Skip to content

আকিকা দেওয়ার নিয়ম, দোয়া ও সঠিক পদ্ধতি | ২০২৪

আকিকার নিয়ম

যে সুন্নতগুলোর তাৎপর্য অনেক কিন্তু আমরা তার প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেই না আকিকা তার অন্যতম। ইসলাম পূর্বকাল থেকে চলে আসা এই আমলের সঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। তিনি একে অনুমোদন করেছেন, নিজে করেছেন এবং অন্যদের করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। কিন্তু এ সুন্নতটি আজ বিস্মৃতপ্রায়। মুসলিমগণ এর আমল বাদ দিয়ে এর স্থলে চালু করেছেন নানা বিজাতীয় ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন রীতিনীতি।

অথচ ইসলামী মনস্তত্ত্ব বিবেচনায় আকীকার গুরুত্ব অপরিসীম। এর প্রতি আমরা উন্নাসিকতা দেখিয়ে নিজেদেরই বিপদ নিজেরাই ডেকে আনছি। হাদীসের ইঙ্গিত থেকে যেমন অনুমিত হয়, এর সঙ্গে শিশুর পার্থিব ও অপার্থিব কল্যাণ জড়িত। 

আমরা দেখি নব জাতকের এটা- সেটা রোগ-বালাই লেগেই থাকে। রোজই তার চিকিৎসার পেছনে, পথ্য ও ওষুধ কিনতে গিয়ে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়। হাজার হাজার টাকা আমরা অসন্তুষ্টি আর অভিযোগ নিয়ে শিশুর অসুখ-বিসুখের পেছনে ব্যয় করতে পারি অথচ আকীকার মতো চমৎকার একটি আমল করতে পারি না, একটি বা দু’টি ছাগল জবাইয়ের মাধ্যমে। যার মাধ্যমে অনেক বিপদাপদ থেকেই বেঁচে যেতে পারে আমাদের প্রিয় আত্মজ।

সাধারণ মুসলিম তো নস্যি মোটামুটি দীনদার ও ইসলামের আদর্শ চর্চাকারী ভাইয়েরাও এ সুন্নতটিকে বড় অযত্ন অনাদরে উপেক্ষা করেন। হয়তো গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে না জানার কারণে অথবা যাপিত জীবনে হাজারো সুন্নতের প্রতি উদাসীনতারই অংশ হিসেবে। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন।

তো সে যাই হোক এই লেখাতে আমরা জানবো আকিকার দেওয়ার নিয়ম, ছেলে সন্তানের আকিকার নিয়ম, মেয়ে সন্তানের আকিকার নিয়ম ও সমস্ত প্রোয়জনীয় হাদিস ও দোয়া।

আকিকা কাকে বলে?

আকিকা শব্দের অর্থ কাটা, সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে যে প্রাণীকে জবাই করা হয় তাকে আকিকা বলে। সে ছেলে হোক বা মেয়ে। কেননা, এ প্রাণীর হলক তথা গলা কাটা করা হয়।

আকিকা দেওয়ার নিয়ম

শুধু আকিকা দিলেই সেটা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যাবে সেটা ভাবা ভুল, সেজন্যে সঠিক নিয়মে আকিকা দিতে হবে, চলুন দেখে নেই আকিকা দেওয়ার সঠিক নিয়ম।

আকিকা কি ও কেন?

আকিকা  অর্থ: শিশু জন্মের পর সপ্তম দিবসে নামকরণ ও মাথার চুল মুড়ানো উপলক্ষে পশু কুরবানীর নাম আক্বীক্বাহ্ । (ইসলামী বিশ্বকোষ ১ম খণ্ড, ১০০ পৃষ্ঠা)

সালমান ইবনু আমির দাব্বী (রাযি.) বর্ণনা করেছেন, আমি রসূলুল্ল-হ -কে বলতে শুনেছি, ছেলের আকিকা  করা আবশ্যক। অতঃপর | তোমরা তার পক্ষ হতে রক্ত প্রবাহিত কর অর্থাৎ জানোয়ার জবাই কর এবং তার থেকে কষ্ট দূর কর- (বুখারী আধুঃ প্রকাঃ ৫ম খণ্ড হা: ৫০৬৬)। 

ইউসুফ ইবনু মাহাক (রাযি.) থেকে বর্ণিত তারা কয়েকজন মিলে ‘আবদুর রহমানের কন্যা হাফসার কাছে গেলেন। তারা তাকে আকিকা  সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাদেরকে অবহতি করেন যে,| ‘আয়িশাহ্ (রাযি.) তাকে জানিয়েছেন যে, রসূল তাদেরকে পুত্র সন্তানের পক্ষ থেকে সমবয়সী ২টি বকরী আকিকা  দিতে নির্দেশ দিয়েছেন- (তিরমিযী বাংলাদেশ ইসলামী সেন্টার, ৩য় খণ্ড, হা: ১৪৫৫)। 

সালমান ইবনু আমির দাব্বী (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূল বলেছেন : প্রত্যেক শিশুর পক্ষ থেকে আক্বীক্বাহ্ করা প্রয়োজন। অতএব তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (পশু যাবাহ কর) এবং তার থেকে ময়লা বা কষ্টদায়ক বস্তু (যেমন চুল) দূর কর। (তিরমিযী ঐ, হাঃ ১৪৫৭)

আকিকা দেওয়ার নিয়ম_আকিকা দেওয়ার নিয়ম
মা ও সন্তান (Photo by Canva) আকিকা দেওয়ার নিয়ম

আকিকা  কখন এবং কোন ধরনের পশু দিয়ে দিতে হবেঃ 

সামুরাহ্ | (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্ল-হ বলেছেন : প্রত্যেক শিশু তার আকিকার  সাথে বন্ধক (দায়বদ্ধ) থাকে। জন্মের সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে জবাই করতে হবে, তার নাম রাখতে হবে এবং তার মাথা কামাতে হবে- (তিরমিযী ঐ, হাঃ ১৪৬৪)। 

‘আয়িশাহ্ (রাযি.) বলেন, আকিকা  হবে সপ্তম দিনে। তা যদি না হয় তাহলে চৌদ্দ দিনে। তাও যদি না হয় তাহলে একুশ দিনে- (মুসতাদরকে হাকিম ৪র্থ খণ্ড, ২৩৯ পৃষ্ঠা)। 

ইমাম তিরমিযী (রহ.) বলেন, বিশেষজ্ঞ ‘আলিমগণ এ হাদীস অনুযায়ী | ‘আমাল করেছেন। তাদের মতে শিশুর জন্মের সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে আকিকা  করা মুস্তাহাব, সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে চৌদ্দতম এবং সে তারিখও সম্ভব না হলে একুশ দিনে। তারা আরো বলেন, যে ধরনের বকরী কুরবানী করা জায়িয সে ধরনের বকরী দিয়ে আকিকা  করাও জায়িয। (তিরমিযী ঐ. ১৩৫ পৃষ্ঠা)

পশুর গুণাগুণ (আকিকা দেওয়ার সঠিক নিয়ম)

আক্বীক্বার পশু কুরবানীর পশুর মত। তাই আল্লামা ইবনু | রুশদ বলেন, কুরবানীর পশু যেসব দোষ থেকে মুক্ত হবে ‘আক্বীকার পশুর সেসব দোষ থেকে মুক্ত হওয়া উচিত । (বিদ’আতুল মুজতাহিদ)

আকিকার পশু
আকিকার পশু, গরু ও ছাগল (Photo by Canva) আকিকা দেওয়ার নিয়ম

আকিকার  সুন্নাতী সময়ঃ

রসূলুল্ল-হ -এর ‘আমাল দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সপ্তম দিনটি অধিক উত্তম। কারণ, মা ‘আয়িশাহ্ (রাযি.) বলেন : রসূলুল্ল-হ হাসানের পক্ষ থেকে ২টি বকরী ও হুসাইনের পক্ষ থেকে ২টি বকরী আকিকা দেন। যা তিনি সপ্তম দিনে জবাই করেন । (মুসান্নাফ, ‘আবদুর রায্যাক)

ইমাম মালিক (রহ.) বলেন, যেদিন সন্তান জন্মাবে সেদিনটি গণনা করা হবে না । তবে হ্যাঁ শিশুটি যদি ঐ দিনের ফাজরের আগে জন্মায় তাহলে ফাজরের পরের দিনটিও গণনা করা হবে। (তুহফাতুল মাউদূদ)

ইমাম শাফিঈ (রহ.) থেকেও এরূপ বর্ণিত আছে। (উমদাতুল কারী )

ইমাম নাববী বলেন, সঠিক মতে জন্ম দিনটিও সাতদিনের মধ্যে গণ্য হবে । কোন শিশু যদি রাতে জন্ম হয় তাহলে ঐ রাতের পরই আসছে দিনটি গণ্য হবে । কিন্তু দিনের মাঝে সন্তান জন্মগ্রহণ করলে ঐ দিনটি গণনার মধ্যে আসবে না। (রাওফতুত্ তুলিবীন)

সারকথা, সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয়ের মধ্যে কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সূর্যোদয়ের | সাথে আসছে দিনটি সাত দিনের মধ্যে গণ্য হবে। কিন্তু সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোন ছেলে-মেয়ে জন্ম হলে ঐ দিন সাতদিনের মধ্যে গণ্য হবে না । সপ্তম দিনে সকাল, দুপুর, বিকেল যে কোন সময়েই দিলে চলবে। এর জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় নেই । (সূত্র : শিশুদের আকিকা  ও ইসলামী আনকমন নাম, ১২-১৩ পৃষ্ঠা)

আকিকা কে দিবে এবং কয়টিঃ

‘আম্র ইবনু শু’আইব তার পিতার মাধ্যমে তার দাদা হতে বর্ণনা করেন, রসূল -কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন : যার কোন সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়, আর সে তার পক্ষ হতে কোন পশু জবাই করতে চায়, তবে  সে যেন অবশ্যই ছেলের পক্ষ থেকে ২টি এবং মেয়ের পক্ষ থেকে ১টি বকরী জবাই করে- (মিশকাত এমদাদিয়া লাইব্রেরী ঢাকা, ৮ম খণ্ড, হাঃ ৩৯৭৭)। আল্লামা রাজী বলেন, এ হাদীসটি প্রমাণ করে যে, পিতারই দায়িত্ব সন্তানের আকিকা দেয়া ।

কোন শিশুর পিতা যদি না থাকে তাহলে তার অভিভাবকই তার আকিকা দিবে। তাই ইমাম নাববী (রহ.) বলেন, সন্তানের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব যার উপর শুধুমাত্র সে ব্যক্তি আকিকা দিবে- (রওযাতুত্ ত্ব-লিবীন ৩য় খণ্ড, ২৩০ পৃষ্ঠা)। 

‘আয়িশাহ্ (রাযি.) বলেন, আমাদেরকে রসূলুল্ল- হত ছেলের পক্ষ থেকে ২টি এবং মেয়ের পক্ষ থেকে ১টি বকরী আকিকা দেয়ার হুকুম দিয়েছেন- (তিরমিযী ৩য় খণ্ড, হাঃ ১৪৫৫)। তাই আক্বীক্বাহ্ | দেয়ার দায়িত্ব শিশুর পিতা যদি না থাকে তাহলে তার অভিভাবককে দিতে হবে এবং ছেলের পক্ষ থেকে ২টি এবং মেয়ের পক্ষ থেকে ১টি বকরী আকিকা দিতে হবে।

রিলেটেডঃ সন্তান লাভের দোয়া: সন্তান লাভের দোয়া ও আমল

আকিকার  পশু জবাই করার নিয়ম ও আকিকার দোয়াঃ

বিখ্যাত তাবিঈ কাতাদাহ্ (রাযি.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, আকিকা যাবাহ করা হবে কিভাবে? তিনি বলেলেন, ক্বিবলার দিকে পশুটির মুখ করবে। তারপর তার গলায় ছুরি রাখবে।

অতঃপর বলবে,

اللهم منك ولك عقيقت فلان بسم الله الله اكبر

আল্ল-হুম্মা মিনকা ওয়ালাকা ‘আক্বীক্বাতু ফুলানিন বিসমিল্লাহি আল্ল-হু আকবার (তারপর যার পক্ষে আকিকা করা হচ্ছে তার নাম উল্লেখ করতে হবে এরপর বলতে হবে), বিসমিল্লা-হি আল্ল-হু আকবার, তারপর যাবাহ করবে।

‘আয়িশাহ্ (রাযি.)-এর বর্ণনায় রসূলুল্ল-হ বলেন, তোমরা শিশুর নামের উপরে যবেহ কর এবং বল ‘বিসমিল্লা-হি আল্ল-হু আকবার মিনকা ওয়ালাকা’ (যার নামে আকিকা করা হচ্ছে তার নাম উল্লেখ করতে হবে, এরপর বলতে হবে) ‘আক্বীক্বাতু ফুলা- নিন- (সুনানে বাইহাকী ৯ম খণ্ড, ৩০৩ পৃষ্ঠা)।

অথবা ‘আক্বীক্বাহর জন্তু যবেহ করার শিশুটির নাম নিয়ে বাংলায় এরূপ বললে চলবে যে, এটা অমুকের আকিকা তারপর বলবে, ‘আল্ল-হুম্মা মিনকা ওয়ালাকা বিসমিল্লা-হি আল্ল-হু আকবার’ । 

অতঃপর ছুরি চালাবে। হাফিয ইবনুল কাইয়্যিম বলেন, কেউ যদি আকিকার  সঙ্কল্প করে এবং মুখে অমুকের আকিকা  প্রভৃতি শব্দগুলো না বলে তাহলেও কাজ সিদ্ধ হবে ইনশা-আল্ল-হ- (তুহফাতুল মাওদূদ ৫৫ পৃষ্ঠা)। 

তবে ‘বিসমিল্লা-হি আল্ল-হু আকবার’ বলা যেন অবশ্যই না ছুটে।

আকিকার  দিন করণীয়: (আকিকা দেওয়ার নিয়ম)

‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্ল-হ হাসানের জন্য বকরী দ্বারা আকিকা  দিয়ে বলেন : হে ফাতিমাহ্! তুমি এর মাথাটা মুণ্ডন করে দাও এবং এর চুলের ওজনের কিছু সদাক্বাহ্ করে দাও। ফলে আমরা তা ওজন করলাম। তা ছিল এক দিরহাম ওজনের কাছাকাছি- (তিরমিযী ৩য় খণ্ড, হাঃ ১৪৬১)।

‘আয়িশাহ্ (রাযি.) বর্ণনায় আছে, নাবী বলেন, শিশুটির মাথা মুণ্ডন করে মাথায় জাফরান লাগিয়ে দাও- (আল ইহসান ফী-তারতীবি সহীহ ইবনু হিব্বান ৭ম খণ্ড ৩৫৫ পৃষ্ঠা, বেনারসের সওতুল উম্মাহ, আগস্ট ১৯৯৭ সংখ্যা ৩৯ পৃষ্ঠা, বরাতে আকিকা ও নাম রাখা ২৭ পৃষ্ঠা)। 

এ দু’টি হাদীস থেকে জানা যাচ্ছে যে, শিশুর সুন্দর নাম | ঠিক করে সপ্তম দিনে আক্বীক্বাহ্ করতে হবে, তারপরে মাথা মুণ্ডন করতে হবে। তারপর মাথার চুল ওজন করে তার দামটা দান করে দিতে হবে এবং মাথায় সুগন্ধি লাগাতে হবে।

রসূলুল্ল-হ হাসানের পক্ষে বকরী দ্বারা আকিকা দিয়ে বলেন, হে ফাতিমাহ্! তুমি এর মাথার চুলগুলো ফেলে দাও এবং এর চুলের ওজনে কিছু সদাক্বাহ্ করে দাও। ফলে আমরা তা ওজন করলাম। এর ওজন ছিল এক দিরহাম। (হাকিম, বাইহাকী) 

আকিকা গোশত খাওয়া বিতরণ ও চামড়া সম্পর্কিতঃ

রসূল নাতি হাসান ও হুসাইন (রাযি.)-এর আকিকা দেয়ার সময় রসূল তা কন্যা ফাতিমাহ্ (রাযি.)-কে বলেন, সন্তানের ধাত্রীকে একটি রান পাঠাও এবং তা নিজেরা | খাও, অপরকেও খাওয়াও আর এর হাড় ভেঙ্গ না- (আবূ দাউদ)। 

আল্লামা ইবনু রূশদ বলেন, আকিকার  গোত ও তার চামড়া এবং সব অংশের বিধান কুরবানীর গোশতের বিধানের মত অর্থাৎ খাওয়ার ব্যাপারে, দানের ব্যাপারে এবং তা বিক্রি নিষেধের ব্যাপারে- (বিদায়াতুল মুজতাহিদ ২য় খণ্ড, ৪৬৪ পৃষ্ঠা)।

গরুর গোশত_আকিকা দেওয়ার নিয়ম
আকিকার গোশত (Photo by Canva)

বিখ্যাত সহাবী ইবনু ‘উমার (রাযি.) আকিকার  পশুর চামড়া বেঁচে দিয়ে তার দামটা সদাক্বাহ্ করে দিতেন। প্রখ্যাত তাবিঈ হাসান (রহ.) বলেন, আকিকা ও কুরবানীর চামড়া কসাই ও পাচককে তাদের মজুরী হিসেবে দেয়া আপত্তিকর। (তুহফাতুল মাউদুদ ৪৩ পৃষ্ঠা, বরাতে ‘আক্বীক্বাহ ও নাম রাখা ২৫ পৃষ্ঠা)

তাই কুরবানীর গোশতের মত আকিকার  গোশতও সবাই খেতে পারবে এবং তা | কারো জন্যই খেতে মানা নেই আর এ সম্পর্কে সমাজে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে, শিশুর মা-বাবা, দাদা-দাদী, নানা-নানী ‘আকীকার গোশত খাওয়া নিষেধ; আসলে এটা ভিত্তিহীন ধারণা।

রিলেটেডঃ নরমাল ডেলিভারি হওয়ার দোয়া: প্রসব সহজে হওয়ার আমল ও তাবীজ

আকিকা দেয়ার সময়ের আগে বা পরে শিশু মারা গেলে করণীয়ঃ

কোন সন্তান যদি সাত দিনের আগেই মারা যায় তাহলে সে সন্তানের আকিকা দিতে হবে না- (মুসান্নাফে আঃ রাযযাক ৪র্থ খণ্ড ৩৩৫ পৃষ্ঠা, ফাতহুল বারী ৯ম খণ্ড ৫৯৪ পৃষ্ঠা; নায়লুল আওতার ৪র্থ খণ্ড ৩৬৯ পৃষ্ঠা)। কেউ যদি সাত দিনের পর মারা যায় তাহলে তার পক্ষেও আক্বীক্বাহ্ দিতে হবে। (রওযাতুত্‌ ত্ব-লিবীন ৩য় খণ্ড, ২৩২ পৃষ্ঠা)

‘আকীক্কায় ভাগাভাগিঃ

দশ লাখ হাদীসের হাফিয ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বলকে একদা জিজ্ঞেস করা হয় যে, সাতজনের পক্ষ থেকে একটি উট আকিকা হবে কি? তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কোন হাদীসই শুনেনি। আমার মতে সাতজনের পক্ষে একটি আকিকা বৈধ হবে না। (তুহফাতুল মাউদুদ) একটি উটে বা গরুতে কয়েকজনের আকিকা  মোটেই জায়িয নয়।

কোন সহাবী বা যঈফ হাদীস দ্বারাও একথার প্রমাণ পাওয়া যায় না যে, রসূলুল্ল-হ কিংবা সহাবায়ি কিরাম অথবা তাবিঈ প্রমুখগণ একটি উট বা গরুতে কয়েকজন ছেলে-মেয়ের আকিকা  দিয়েছেন। কিন্তু ওতে কয়েকভাগ কুরবানী ও কয়েকভাগ আকিকা দিয়েছেন। (শিশুদের আকিকা ও ইসলামী আনকমন নাম ১৮ পৃষ্ঠা)

নির্দিষ্ট সময়ে কারো আকিকা না হলে তার বিধানঃ

এ সম্পর্কে বিশিষ্ট ‘আলিম ও লেখক অধ্যাপক শাইখ হাফিয আইনুল বারী আলিয়াভী সাহেব তাঁর | আকিকা  ও নাম রাখা’ নামক পুস্তকের ১৫-১৬ পৃষ্ঠা লিখেন- কোন পিতা বা অভিভাবক যদি সাত, চৌদ্দ ও একুশ দিনেও তার সন্তানের আকিকা  না দিতে পারে তাহলে তার জন্য আর কোন নির্দিষ্ট দিন নেই। ঐ সন্তানটির বালেগ বা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত যে কোন সময়ে তার পক্ষ থেকে আকিকা দেয়া যাবে। কিন্তু সন্তানটি যদি বালেগ হয়ে যায় এবং তার পক্ষ থেকে আকিকা না দেয়া হয়ে থাকে তাহলে তার উপরে আর আকিকা থাকে না। (আল মুগনী ৮ম খণ্ড, ৬৬৭ পৃষ্ঠা; রওযাহ্ ৩য় খণ্ড, ২২৯ পৃষ্ঠা)

এবার প্রশ্ন সে নিজে তার আকিকা দিতে পারে কিনা। এ প্রশ্নের উত্তরে ইমাম আহমাদ বলেন, সে নিজের আকিকা দিবে না। কারণ এটা তার পিতার দায়িত্ব। কিন্তু দু’ তাবিঈ ‘আতা ও হাসান (রহ.) বলেন, সে নিজের আক্বীক্বাহ্ নিজেই দিবে। কারণ সে আকিকার  সাথে বন্ধক আছে। তাই তার উচিত আক্বীক্বাহ্ দিয়ে বন্ধক মুক্ত করা- (আল মুগনী ৮ম খণ্ড ৬৪৬ পৃষ্ঠা)। এজন্যই তাবিঈ নেতা মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন বলেন, আমি নিজেই নিজের তরফ থেকে আকিকা দিয়েছি । (মুসান্নাফে ইবনু আবী শাইবাহ্ ৮ম খণ্ড ২৩৬ পৃষ্ঠা, ফাতহুল বারী ৯ম খণ্ড ৫৯৫ পৃষ্ঠা)

আনাস বর্ণিত একটি হাদীসে আছে, নাবী নাবী হবার পর নিজের তরফ থেকে নিজেই আকিকা  করেছিলেন- (বাইহাকী ৯ম খণ্ড, ৩০০ পৃষ্ঠা; মুসনাদে বাযযার, মুসান্নাফ আঃ রাযযাক ৪র্থ খণ্ড, ৩২৯ পৃষ্ঠা)। 

হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী বলেন, এ হাদীসটি প্রামাণ্য নয়- (ফাতহুল বারী ৯ম খণ্ড ৫৯৫ পৃষ্ঠা)।

ইমাম বাইহাকী বলেন, এ হাদীসটি অস্বীকৃত। আল্লামা নাববী বলেন, এ হাদীসটি বাতিল- (শারহুল মুহায্যাব, তালখীসুল হাবীর ৩৮৭ পৃষ্ঠা, ফাতহুল আল্লাম ২য় খণ্ড, ২৯৯ পৃষ্ঠা)। সুতরাং এ হাদীসটি দলীলের অযোগ্য। তথাপি এ হাদীসের ভিত্তিতে কিছু ‘আলিম পেশ করেন যে, প্রাপ্তবয়স্কের পক্ষ থেকেও আক্বীক্বাহ্ দেয়া বৈধ। (নায়লুল আওতার ৪র্থ খণ্ড, ৩৭১ পৃষ্ঠা)

ছেলেদের আকিকা দেওয়ার নিয়ম
ছেলে শিশু (Photo by Canva) আকিকা দেওয়ার নিয়ম

আকিকার উপকারিতা

সন্দেহ নেই আকীকার রয়েছে নানা তাৎপর্য ও কল্যাণময় দিক। যেমন:

প্রথমঃ

অলীউল্লাহ দেহলভী রহ. বলেন, ‘এতে আছে ধর্মীয়, নাগরিক ও আত্মিক অনেক উপকারী দিক। এজন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বহাল রাখেন, এর আমল করেন এবং মানুষকে এতে উদ্বুদ্ধ করেন। এসব কল্যাণময় দিকের মধ্যে রয়েছে, যেমন :

ক. 

ভদ্রোচিত পন্থায় সন্তানের বংশ পরিচয় প্রকাশ করা। কারণ বংশ পরিচয় প্রকাশ না করলেই নয়। যাতে অনভিপ্রেত কথা না শুনতে হয়। আর এমনটি কখনো সুন্দর দেখায় না যে কেউ পথে পথে ঘুরে মানুষকে বলে বেড়াবেন যে এ আমার সন্তান।

খ. 

খ্রিস্টানদের যখন কোনো সন্তান হতো, তারা তাকে হলুদ পানি দিয়ে হরিদ্রা বানিয়ে দিত। তারা এর নাম দিয়েছিল ‘মা‘মুদিয়া’। তারা বলতো, এর মধ্য দিয়ে শিশুটি খ্রিস্টান হয়ে যাবে। এ নামের সঙ্গে সাদৃশ্য রেখেই নাযিল হয়েছিল

‘(বল,) আমরা আল্লাহর রং গ্রহণ করলাম। আর রং এর দিক দিয়ে আল্লাহর চেয়ে কে অধিক সুন্দর? আর আমরা তাঁরই ইবাদাতকারী।’ {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৩৮}

অতএব তাদের ওই রীতির বিপরীতে হানীফীদেরও কোনো কাজ থাকা বাঞ্ছনীয়। যে থেকে বুঝা যাবে শিশুটি হানীফী তথা ইসমাঈল ও ইবরাহীম আলাইহিমাস সালামের অনুসারী। আর তাঁদের সন্তানদের মধ্যে বংশানুক্রমে আগত কাজগুলোর মধ্যে সবচে প্রসিদ্ধ পুত্র কুরবানীর বিষয়টি। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আপন পুত্র ইসমাঈলকে কুরবানী করেন। 

আর আল্লাহ তাআলাও তাঁকে নিয়ামতে ভূষিত করেন। তাঁর সন্তানকে মহান যবেহের মাধ্যমে মুক্ত করেন এবং তাঁদের বিধান হজকে দেন কিয়ামতাবধির জন্য স্থায়িত্ব, যার মধ্যে রয়েছে মাথা নেড়ে করা এবং পশু যবেহ করা। 

ফলে এই আকীকা ও মাথা মুণ্ডনের মধ্য দিয়ে তাঁদের সঙ্গে সাদৃশ্য গ্রহণ হবে। হানীফী মিল্লাতের প্রতি ইঙ্গিতও হবে আবার ঘোষণাও হবে যে সন্তানটির সঙ্গে এ উম্মতের কাজই করা হয়েছে।

গ. 

এ কাজ তাকে শিশুটির জন্মের পর মুহূর্তেই তাকে এ কল্পনায় নিয়ে যাবে যে সে তার সন্তানকে আল্লাহর পথে উৎসর্গ করে দিল, যেমন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম করেছিলেন তাঁর পুত্র ইসমাঈলকে।

দ্বিতীয়ঃ

সন্তান দেয়ার জন্য আল্লাহ তা’আলার শুকরিয়া জ্ঞাপন করা। কেননা, সন্তানই অন্যতম সেরা নেয়ামত। আর এ সন্তান হলো পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের শোভা…।’ {সূরা আল-কাহফ, আয়াত : ৪৬}

আল্লাহ তা’আলা মানুষকে এ প্রকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন যে সে সন্তান ভূমিষ্ট হলে আনন্দিত হয়। তাই মানুষের কাছে তার স্রষ্টা ও দাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশই কাম্য। এ জন্যই হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে সদ্য সন্তানের পিতা হওয়া ব্যক্তিকে অভিবাদন জানিয়ে এমন

বলার কথা বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমাকে যা দান করা হয়েছে আল্লাহ তাতে বরকত দিন। তুমি দানকারীর শুকরিয়া আদায় করো, সে তার বয়স পুরো করুক এবং তোমাকে তার পুণ্য প্রদান করা হোক।’ [মুসনাদ ইবনুল জা’দ : ১৪৪৮; ইবন আদী, আল-কামেল : ৭/১০১; ইনব আবিদ্দুনইয়া, আল-ইয়াল : ১/২০১।]

অতএব বুঝা গেল, আকীকা হলো আল্লাহর শুকরিয়া আদায় ও তাঁর নৈকট্য লাভের একটি উত্তম উপায়।

তৃতীয়ঃ

এ কথার সংবাদ ও ঘোষণা দেয়া যে এ ব্যক্তি সন্তানের পিতা হয়েছে এবং সন্তানের নাম অমুক রেখেছে। ফলে তার পরিজন, প্রতিবেশি ও বন্ধ-বান্ধব এ সংবাদ জানবে এবং তাকে মোকারকবাদ দিতে আকীকায় উপস্থিত হবে। এতে করে মুসলিম ভাইদের মাঝে সৌহার্দ্য ও ভালোবাসার বন্ধন সুদৃঢ় হবে।

চতুর্থঃ

এতে ইসলামের সামাজিক দায়িত্বগুলোর একটি প্রকারের চর্চা হয়। কেননা, যিনি তার সন্তানের জন্য আকীকা হিসেবে পশু জবাই করেন এবং তা বন্ধ-বান্ধব, প্রতিবেশি ও গরীব-মিসকীনদের জন্য পাঠিয়ে দেন বা তাদের দাওয়াত করেন। আর এটি গরীবদের অভাব মোচন ও দারিদ্র হ্রাসে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখে।

মেয়েদের আকিকার নিয়ম
মেয়ে সন্তান (Photo by Canva)

নামের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

পরিচয়ের জন্য নামের উৎপত্তি। অসংখ্য বস্তুকে চেনার জন্য প্রয়োজন নামের। প্রত্যেক জিনিসের নামের অর্থ সে বস্তুর বৈশিষ্ট্যের ইঙ্গিত বহন করে। সকল কিছুর স্রষ্টা মহান প্রভু আল্ল-হ তা’আলা মানব জাতির পিতা ‘আদাম (‘আলাইহিস সালাম)-কে সৃষ্টি করে প্রত্যেক জিনিসের নাম শিখিয়েছেন। 

মানুষের নামের সাথে থাকে তার জাতির পরিচয়। শুধু চিহ্নিত করাই নামকরণের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। ইসলামী ভাবধারা সম্বলিত নামকরণ ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নামকরণের দ্বারা মানুষের ‘আক্বীদাহ্, চিন্তাধারা ও মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এর জন্যই নামের গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পর ছেলে বা মেয়ে সকলেরই একটি অর্থবোধক নাম সাত দিনের মধ্যে রাখা পিতা-মাতার কতর্ব্য। 

আল্ল-হর বান্দা বা দাসত্বমূলক নাম, নাবীদের নাম ও সহাবাদের নামে নাম রাখা উত্তম। আর কোন কাফির, মুশরিক, ফাসিক কিংবা পাপী ব্যক্তিদের নামে নাম রাখা শারী’আতে নিষিদ্ধ। কারণ নামের প্রতিক্রিয়া সন্তানের চরিত্র প্রতিফলিত হয়। 

হাদীসে এর অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে আবূ দারদা (রাযি.) বর্ণনা করেন, রসূল বলেছেন : কিয়ামাতের দিনে তোমাদের ডাকা হবে তোমাদের নাম ও পিতাদের নামে, তাই তোমাদের নামগুলো সুন্দর রাখ- (আহমাদ, আবূ দাউদ, মিশকাত ৯ম খণ্ড হাঃ ৪৫৬১)। 

যেমন আল্ল-হ বলেন : “তোমার একে অপরের মন্দ নামে ডেকো না”- (সূরাহ হুজুরত, ১১)। যদিও প্রত্যেক মুসলিমের শারী’আতসম্মত সুন্দর ও অর্থপূর্ণ নাম রাখা জরুরী। তবুও অনেকেই আরবী ভাষার অজ্ঞতার কারণেও শিরকী, হারাম, হাস্যকর, অর্থহীন ও বিজাতীয় নাম রাখে।

তাই এসব ইসলাম বিরোধী নাম অবশ্যই পরিহার করে চলতে হবে আর এ ব্যাপারে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে।

রিলেটেডঃ নারীরা স্বপ্নে সাপ দেখলে কি হয়

আকিকা দেওয়ার নিয়ম সংক্রান্ত আরো কিছু মাসআলা

  • অধিকাংশ আলিমের মতে আকীকা সুন্নত। তবে কেউ কেউ আকীকা ওয়াজিব বলেছেন ৷
  • জন্মের সপ্তম দিনে আকীকা দেয়াটাই সুন্নতের পূর্ণ আনুগত্যের দাবী। তবে এরপরেও যে কোনো সময় আকীকা দেয়া যাবে। কারণ, হাদীসে সপ্তম দিনের কথা বলা হয়েছে, তবে তা হবে না- এমন কিছু বলা হয়নি।
  • ছেলের আকীকা হিসেবে দুটি এবং মেয়ের জন্য একটি ছাগল জবাই করা সুন্নত। তবে কষ্টসাধ্য হলে একটি ছাগল দিয়েও ছেলের আকীকা দেয়া যাবে। কারণ, উভয় ধরনের হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

রিলেটেডঃ স্বপ্নে বিয়ে দেখলে কি হয়

পরিশেষে

আল্লাহ তা’আলা আমাদের জীবনের প্রতিটি পর্বকে তাঁর রাসূলের সুন্নতের রঙ্গে রাঙাবার এবং সকল অপসংস্কৃতি ও কুসংস্কার থেকে দূরে থাকবার তাওফীক দিন। আমীন। তো বন্ধুরা এখানেই শেষ করছি আকিকার নিয়ম নামক লেখাটি, যদি এই লেখা পড়ে ভালো লাগে তাহলে তা অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

এছাড়া যদি লেখা সম্পর্কে আপনার কোন মতামত থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন। আজকের মতো এখানেই বিদায়, দেখা হবে আগামী লেখাতে। সবাই ভালো ও সুস্থ থাকেন।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

আকিকা কাকে বলে?

আকিকা শব্দের অর্থ কাটা, সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে যে প্রাণীকে জবাই করা হয় তাকে আকিকা বলে। সে ছেলে হোক বা মেয়ে। কেননা, এ প্রাণীর হলক তথা গলা কাটা করা হয়।

আকিকা কেন করা হয়

Leave a Reply