Skip to content

আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ, আয়াতুল কুরসি আরবি ও বাংলা উচ্চারণ

আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ_আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

আয়াতুল কুরসি কুরআন মজীদের সর্ববৃহৎ আয়াত। হাদীসে এ আয়াতের বহু ফযিলত ও বরকত বর্ণিত হয়েছে। মুসনাদে আহমদ গ্রন্থে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়াতুল কুরসীকে সবচে উত্তম আয়াত বলে উল্লেখ করেছেন। 

অন্য এক হাদীসে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উবাই ইবনে কা’বকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কুরআনের মধ্যে কোন আয়াতটি সবচে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ? 

উবাই ইবনে কা’ব আরজ করলেন, তা হচ্ছে আয়াতুল কুরছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা সমর্থন করে বললেন, হে আবুল মানযার! তোমাকে এ উত্তম জ্ঞানের জন্য ধন্যবাদ। 

আজকের লেখাতে আমরা জানবো আয়াতুল কুরসির বাংলা, আরবী, ইংরেজী উচ্চারণ, এবং তার বাংলা অর্থ, ফজিলত ও বিশেষ হাদিস সম্পর্কে। তাহলে দেরী না করে জেনে নেই আয়াতুল কুরসি সম্পর্কে বিস্তারিত।     

আয়াতুল কুরসি

আয়াতুল কুরসির অনেক ফযীলত ও অসংখ্য সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন, এই আয়াত হল কুরআনের অতীব মহান আয়াত। এটা পড়লে রাতে শয়তান থেকে হিফাযতে থাকা যায়। এছাড়া এটি পড়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলে অনেক সওয়াব ও নেকী হাসিল হয় যা আমরা এই লেখাতে জানবো।

আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ (Ayatul kursi bangla)

আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইউল্ ক্বাইয়ূম, লা-তা’খুযুহূ সিনাতুওঁ ওয়ালা নাউম লাহূ মা-ফিস সামাওয়াতি ওয়ামা ফিল আরযি, মান যাল্লাযী ইয়াফা’উ ‘ইনদাহু ইল্লা বিইনিহী, ইয়া’লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খালফাহুম ওয়ালা ইউহীতুনা বিশাইয়িম মিন ‘ইলমিহী ইল্লা- বিমা-শা-আ, ওয়াসি‘আ কুরসিইউহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযা, ওয়ালা-ইয়াঊদুহূ হিফ্যুহুমা ওয়া হুয়াল ‘আলিইউল ‘আযীম।

আয়াতুল কুরসি আরবী উচ্চারণ 

 اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۚ اَلۡحَیُّ الۡقَیُّوۡمُ ۬ۚ لَا تَاۡخُذُهٗ سِنَۃٌ وَّ لَا نَوۡمٌ ؕ لَهٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ مَنۡ ذَا الَّذِیۡ یَشۡفَعُ عِنۡدَهٗۤ اِلَّا بِاِذۡنِهٖ ؕ یَعۡلَمُ مَا بَیۡنَ اَیۡدِیۡهِمۡ وَ مَا خَلۡفَهُمۡ ۚ وَ لَا یُحِیۡطُوۡنَ بِشَیۡءٍ مِّنۡ عِلۡمِهٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ کُرۡسِیُّهُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ ۚ وَ لَا یَـُٔوۡدُهٗ حِفۡظُهُمَا ۚ وَ هُوَ الۡعَلِیُّ الۡعَظِیۡمُ ﴿۲۵۵﴾

আয়াতুল কুরসি ইংরেজী উচ্চারণ 

Allah – there is no deity except Him, the Ever-Living, the Sustainer of [all] existence. Neither drowsiness overtakes Him nor sleep. To Him belongs whatever is in the heavens and whatever is on the earth. Who is it that can intercede with Him except by His permission? He knows what is [presently] before them and what will be after them, and they encompass not a thing of His knowledge except for what He wills. His Kursi extends over the heavens and the earth, and their preservation tires Him not. And He is the Most High, the Most Great.

আয়াতুল কুরসি বাংলা অর্থ

‘আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন প্রকৃত উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সব কিছুই তাঁর। কে আছে এমন যে, তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? দৃষ্টির সামনে ও পিছনে যা কিছু রয়েছে সবই তিনি জানেন। মানুষ ও সমস্ত সৃষ্টির জ্ঞান আল্লাহ্র জ্ঞানের কোন একটি অংশবিশেষকেও পরিবেষ্টন করতে পারে না। কিন্তু আল্লাহ যাকে যতটুকু ইচ্ছা দান করেন তিনি ততটুকু পান। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীন পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলো ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয় । তিনিই সর্বোচ্চ ও সর্বাপেক্ষা মহান’ (বাক্বারাহ ২৫৫)।

আয়াতুল কুরসি_আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ছবি
আয়াতুল কুরসি

আয়াতুল কুরসির আমল ও ফযীলত

উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ্র একক অস্তিত্ব, তাওহীদ ও গুণাবলীর বর্ণনা এক অত্যাশ্চর্য ও অনুপম ভঙ্গিতে করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এটিকে সবচেয়ে উত্তম আয়াত বলে উল্লেখ করেছেন। 

নাসাঈ শরীফের এক বর্ণনা রয়েছে যে, নবী করীম (ছাঃ) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেহ ফরয ছালাতের পর আয়াতুল কুরসী নিয়মিত পাঠ করে, তার জন্য বেহেশতে প্রবেশের পথে একমাত্র মৃত্যু ছাড়া অন্য কিছু বাধা দিতে পারে না। 

শয়নকালে পাঠ করলে সারা রাত্রীতে একজন ফেরেশতা তাকে পাহারা দিবে যাতে শয়তান তার ক্ষতি করতে না পারে।

  • প্রতিদিন ফজরের নামাযের পর এবং রাতে এশার নামাজের পর শোয়ার সময় যে ব্যক্তি আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে, মহান আল্লাহ পাক উক্ত পাঠকারীর স্বয়ং রক্ষণাবেক্ষণকারী হবেন। 
  • জ্বিন-পরী, দেও-দানবের অনিষ্ট হতে রক্ষা পাওয়া যায়। 
  • সকল প্রকার বিপদ-আপদ ও দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। 
  • মনের সকল প্রকার নেক বাসনা পূর্ণ হয় এবং রুজী-রোজগারে উন্নতি হয়। 
  • প্রতি ওয়াক্ত নামজের পর বিশেষ করে ফরয নামাযের পর একবার করে পাঠ করলে অত্যন্ত আরামের সাথে রুহ কবজ করা হয়। 
  • ঘর হতে বের হবার সময় অথবা বিদেশে রওয়ানা হবার সময় এ আয়াতসমূহ পাঠ করলে সকল প্রকার বিপদ হতে নিরাপদে থাকা যায় এবং যাবতীয় উদ্দেশ্য সফল হয়।

আয়াতুল কুরসি নিয়ে কিছু সহিহ হাদিস

নাসায়ী শরীফের এক বর্ণনাতে রয়েছে, হুযুর আকরম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “যে লোক প্রত্যেক ফরয নামাযের পর আয়াতুল কুরসী নিয়মিত পাঠ করে, তার জন্য বেহেশতে প্রবেশের পথে একমাত্র মৃত্যু ছাড়া অন্য কোন অন্তরার থাকে না।” 

অর্থাৎ মৃত্যুর সাথে সাথেই সে বেহেশতের ফলাফল এবং আরাম-আয়েশ উপভোগ করতে শুরু করবে।

আবু হুরায়রা (রা) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “সূরা বাকারায় একটি আয়াত আছে, যা কুরআনের সমস্ত আয়াতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, এই আয়াত কোন বাড়িতে তিলাওয়াত করা হলে, যদি সেখানে কোন জিন-শয়তান থাকে, অবশ্যই তা বেরিয়ে যাবে।” – হাকেম, বায়হাকী।

এ আয়াতে মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ জাল্লা শানুহুর একক অস্তিত্ব, তাওহীদ ও গুণাবলীর বর্ণনা এক অত্যাশ্চর্য ও অনুপম ভঙ্গিতে দেয়া হয়েছে। তাতে আল্লাহর অস্তিত্ববান হওয়া, জীবন্ত হওয়া, শ্রবণকারী হওয়া, দর্শক হওয়া, বাকশক্তিসম্পন্ন হওয়া, তাঁর সত্তার অপরিহার্যতা, তাঁর অসীম অনন্তকাল পর্যন্ত থাকা, সমগ্র বিশ্বের স্রষ্টা ও উদ্ভাবক হওয়া, যাবতীয় ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়ার প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়া, সমগ্র বিশ্বের একচ্ছত্র অধিপতি হওয়া, এমন শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্বের অধিকারী হওয়া, যাতে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর সামনে কেউ কোন কথা বলতে না পারে, এমন পরিপূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী হওয়া, যাতে সমগ্র বিশ্ব ও তার যাবতীয় বস্তুনিচয়কে সৃষ্টি করা এবং সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ এবং তাদের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গিয়ে তাঁকে কোন ক্লান্তি বা পরিশ্রান্ত অবস্থার সম্মুখীন হতে না হয় এবং এমন ব্যাপক জ্ঞানের অধিকারী হওয়া, কোন প্রকাশ্য কিংবা গোপন বস্তু বা কোন অণু-পরমাণুর বিন্দু বিসর্গও যাতে বাদ পড়তে না পারে। এই হচ্ছে আয়াতটির মোটামুটি ও সংক্ষিপ্ত বিষয়বস্তু। 

এ আয়াতটির ১০টি বাক্যের মধ্যে দ্বিতীয় বাক্যে আল্লাহর দু’টি গুণবাচক নাম অর্থৎ আল-হাইয়ু আল-কাইয়ুমু অনেকের মতে ইসমে আযম। যে নাম দিয়ে অসাধ্যকে সাধন করা যায়। হযরত আলী (রা) বলেছেন যে, বদরের যুদ্ধে আমি একবার চেয়েছিলাম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখব তিনি কি করছেন। সেখানে গিয়ে দেখলাম, তিনি সিজদায় পড়ে ইয়া হাইয়ু, ইয়া কাইয়ুমু বলছেন।

-(সূরা আল-বাক্বারা: ২:২৫)

তো বন্ধুরা এই ছিলো আজকের লেখা আয়াতুল কুরসি ও আয়াতুল কুরসির বাংলা উচ্চারণ, যদি এই লেখাটি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে লেখাটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।

সচরাচর জিজ্ঞাসা – আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ, আয়াতুল কুরসি আরবি ও বাংলা উচ্চারণ

ayatul kursi bangla কি?

আয়াতুল কুরসি বাংলা হল একটি দোয়া

আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ কিভাবে?

আয়াতুল কুরসি বাংলা অর্থ কি?

সচরাচর কি দিয়ে সার্চ করতে হবে?

Leave a Reply