহ তা’য়ালার বান্দাহদেরকে এসব দুর্গম পথ অতিক্রমক করে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বিধান প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে আল্লাহ তা’য়ালার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তথা ইহকাল ও পরকালে মুক্তির উদ্দেশ্যে জীবনের সকল অবস্থায় কাকুতি-মিনতির সাথে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে তাওফীক ও সাহায্য কামনা করার নামই হচ্ছে দোয়া।

Leave a Reply