Skip to content

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া, চিন্তা মুক্তির দোয়া, পেরেশানি থেকে মুক্তির দোয়া, টেনশন দূর করার দোয়া আরবি

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া

বস্তুত আল্লাহর দান অফুরান। বিশেষজ্ঞগণ বলেছেন, ইবাদত অব্যাহত রাখতে পারা যেমন ইবাদত কবুল হওয়ার লক্ষণ, তেমনি দোয়া অব্যাহত রাখতে পারাও আল্লাহর প্রিয়পাত্র হওয়ার লক্ষণ। তার মানে সবসময় দোয়া করতে পারাই দোয়া কবুল হওয়ার আলামত। 

হাদীসের মর্ম অনুযায়ী দোয়ার: দ্বারা আর কিছু না হলেও তা ইবাদত হিসেবে গণ্য এবং তার সওয়াব আখেরাতের সঞ্চয়। কারণ, দোয়াই ইবাদত। হাদীস শরীফে বর্ণিত: ‘আদ্দোয়াউ হুয়াল ইবাদাহ’=“দোয়াই হল ইবাদত”  

এমন কি ইবাদতের সারবস্তু হচ্ছে দোয়া। হাদীসের ভাষায়, ‘আদ্দোয়াউ মুখখুল ইবাদাহ’=“দোয়াই ইবাদতের মগজ” (মিশকাত, হাদীস নং-২১২৭)। কারো মগজ নষ্ট হয়ে গেলে তাকে বলা হয় পাগল । ইবাদতের মধ্যেও যদি দোয়া না থাকে, আল্লাহর কাছে আকুতি ও আত্মনিবেদন না থাকে, সেই দোয়া হয় অন্তসারশূন্য।

তো যাইহোক, মুসলিম হিসাবে দোয়া অত্যান্ত গ্রুত্বপূর্ণ আমাদের জন্যে, দুখঃ কষ্টে, হতাশায়, দুশ্চিন্তায়, দারিদ্রে এমনকি মানব জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে দোয়া পাঠ করা উচিত। কোরআন হাদিসে ভিবিন্ন জায়গায় বলা হয়েছে বেশি বেশি দোয়া পড়তে। দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তাওয়ালার আশ্রয় পার্থনা, সাহায্য কামনা করা হয়।

এই লেখাতে আমরা জানবো দুশ্চিন্তা কি? দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া, এবং দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির জন্য মহানবী (সাঃ) যে আমল ও দোয়া পড়তেন তার হাদিস ও ব্যাখ্যা।

তারা আগে এই লেখাটা পড়ে নিন, দোয়া কি, এবং কি কি উপায়ে দোয়া পড়া উচিত, দোয়ার বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে।

দুশ্চিন্তা কি?

দুশ্চিন্তা হল অস্বস্তির অনুভূতি, যেমন উদ্বেগ বা ভয়, যা কোন কোন ক্ষেত্রে খুব হালকা বা গুরুতর হতে পারে। আমরা প্রত্যেকেরই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে দুশ্চিন্তার সম্মুখীন হয়েছি । উদাহরণস্বরূপ, আপনি খুব তুচ্ছ একটি চাকুরীর পরীক্ষা, বা ইন্টারভিউ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পতিত হতে পারেন।

আরো সহজ করে বললে, “দুশ্চিন্তা হল একটি আবেগ যা উত্তেজনার মাধ্যমে অনুভব করা যায়, এবং দুশ্চিন্তার সময় উদ্বিগ্ন চিন্তাভাবনা এবং রক্তচাপের বৃদ্ধির মতো শারীরিক পরিবর্তনও ঘটে থাকে।”

দুশ্চিন্তার ইংরেজী হলো Anxiety যা দ্বারা ভয়, দুর্ভাবনা ও উদ্বেগকেও বুঝায়। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা আমাদের মন মানসিকতার উপরে প্রভাব ফেলে, যার ফলে আমারা ডিপ্রেশন অনুভব করে থাকি। এই কর্পোরেট দুনিয়াতে আমরা প্রতিনিয়ত নানান ধরনের সমস্যার মোকাবেলা করে থাকি, ফলে হরহামেশাই আমারা ভয়, উদ্বেগ ও দুশ্চিনার মুখোমুখি হয়ে থাকি।

তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু বলেছেন, সুখে দুঃখে দৈনিন্দন জীবনের প্রত্যেকটা মুহুর্তে আল্লাহকে ডাকতে, উনার সাহায্য চাইতে। ঠিকমতো আল্লাহকে ডাকলে দুশ্চিন্তা কিংবা উদ্বেগ থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যাবে। হযরত সালমান ফারসী (রা) হতে বর্ণিত: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের প্রতিপালক লজ্জাশীল ও পরম দাতা; যখন তাঁর বান্দা তাঁর নিকট দু’হাত উঠায় তখন তা খালি ফেরত দিতে তিনি লজ্জাবোধ করেন । -(তিরমিযী, আবু দাউদ, বায়হাকীর বরাতে মিশকাত, হাদীস নং- ২১৪৮)”

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া

চরম দুশ্চিন্তায় দৈর্য্য লাভের জন্যে যে দোয়াটি সর্বপ্রথম পড়া উচিত সে দোয়াটি হলঃ “ইন্নামা’ আশকু বাছছী ওয়া হুযনী ইলাল্লা’হ”

বাংলা অর্থঃ আমি আমার দূঃসহ বেদনা, আমার দুঃখ শুধু আল্লাহর নিকট নিবেদন করছি।

আরবীঃ اِنَّمَاۤ اَشۡکُوۡا بَثِّیۡ وَ حُزۡنِیۡۤ اِلَی اللّٰهِ

চরম দুশ্চিন্তায় দৈর্য্য লাভের দোয়া
চরম দুশ্চিন্তায় দৈর্য্য লাভের দোয়া

ঘটনাঃ

চরম দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের মধ্যে নিজেকে আল্লাহর কাছে সঁপে দেয়া ও ধৈর্যের তাওফিক লাভের জন্য এই দোয়া অত্যন্ত উপকারী। এই দোয়া করেছিলেন হযরত ইয়াকুব (আ), ছেলে ইউসুফ (আ)-কে হারিয়ে।

ইউসুফ ছিলেন পিতা ইয়াকুব (আ,)-এর অতি প্রিয়। ভবিষ্যতে আল্লাহর নবী হওয়ার লক্ষণ, চারিত্রিক মাধূর্য ও আকর্ষণ শৈশব থেকেই টিকরে পড়ত ইউসুফের চরিত্রে। তাই মা-হারা এমন ছেলের প্রতি পিতার প্রাণের আকর্ষণ থাকা একান্তই স্বাভাবিক। 

ইউসুফের প্রতি পিতার এমন স্নেহ-মমতার কারণে ঈর্ষান্বিত ছিল সৎ ভাইয়েরা। তারা একদিন ষড়যন্ত্র করে একসাথে খেলতে যাবার মিথ্যা কথা বলে ইউসুফকে পরিত্যক্ত এক কুয়ায় ফেলে দিয়েছিল। তারপর এগার ভাই একজোট হয়ে পিতা ইয়াকুব (আ)-এর কাছে এসে মিথ্যা কাহিনী রচনা করেছিল যে, ইউসুফকে নেকড়ে খেয়ে ফেলেছে। 

ইয়াকুব (আ) যদিও বুঝতে পেরেছিলেন যে, এ কাহিনী বানোয়াট; কিন্তু তার হাতে করার কিছু ছিল না । শেষ পর্যন্ত তিনি আল্লাহর দিকে চেয়ে ধৈর্যের পাথর চেপে রাখেন বুকের ওপর। পুত্র শোকে তিনি দৃষ্টিশক্তিও হারিয়ে ফেলেছিলেন। তার সেই অসীম ধৈর্যের অভিব্যক্তি ছিল এই দোয়া: আমি আমার দূঃসহ বেদনা, আমার দুঃখ শুধু আল্লাহর নিকট নিবেদন করছি। -(সূরা ইউসুফ: ১২ঃ ৮৬)

নিচে আরো কিছু দোয়া দেওয়া হলো যেগুলি দুশ্চিন্তা, বিপদ বালা মসিবত, ভয় ইত্যদি মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে।

দোয়া ১

নবী করীম (ছাঃ) বলেন, যে লোক চিন্তা-ভাবনা, পেরেশানী কিংবা কোন জটিল বিষয়ের সম্মুখীন হবে তার পক্ষে নিম্নলিখিত বাক্যগুলি পড়া উচিত। তাতে সমস্ত জটিলতা সহজ হয়ে যাবে। বাক্যগুলি এরূপ-

আরবীঃ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَرَبُّ الأَرْضِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ

বাংলা উচ্চারণ: লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হুল ‘আযীমুল হালীম, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু রাব্বুল ‘আরশিল ‘আযীম, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু রাব্বুস সামা-ওয়া-তি ওয়া রাব্বুল আরযি রাব্বুল ‘আরশিল কারীম।

বাংলা অর্থ: ‘সহনশীল আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, যিনি মহান আরশের প্রতিপালক । আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, যিনি আসমান সমূহ ও যমীনের রব এবং মহান আরশের রব’। সহীহ বুখারী, মুসলিম শরীফ, ও মিশকাত শরীফ হা/ ২৮১৭, পৃঃ ২১২

মনকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখার দোয়া_দোয়া ১
মনকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখার দোয়া

দোয়া ২

নিচের দোয়াটি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া হিসাবে বেশি পরিচিত ও কার্যকারী হিসাবে পরিচিত, এমনকি নবী নিজে  পেরেশানি, দুশ্চিন্তা, হতাশা, ভয় থেকে মুক্তি পেতে দোয়াটি পড়তে বলেছেন ও নিজে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির জন্য মহানবী (সা.) এই দোয়া পড়তেন।

বাংলা উচ্চারণঃ আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল-হু:ঝনি ওয়াল ‘আজঝি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি ওয়া য্বলাইদ দায়নি ওয়া গালাবাতির রিজা-ল ।

আরবীঃ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ

বাংলা অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট পরিত্রাণ চাই চিন্তা, শোক, অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা, ঋণের বোঝা ও মানুষের জবরদস্তি হ’তে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, পৃঃ ২১৬, হা/২৪৫৮)।

মানসিক অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া_দোয়া ২
মানসিক অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া

দোয়া ৩

দুশ্চিন্তামুক্ত হতে তৃতীয় দোয়াটি হলঃ 

বাংলা উচ্চারণ: রাব্বানা আতিনা মিল্লাদুনকা রাহমাতাও ওয়া হাই’লানা মিন আমরিনা রাসাদা।

আরবী উচ্চারণ: رَبَّنَا اَتِنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَةً وَّ هَيِّئْ لَنَامِنْ أَمْرِنَا رَشَداً 

বাংলা অর্থ: হে আমাদের রব! একান্ত তোমার কাছ থেকে আমাদের ওপর অনুগ্রহ দান করো, আমাদের এই কাজকর্ম আঞ্জাম দেয়ার জন্য তুমি আমাদের সঠিক পথ দেখাও। (সূরা আল কাহাফ-১০)

দুনিয়াতে যদি কাজ কর্ম নিয়ে ভয়, হতাশা কিংবা দুশ্চিন্তার জন্ম নেয় তাহলে উপরের দোয়াটি পড়তে হবে।

রিলেটেডঃ স্বপ্নে সাপ দেখলে কি হয়? স্বপ্নে সাপ দেখার ইসলামিক ব্যাখ্যা ২০২৩

দোয়া ৪

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আবদুকাবনু ‘আবদিকাব নু’আমাতিকা, নাসিয়াতী বিয়াদিকা, মা-যিন ফিয়্যা হুকমুকা, ‘আদলুন ফিয়্যাকাদ্বউকা, আসআলুকা বিকুল্লিমিন্ হুওয়া লাকা, সাম্মাইতা বিহী নাফ সাকা, আউ আন্যালতাহু ফী কিতাবিকা আউ ‘আল্লামতাহু আহদাম্ মিন খালক্বিকা, আবিস্তা’সারতা বিহি ফী “ইলমিলগাইবি ইনদাকা আন্ তাজ’আলাল কুর’আনা রাবী’আ ক্বালবী, ওয়া নূরা সাদ্রী, ওয়া জালাআ হুযনী ওয়া যাহাবা হাম্মী।

আরবী উচ্চারণ: اللَّهُمَّ إِنِّي عَبْدُكَ، ابْنُ عَبْدِكَ، ابْنُ أَمَتِكَ، نَاصِيَتِي بِيَدِكَ، مَاضٍ فِيَّ حُكْمُكَ، عَدْلٌ فِيَّ قَضَاؤُكَ، أَسْأَلُكَ بِكُــــلِّ اسْمٍ هُوَ لَكَ، سَمَّيْتَ بِهِ نَفْسَكَ، أَوْ أَنْزَلْتَهُ فِي كِتَابِكَ، أَوْ عَلَّمْتَهُ أَحَداً مِنْ خَلْقِكَ، أَوِ اسْتَأْثَرْتَ بِهِ فِي عِلْمِ الغَيْبِ عِنْدَكَ، أَنْ تَجْعَلَ القُرْآنَ رَبِيعَ قَلْبِي، وَنُورَ صَدْرِي، وَجَلاَءَ حُزْنِي، وَذَهَابَ هَمِّي».

বাংলা অর্থ: হে আমার মালিক! আমি তোমার বান্দা এবং তোমারই এক বান্দার পুত্র আর তোমার এক বান্দীর পুত্র। আমার ভাগ্য তোমার হস্তে, আমার ওপর তোমার নির্দেশ কার্যকর, আমার প্রতি তোমার ফয়সালা ইনসাফের ওপর প্রতিষ্ঠিত, আমি সেই সমস্ত নামের প্রত্যেকটির পরিবর্তে যে নাম তুমি নিজের জন্য নিজে রেখেছো অথবা তোমার যে নাম তুমি তোমার কিতাবে নাযিল করেছো, অথবা তোমার সৃষ্ট জীবের মধ্যে কাউকেও যে নাম শিখিয়ে দিয়েছো, অথবা স্বীয় ইলমের ভাণ্ডারে নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছো, তোমার কাছে এই কাতর প্রার্থনা জানাই যে, তুমি কুরআন মজীদকে বানিয়ে দাও আমার হৃদয়ের জন্য প্রশান্তি, আমার বক্ষের জ্যোতি, আমার চিন্তা-ভাবনার অপসারণকারী এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বিদূরণকারী।  আহমাদ ১/৩৯১, নং ৩৭১২।

রিলেটেডঃ অর্থসহ সহবাসের দোয়া, বাংলা ও আরবি ২০২৩

দোয়া পাঠের উপকারিতা

দোয়া পাঠের উপকারিতা অনেক। পবিত্র কোরআনে বহুবার বলা হয়েছে আল্লাহর সাহায্য পার্থনা করতে, আল্লাহর আশ্রয় চাইতে। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হলে যদি সঠিক নিয়মে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া পাঠ করা হয় তাহলে নিচের উপকারগুলি হতে পারে।

  • মনের ভয়, সংশয়, দ্বীধা, উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা দূর হবে।
  • আল্লাহকে বার বার ডাকলে মনে পবিত্রতা আসবে।
  • দোয়ার মাধ্যমে কখনো কখনো নিয়তির বদল হয়।
  • দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নিকটে যাওয়া যায়, আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়, দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি দূর হয়।
  • দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তাওয়ালা বান্ধার মনের আশা পূরুণ করেন।
  • দোয়ার মাধ্যমে মন নরম হয়।

রিলেটেডঃ পড়া মনে রাখার দোয়া, স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির দোয়া

দোয়া করার আদব এবং নিয়মাবলি

আল্লাহ্ তাআলার দরবারে দোয়া করার কতিপয় আদব নিম্নে বর্ণিত হইল-

১। অত্যন্ত “আজিযী ইনকেসারী” অর্থাৎ চরম অনুনয় বিনয়ের সাথে দোয়া করবে।

২। অযু অবস্থায় দোয়া করবে, অযু ছাড়া দোয়া করা অনুচিত বা বেয়াদবী। ৩ । দোয়ার মাঝে নিজের অতীত পাপের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করবে এবং ভবিষ্যতে কোন প্রকার পাপ না করার জন্য তওবা করবে।

৪। নিজের অন্যায়ের জন্য নেক কাজের উসীলা দিয়ে দোয়া করবে।

৫। দুই রাকাত নফল নামায পড়ে কেবলামুখী হয়ে দোয়া করবে। 

৬। দোয়ার আরম্ভে এবং শেষে দরুদ শরীফ পাঠ করবে।

৭। দোয়া করার সময় উভয় হাত দুই কাধ বরাবর উঠাবে। দুই হাতের তালু চেহারার বরাবর রাখবে ।

৮। দোয়ার শেষে “আমীন” বলতে বলতে দুই হাতের মাধ্যমে চেহারা মুছবে ।

৯। কোন গুনাহের কাজে সফলতা লাভের জন্য দোয়া করবে না ।

১০। দোয়ার সাথে কোন রকম শর্ত লাগাবে না ।

১১। দোয়ার সাথে কোন রকম শর্ত লাগাবে না ।

১২। অন্যায়ভাবে অন্যের অনিষ্ঠ কামনা করে দোয়া করবে না ।

১৩। ছোট বড় সব মাকসুদের জন্য আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের দরবারেই দোয়া করবে।

১৪। ঈমান ও একীনের সহিত অন্তরকে আল্লাহ্ তাআলার দিকে আকৃষ্ট রেখে দোয়া করবে।

১৫। দোয়ার মধ্যে বখিলী করবে না। অর্থাৎ নিজের ও সকলের জন্য সমভাবে দোয়া করবে।

পরিশেষে

দোয়া ও যিকির হল সহহীহ পন্থা আল্লাহ তাওয়ালার সাথে যোগাযোগের, নিচের হাদিস দিয়ে দোয়ার গুরুত্ব বুঝা যায়।

রাসূল সা. বলেছেন, 

“আল্লাহ তা’আলা বলেন : আমার বান্দা আমার সম্পর্কে যেমন ধারণা করে আমি ঠিক তেমন ধারণা করি। সে যখন আমাকে স্মরণ করে তখন আমি তার সাথে থাকি। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে আমিও আমার মনের মধ্যে তাকে স্মরণ করি। 

আর যদি সে কোন সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তাহলে আমি তাকে এর চাইতে উত্তম সমাবেশে স্মরণ করি। আর সে যদি আমার দিকে অর্ধহাত এগিয়ে আসে আমি এগিয়ে আসি তার দিকে এক হাত। আর সে এক হাত এগিয়ে এলে, আমি তার দিকে দু’হাত এগিয়ে আসি। সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।” (বুখারী ৮/১৭১; মুসলিম ৪/২০৬১)

তো বন্ধুরা আজকের মতো এখানেই বিদায়, যদি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া নিয়ে লেখাটি ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার বা কমেন্ট করতে ভুলবেন না।

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া, কারো মন নরম করার দোয়া, দুশ্চিন্তা থেকে বাঁচার দোয়া, পেরেশানি থেকে মুক্তির দোয়া

Leave a Reply