আসসালামুয়ালাইকুম সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ। আশা করি সবাই ভালো আছেন। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের খাদ্য তালিকায় কাঠ বাদাম একটি আদর্শ খাবার। এর এতো পুষ্টিগুণ থাকায় এটি সবাই কম বেশি পছন্দ করে থাকে। সব ধরনের ড্রাই ফুড গুলোর মধ্যে কাঠ বাদামের পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি।
এতে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে এবং এটি খেতেও সুস্বাদু। স্বাস্থ্যকর বলে অনেকে আবার অতিরিক্ত কাঠ বাদাম খেয়ে ফেলেন। এতে হীতে বিপরীত হতে পারে।
তাই আজকে আমরা জানবো কাঠ বাদাম এর উপকারিতা, কাঠ বাদাম এর অপকারিতাসহ জানা-অজানা কিছু তথ্য, লেখা শেষে আপনার কাঠবাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা, এটি খাওয়ার নিয়ম ও ব্যবহার সম্পর্কে একটা বিস্তারিত ধারণা হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নেই প্রথমেই কাঠ বাদাম কি?
কাঠ বাদাম (Almond):
কাঠবাদাম বা Almond আসলে টিয়ারড্রপ আকৃতির ভোজ্য এক প্রকারের বীজ যা গাছের ফল এবং কাঠের মতো শক্ত খোলসের আবরণ দিয়ে ঢাকা। সেই খোলসের অভ্যন্তরে থাকে বাদামের খাবারের অংশটি। কাঠ বাদামের গাছ নিরক্ষীয় অঞ্চলে জন্মানো লেডউড জাতীয় Combretaceae পরিবারের একটি বৃক্ষ।
কাঠ বাদামকে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়,যেমন– বেঙ্গল আখরোট, সিঙ্গাপুর আখরোট, মালাবার আখরোট, নিরক্ষীয় আখরোট, সমুদ্র আখরোট, ছাতা গাছ, জানমান্দি ইত্যাদি।
কাঠ বাদামের পুষ্টিগুণ:
কাঠ বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘বি’, ‘ই’, এবং ‘ডি যা বিভিন্নভাবে দেহের উপকার করে থাকে। এতে আরো রয়েছে ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, জিংক, কপার, সেলেনিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম।
এসব খনিজ পদার্থ আমাদের শরীরের জন্য যে কতটা ভালো তা আমরা সবাই জানি। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন এক মুঠো করে কাঠবাদাম খেলে তা শরীরের জন্য অনেক ভালো হয়ে থাকে।
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঠ বাদামে রয়েছে-
- এনার্জি (৫৭১ ক্যালরি)
- ফ্যাট (৫০ গ্রাম)
- কার্বোহাইড্রেট (২১.৪৩ গ্রাম)
- আয়রন ( ৩.৮৬ মিলিগ্রাম)
- ক্যালসিয়াম (২৮৬ মিলিগ্রাম)
- ফাইবার (১০.৭ গ্রাম)
- ম্যাগনেসিয়াম (২৮৬ মিলিগ্রাম)
- পটাশিয়াম (৭১৪ মিলিগ্রাম)
- প্রোটিন (২১.৪৩ গ্রাম)
- কপার (১.০৭ মিলিগ্রাম)
- ম্যাঙ্গানিজ (২ মিলিগ্রাম)
- ভিটামিন বি ২ (০.৯১১ মিলিগ্রাম)
কাঠ বাদাম এর উপকারিতা
এতো এতো পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কাঠ বাদাম অবশ্যই আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এর মধ্যে থাকা এতো ভিটামিন ও মিনারেল দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো উন্নত করে। তাই সুস্থ থাকার জন্য এই খাবার অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। চলুন এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।
হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখে:
হৃদপিন্ড বা হার্টকে সুস্থ রাখতে দরকার হয় উপকারী কিছু ভিটামিন ও মিনারেলের। যা কাঠবাদামে বিদ্যমান থাকে। এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন ই, কপার,ম্যাঙ্গানিজ এবং প্রোটিন হার্টের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা ৫০% পর্যন্ত কমে যায়।
আবার কাঠবাদামে বিদ্যমান ভিটামিন ই হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং হার্টকে ক্ষতিকর প্রদাহ থেকে সুরক্ষিত রাখে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়:
কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণ মনো-স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যা শরীরের জন্য উপকারী ফ্যাট হিসেবে পরিচিত। কাঠ বাদামে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরী উপাদান শরীরের অভ্যন্তরে ভালো কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। যার কারণে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকেরও আশঙ্কা কম থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
কাঠবাদামে ভিটামিন ই সহ আরো অন্যান্য ভিটামিন, মিনারেল এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে:
বাদামে খুব কম পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে কিন্তু এটি স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। আবার গবেষণায় দেখা যায়, খাবার খাওয়ার পর কাঠবাদাম খেলে তা ইনসুলিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কাঠবাদাম হতে পারে একটি পারফেক্ট চয়েস।
ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়ক:
প্রোটিন, ফাইবার এবং ফ্যাট সমৃদ্ধ কাঠবাদাম খেলে খিদে কমে যায়। যা মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে। এভাবে কাঠ বাদাম স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার জন্য উপকারী ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন প্রায় ৫৫ গ্রাম কাঠবাদাম খেলে তা হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকিও কমায়।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে:
কাঠবাদামে থাকে সোডিয়াম ও ফসফরাস যা রক্তচাপের উঠানামা এবং একে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:
আমরা জানি ফাইবার বা আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। আর কাঠবাদামে থাকে উপকারী ফাইবার যা নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। তবে কাঠবাদাম খাওয়ার সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে যেন তা ভালোভাবে পরিপাক হতে পারে।
দাঁত ও হাড় ভালো রাখে:
কাঠবাদামে এমন কিছু উপাদান আছে যা দাঁত ও হাড়ের জন্য উপকারী। এর মধ্যে ফসফরাস, মিনারেল এবং ভিটামিন অন্যতম। এসব উপাদানগুলো হাড় এবং দাঁতকে কেবল মজবুতই করে না বরং অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয়রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে:
অতি মাত্রায় অ্যান্টি- অক্সিডেন্টযুক্ত কাঠবাদাম ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, কাঠবাদামের পাশাপাশি চীনাবাদাম এবং আখরোট স্তন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
ভিটামিন ই এর ভালো উৎস:
কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই। আমরা জানি, ভিটামিন ই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা দেহের বিপাকীয় কার্যক্রমের ফলে উৎপাদিত ফ্রি রেডিক্যাল প্রশমনে দারুন ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ভিটামিন- ই ত্বক সুন্দর রাখে আর মুখে বয়সের ছাপ পড়তে বাধা প্রদান করে ।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি পুষ্টি উপাদান রিবোফ্লেভিন এবং এল- ক্যারনিটিন উভয়ই কাঠবাদামে বিদ্যমান রয়েছে। যার ফলে এটি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে কাঠবাদাম খুবই উপযোগী। কারণ এতে ভিটামিন ই এর পাশাপাশি মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য অন্যান্য নিউট্রিয়েন্ট ও মিনারেলস রয়েছে। এজন্য বাচ্চাদের মস্তিষ্কের উন্নতির জন্য তাদের নিয়মিত কাঠবাদাম খেতে দেয়া উচিত।
কোষের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
কাঠবাদামে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই কোষের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এতে দেহের কোষ ভালো থাকে এবং বয়স বাড়লেও কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না।
প্রদাহ কমায়:
কাঠবাদামের গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি অ্যাসিড লিনোলিয়েক অ্যাসিড শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকারী:
কাঠবাদামে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলিক এসিড এবং ভিটামিন বি যা গর্ভাবস্থায় শিশুর বৃদ্ধির জন্য অনেক উপকারী। এটি টিস্যু গঠন ও কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে গর্ভস্থ শিশুর জন্মকালীন সমস্যা হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়।
ত্বক ও চুলের যত্নে কাঠবাদাম:
নিয়মিত কাঠবাদাম খেলে ত্বকে বয়সের বলীরেখা দেখা দেয় না এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা প্রাকৃতিকভাবে বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও এটি মুখের ব্ল্যাকহেডস , হোয়াইটহেডস এবং ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।
কাঠবাদামে থাকা ভিটামিন ই ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচায় এবং ত্বককে ড্যামেজ এর হাত থেকে রক্ষা করে।
মধু, লেবু ও কাঠ বাদামের তেল মিশিয়ে মুখে মাস্ক হিসাবে ব্যবহার করলে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল এবং মুখে বয়সের ছাপ বা বলিরেখা অনেকটা কমে আসবে।
কাঠবাদামের তেলে আছে ভিটামিন ‘ডি’। তাই এই তেলের মালিশ শিশুদের জন্যও উপকারী।
ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক ময়েশচারাইজার হিসেবে কাজ করে কাঠবাদামের দুধ। কাঠবাদাম মিহি করে বেটে বা ব্লেন্ড করে নিয়ে ছেঁকে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে কাঠ বাদামের দুধ।
কাঠবাদামে থাকে মনো ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ, ডি, ই, বি১, বি২ এবং বি৬ যা চুলের জন্যও অনেক উপকারী। এরা চুল কে পর্যাপ্ত পুষ্টি দেয় এবং চুলকে গোড়া থেকে শক্ত করে। এছাড়াও এতে থাকা ফসফরাস চুল পড়া কমাতে সহায়তা করে।
কাঠবাদামের তেল বা আমন্ড অয়েল চুলের যত্নে খুবই জনপ্রিয় একটি তেল। কাঠবাদামের তেল, মেথি গুঁড়া, ক্যাস্টর অয়েল এবং নারিকেল তেল মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করলে চুলের গোড়া শক্ত হবে, চুল পড়া কমবে এবং চুল তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে।
রিলেটেডঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় ২০২৩
কাঠ বাদামের অপকারিতা:
কাঠবাদামের বিভিন্ন উপকারিতার কথা শুনে আমরা অনেকেই প্রচুর পরিমানে কাঠ বাদাম খেয়ে থাকি। কিন্তু অতিরিক্ত কাঠবাদাম খেলে তা যে শরীরে কি ধরনের প্রভাব ফেলবে সেটা কি ভেবে দেখেছেন?
এতো উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও এর বেশ কিছু অপকারিতাও রয়েছে, যা সবার জেনে রাখা ভালো।
তাই চলুন জেনে নিই কাঠবাদাম বেশি পরিমাণে খেলে কি কি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
- কাঠবাদাম ওজন কমায় ঠিকই কিন্তু বেশি পরিমাণে কাঠবাদাম খেলে এতে থাকা উচ্চমাত্রার প্রোটিন ওজন বাড়িয়েও দিতে পারে।
- প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কাঠ বাদাম খেলে গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
- বেশি পরিমাণে কাঠবাদাম খেলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- কাঠবাদামে ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা অনেক সময় ঔষধের কার্যকারিতায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
- অনেকের কাঠবাদাম খেলে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কাঠবাদাম খেলে ডায়রিয়া ও পেটে ব্যথা হতে পারে।
- কাঠবাদামের যে আস্তরণ থাকে সেটাতে ট্যানিন নামক উপাদান থাকে যা দেহের ক্ষতি করতে পারে।
- যাদের কিডনির সমস্যা আছে অথবা যদি কারো ইউরিয়া ক্রিয়েটিনিন বেশি থাকে তবে তাদের কাঠবাদাম না খাওয়াই ভালো। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা কিডনি রোগীর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
- যারা ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট খাচ্ছেন তারা আবার কাঠবাদাম খেলে শরীরে ভিটামিন ই ওভারডোজ হতে পারে। এতে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কাঠবাদাম খাওয়ার নিয়ম:
কাঠবাদাম শুকনো , ভেজে অথবা পানিতে ভিজিয়েও খাওয়া যায়। কাঠবাদাম ভেজে খেলে সুস্বাদু হয়। তবে কাঠবাদাম ভেজে খেলে এতে বিদ্যমান ভিটামিন বি ও সি নষ্ট হয়ে যায়। তাই কাঁচা কাঠবাদাম খাওয়াই ভালো। এক্ষেত্রে একমুঠো বা ১০-১৫ টা কাঠবাদাম খেলেই যথেষ্ট।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঠবাদাম পানিতে ভিজিয়ে খাওয়ার ফলে সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। পানিতে ভিজিয়ে রাখার ফলে এর এনজাইম গুলো সক্রিয়তা লাভ করে।
আবার কাঠবাদাম অনেকটা নরম হয়ে যায়, যা পাকস্থলী সহজেই হজম করে নিতে পারে। কাঠবাদাম ভিজিয়ে রেখে এর উপরের আস্তরণ ফেলে দিয়ে খেলে আর ট্যানিন দেহের ক্ষতি করতে পারে না।
কাঠবাদাম ভিজিয়ে খেতে চাইলে একটি পাত্রে একমুঠো কাঠবাদাম পানিতে ভিজিয়ে তাতে সামান্য লবণ দিয়ে ছয় থেকে আট ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর খোসা ছাড়িয়ে খেয়ে নিতে পারেন।
সকালে খালি পেটে ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদাম খেলে তা সারাদিনের জন্য শরীরে শক্তি সঞ্চার করে।
এর পাশাপাশি কাঠবাদাম বিভিন্ন খাবারে দিয়েও খাওয়া যায়। যেমন – পায়েস, সেমাই, হালুয়া ইত্যাদি খাবার গুলোতে আমরা কাঠবাদাম কুচি করে কেটে পরিবেশন করে থাকি।
আবার যারা গরুর দুধ খেতে পারে না তারা এর বিকল্প হিসেবে কাঠ বাদামের দুধ খেতে পারেন। এই দুধ শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
শেষ কথা
সঠিকভাবে কাঠ বাদাম ব্যবহারের ফলে কাঠ বাদাম এর উপকারিতা সহজেই পাওয়া সম্ভব, আশা করি উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা কাঠবাদামের বেশ কিছু জানা অজানা উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিলাম।
সেই সাথে সুস্থ থাকতে হলে কিভাবে ও কি পরিমান কাঠবাদাম খাওয়া উচিত সে সম্পর্কেও জানলাম। যদি লেখাটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না, আজকের মতো এখানেই বিদায়। সবাই ভালো থাকবেন।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
ভাজা কাঠবাদামও কি স্বাস্থ্যকর?
ভাজার ফলে কাঠ বাদামে পানির উপস্থিতি কমে যায়। ফলে কাঠবাদামের পুষ্টি উপাদান জমাট বাঁধা অবস্থায় থাকে। তবে এর ভিটামিন বি ও সি নষ্ট হয়ে যায়। তাই কাঠবাদাম ভেজে না খেয়ে কাঁচা অথবা ভিজিয়ে খাওয়াই স্বাস্থ্যকর।
রেফ্রিজারেটরে রাখলে কি এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়?
না ,রেফ্রিজারেটরে রাখলে কাঠবাদামে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না বরং এতে আরো কাঠ বাদাম বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায়।
রান্নাতে কাঠ বাদাম ব্যবহার করলে কি এর উপকারিতা পাওয়া যাবে?
রান্না করলে যদিও এর কিছু কিছু পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায় তবে এর উপকারিতা অবশ্যই পাওয়া যাবে। বিভিন্ন ধরনের তরকারিতে কাঠবাদাম বাটা ব্যবহার করলে এর স্বাদও বহুগুণে বেড়ে যায়।
তথ্যসুত্রঃ
২। https://www.cochranelibrary.com/cdsr/doi/10.1002/14651858.CD011583/full
৩। https://bmcmedicine.biomedcentral.com/articles/10.1186/s12916-016-0730-3
৪। https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/35886124/
৫। https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/34201139/