Skip to content

ফরজ গোসলের নিয়ম, দোয়া ও হাদিস | ২০২৪

ফরজ গোসলের নিয়ম

আসসালামুয়ালাইকুম সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ। আশা করি সবাই ভালো আছেন।  ইসলামের নিয়ম ও আহকাম পালনের জন্য বান্দাকে অবশ্যই পবিত্রতা অর্জন করতে হয়। পবিত্রতা বলতে জাহেরী ও বাতেনী উভয় প্রকার নাপাকী হতে পবিত্র হওয়াকে বোঝায়। এ সম্পর্কে আল-কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে, 

‘নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীকে ভালবাসেন।’ 

       [সূরা বাকারা:২২২] 

পবিত্রতা অর্জনের জন্য ইসলামে কিছু সুনির্দিষ্ট পন্থা রয়েছে। যেমন– গোসল, অজু, তায়াম্মুম, খাওয়ার আগে হাত ধোয়া, দাঁত পরিষ্কার রাখতে মেসওয়াক ব্যবহার করা, শরীরে নাপাকি বা ময়লা লাগলে তা ধুয়ে ফেলা ইত্যাদি। 

ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় পবিত্রতা ও আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে পবিত্র পানি দ্বারা পুরো শরীর ধোয়াকে ‘গোসল’ বলা হয়। 

গোসল হলো সর্ববৃহৎ ও পরিপূর্ণ পবিত্রতা। এটি এমন একটি ইবাদত, যার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ পবিত্রতা অর্জনের পাশাপাশি দেহ-মনে বিশেষ প্রশান্তি লাভ হয়, শরীরের শ্রান্তি–ক্লান্তি দূর হয়, সঙ্গী ফেরেশতারা স্বস্তি লাভ করে, শয়তানের ওয়াসওয়াসা বিদূরিত হয়, রুহ শান্তি পায় এবং নফস কলুষমুক্ত হয়। 

বেশ কিছু কারণে আমাদের ওপর গোসল ফরজ হয়। অনেকে গোসল ফরজ হওয়ার কারণ সম্পর্কে অবগত থাকলেও ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। সংকোচের কারণে অনেকে এটা নিয়ে খোলামেলা কথাও বলতে চায় না। কিন্তু ইসলামের নিয়ম অনুসরণ করার জন্য সঠিকভাবে ফরজ গোসল করার নিয়ম সম্পর্কে জানা জরুরি। 

তাই আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা ফরজ গোসলের নিয়ম এবং এ সম্পর্কে কিছু হাদীসের বাণী সম্পর্কে জানবো। 

ফরজ গোসল: 

অপবিত্রতা থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য বাধ্যতামূলক যে গোসল করতে হয় তাকে ফরজ গোসল বলে। গোসল ফরজ হলে সেটা না করলে ব্যক্তি অপবিত্র থেকে যায়। আর অপবিত্র থাকলে তার নামাজসহ কোনো আমলই কবুল হবে না, যা ঈমানের ক্ষেত্রে একটি চরম ভয়ানক ব্যাপার।

বালেগ বয়সে নাপাক হলে অর্থাৎ গোসল ফরজ হলে তা থেকে পবিত্রতা অর্জনের তাগীদ দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন: 

“যদি তোমরা নাপাক হয়ে থাক, তবে গোসল কর।

      [সূরা মায়েদাহ: ৬]

সুতরাং গোসল ফরজ হলে অবশ্যই সঠিক নিয়মে গোসল সম্পন্ন করে নিতে হবে।

ফরজ গোসল
ফরজ গোসল | Photo: Canva

যে সব কারণে গোসল ফরজ হয়: 

চারটি কারণে একজন মুমিনের ওপর গোসল ফরজ হয়। 

গোসল ফরজ হওয়ার সুনির্দিষ্ট চার কারণের মধ্যে যে কোনো একটি সংঘটিত হলেই গোসল ফরজ হয়। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো: 

১. স্বপ্নদোষ বা উত্তেজনাবশত বীর্যপাত ঘটলে:

জাগ্রত বা নিদ্রা অবস্থায় উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত ঘটলেই গোসল ফরজ হয়ে যাবে। স্বপ্নদোষের ক্ষেত্রে অনেকে নিদ্রা অবস্থায় উত্তেজনা অনুভব করে না। তবে সেক্ষেত্রেও গোসল ফরজ হয়ে যাবে। অর্থাৎ গোসল ফরজ হওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত হলো বীর্যপাত। এই হুকুম নারী পুরুষ উভয়ের জন্য প্রযোজ্য।

 রিলেটেডঃ স্বপ্নদোষ বন্ধ করার উপায় ২০২৩

২. নারী-পুরুষ মিলনে ( বীর্যপাত হোক বা না হোক ): 

সহবাসের ক্ষেত্রে স্ত্রীর যৌনাঙ্গে পুরুষাঙ্গের সর্বনিম্ন আগাটুকু প্রবেশ করালেই গোসল ফরজ হয়ে যাবে। এইভাবে স্ত্রী সহবাসে যদি বীর্যপাত না হয় তবুও গোসল ফরজ হবে। এই বিষয়টি অনেকে না জেনে ফরজ গোসল ছাড়াই বিভিন্ন আমল করে থাকেন। এটি একটি মারাত্মক ভুল। এই ভুল থেকে বাঁচতে অবশ্যই সঠিকটা জানতে হবে। 

রিলেটেডঃ অর্থসহ সহবাসের দোয়া, বাংলা ও আরবি ২০২৩

৩. মেয়েদের হায়েজ- নিফাস শেষ হলে: 

হায়েজ হলো মেয়েদের ঋতুস্রাব যাকে আমরা মাসিক বলে থাকি। প্রতিমাসে মেয়েদের এই ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর তাদের ওপর গোসল ফরজ হয়। 

আবার সন্তান প্রসবের পর যে স্রাব হয় তাকে নেফাস বলে। সেই নেফাস বন্ধ হলেও গোসল ফরজ হয়।

৪. নও-মুসলিম হলে (সদ্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে) 

কোনো অমুসলিম ব্যক্তি যদি ইসলাম গ্রহন করে তবে তার ওপরও গোসল ফরজ হয়। 

কায়েস ইবনে আসেম যখন ইসলাম গ্রহণ করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে গোসল করার নির্দেশ দেন। (আবু দাউদ)

ফরজ গোসলের নিয়ম ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম: 

ফরজ গোসল করার ক্ষেত্রে গোসলের ফরজসমূহ এবং সুন্নতসমূহ বিবেচনায় রেখে গোসল করতে হবে। চলুন জেনে নেই ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম, গোসলের ফরজ তিনটিঃ 

১. একবার গড়গড়াসহ কুলি করা

২. একবার নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌঁছানো 

৩. সমস্ত শরীরে পানি পৌঁছানো। 

এই তিনটি ফরজ যথার্থভাবে পালন করতে পারলেই ফরজ গোসল সম্পন্ন হবে। আর গোসলের একটি ফরজও যদি বাদ যায় তবে সেই ফরজ গোসল হবে না। ব্যক্তি অপবিত্র রয়ে যাবে। 

এছাড়াও গোসলের সুন্নত রয়েছে। গোসলের সুন্নত তিনটিঃ

১. তিনবার গড়গড়াসহ কুলি করা

২. তিনবার নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌঁছানো

৩. তিনবার সমস্ত শরীরে পানি ঢেলে পরিষ্কার করা। 

নিম্নে ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হলোঃ 

  • ফরজ গোসলের আগে প্রাকৃতিক প্রয়োজন সম্পন্ন করতে হবে।
  •  গোসলের জন্য মনে মনে নিয়ত করতে হবে, মুখে উচ্চারণ করার প্রয়োজন নেই। 
  • সর্বপ্রথম দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ধৌত করতে হবে তিনবার।
  • এরপর ডান হাতে পানি নিয়ে বাম হাত দিয়ে লজ্জাস্থান এবং তার আশপাশের অংশ ভালোমতো ধুয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোথাও বীর্য বা নাপাকি লেগে থাকলে তা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। 
  • এরপর বাম হাত ভালোমতো ধুয়ে নিতে হবে। 
  • অতঃপর ‘বিসমিল্লাহ’ বলে সঠিক নিয়মে ওজু করতে হবে। 
  • ওজু শেষে মাথায় তিনবার পানি ঢেলে চুলের গোড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছাতে হবে। 
  • এরপর সমস্ত শরীর ভালোমতো ধুতে হবে। এজন্য তিনবার ডান পাশে এবং তিনবার বাম পাশে পানি ঢেলে ভালোমতো পরিষ্কার করতে হবে। 
  • খেয়াল রাখতে হবে যেনো শরীরের কোনো অংশই শুকনা না থাকে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ঢালতে হবে যেনো বগল, নাভী, চুলের গোড়া, কানের ছিদ্র পর্যন্ত পানি পৌঁছাতে পারে। উল্লেখ্য, নারীদের নখে নেইলপলিশ লাগানো থাকলে তা সম্পূর্ণ ওঠানো ব্যতীত অজু-গোসল শুদ্ধ হয় না। তাই পানির স্পর্শ পরিপূর্ণভাবে থাকার জন্য অবশ্যই নেইলপলিশ উঠিয়ে নিতে হবে। 
  • সবশেষে অন্য স্থানে সরে গিয়ে ভালোমতো তিনবার পা ধুয়ে নিতে হবে। 

ফরজ গোসল করার সময় নিজের নখ,দাড়ি ও চুলের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে যেন এগুলো শুকনা থেকে না যায়। কোনো অলঙ্কার পরিহিত থাকলে তা নাড়াচাড়া করে সঠিকভাবে শরীরে পানি পৌঁছাতে হবে। 

এছাড়াও রাসুলুল্লাহ (সা.) নারী পুরুষ উভয়কেই পর্দার মধ্যে থেকে ফরজ গোসল করতে বলেছেন। 

উক্ত নিয়ম অনুসারে ফরজ গোসল করলে আর ওজু করারও দরকার হয় না, যদি ওজু না ভাঙ্গে। ফরজ গোসলের পর কাপড় পরিবর্তন করলে বা হাঁটুর উপর কাপড় উঠে গেলেও ওজু ভঙ্গ হবে না। কারণ এটা ওজু ভঙ্গের কারণ নয়। 

এ সম্পর্কে আয়েশা রা. বলেন, 

“হযরত মুহাম্মদ (সা.) ফরজ গোসলের পর আর ওজু করতেন না।”

    [তিরমিযী : ১০৩, মিশকাত : ৪০৯]

ফরজ গোসল সম্পর্কে হাদীস: 

ফরজ গোসল সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীসে বলা হয়েছে। নিম্নে এমন কিছু হাদীসের বর্ণণা তুলে ধরা হলোঃ

★ আলী (রাযি.) বলেছেন,

“তুমি যদি সজোরে পানি নির্গত করো, তবে গোসল করো।”

     (আবু দাউদ)

এখানে বীর্যপাত হলে গোসল ফরজ হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। 

হায়েজ ও নেফাস সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফাতিমা বিনতে আবি হুবাইশ রাযি. কে বলেন, 

“হায়েজ এলে নামাজ ছেড়ে দাও, আর হায়েজ চলে গেলে গোসল করো ও নামাজ পড়ো। আর নিফাস হলো হায়েজ এর মতো, এ ব্যাপারে কারো দ্বীমত নেই। 

সহবাসের পর স্বামী স্ত্রীর গোসল ফরজ
সহবাসের পর স্বামী স্ত্রীর গোসল ফরজ | Photo: Canva

    (বুখারী ও মুসলিম)

অর্থাৎ হায়েজ ও নেফাসের সময় নামাজ সহ অন্যান্য ইবাদত করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং তা শেষ হয়ে গেলে ফরজ গোসল করার মাধ্যমে পবিত্র হয়ে আবার ইবাদত বন্দেগী শুরু করতে হবে। 

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“পানির কারণে পানি অপরিহার্য।”

   (সহিহ মুসলিম, ১৫১)

এখানে পানি বলতে বীর্য নির্গত হাওয়ার কারণে গোসল ফরজ বা অপরিহার্য হওয়ার বিষয়টি বুঝানো হয়েছে।

★ হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, 

“গোসল ফরজ হওয়ার পরও কোনো কারণ ছাড়াই গোসল না করে অপবিত্র অবস্থায় এক ওয়াক্ত নামাজের সময় পার করা মারাত্মক গুনাহ।”

     (সহীহ মুসলিম:২৫৯২) 

তাই গোসল ফরজ হলে কোনো বিলম্ব ছাড়াই গোসল সম্পন্ন করে নেয়া উচিত। 

★উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা) এর বর্ণিত হাদিসে এসেছে, 

“রাসুলুল্লাহ (সা.) সহবাসের কারণে অপবিত্র অবস্থায় সুবহে সাদিক অতিক্রম করতেন ,তবে গোসল করে তিনি রোজা রাখতেন।”

     (সহীহ বুখারী:১৯২৬) 

রিলেটেডঃ নামাজের নিষিদ্ধ সময় । ২০২৩

ফরজ গোসল না করার শাস্তি: 

গোসল ফরজ হাওয়ার পর কেউ যদি গোসল না করে তবে সে কোনোভাবেই পবিত্র হতে পারবে না। আর পবিত্র না থাকলে নামাজ, রোজা , হজ, তাওয়াফ করা, কোরআন শরীফ স্পর্শ করা ইত্যাদি ইবাদতগুলো হবে না। এসব ইবাদত না হওয়ার কারণে কবরে কঠিন আযাব ভোগ করতে হবে। এ সম্পর্কে আল কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, 

“হে মুমিনগণ, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা বুঝতে পারো যা তোমরা বল এবং অপবিত্র অবস্থায়ও না, যতক্ষণ না তোমরা গোসল কর, তবে যদি তোমরা পথ অতিক্রমকারী হও।” 

   (আন-নিসা:৪৩) 

এছাড়াও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 

“পবিত্রতা ব্যতীত কেউ কুরআন স্পর্শ করবে না।”

(হাদীসটি ইমাম মালিক তার ‘মুয়াত্তা’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন)

তাই বোঝা যাচ্ছে, অপবিত্র অবস্থায় কোনো ইবাদত কবুল হয় না যতক্ষণ না পর্যন্ত পবিত্রতা অর্জন করা হয়। 

আর ফরজ গোসল অবহেলা করার শাস্তি অবশ্যই ভয়াবহ। 

পরিশেষে

আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো পবিত্রতা। তাই ফরজ গোসলের নিয়ম সম্পর্কে অবশ্যই সকল মুসলিম নর-নারীর জানা উচিত। নাহলে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করেও কোনো লাভ হবে না। 

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক বিষয়ে আল্লাহর রাসুলের সুন্নত যথাযথ অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

তো বন্ধুরা এই ছিলো আজকে আমাদের লেখা ফরজ গোসলের নিয়ম ও দোয়া, হায়েজ গোসলের নিয়ম ও নারীর ফরজ গোসলের নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা, যদি লেখাটি ভালো লেগে থাকে, বা লেখা সম্পর্কে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে, তাহলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

অনেকের মনে ফরজ গোসল নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তৈরি হতে পারে। নিম্নে এ ধরনের কিছু প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো:

ফরজ গোসলে শরীরের একটি পশম না ভিজলেও গোসল হবে না, এই বক্তব্য কি সহিহ?

না, এমন বক্তব্য শুদ্ধ নয়। ফরজ গোসলের সময় নিশ্চিত হতে হবে যে,আপনি পুরো শরীর ধৌত করেছেন। আর একটি শুকনো পশম তালাশ করা তো অসম্ভব। তাই নিজে সমস্ত শরীরে পানি দিয়ে নিশ্চিত হতে হবে যে শরীরের সমস্ত পশম ভিজেছে।

ফরজ গোসল না করে কি সাহরি করা যাবে?
সব শর্ত মেনে গোসল করার পর নামাজের জন্য কি নতুন করে অজু করতে হবে?

Leave a Reply