সুস্থ থাকতে আমরা কত ধরনের খাবার খেয়ে থাকি। ফলমূল, শাকসবজি ইত্যাদি খাওয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করি। একেক ধরনের ফল আমাদের একেক ধরনের পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে।
এরকমই পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ একটি ফল পেয়ারা। সকলের পরিচিত এই দেশীয় ফলটির রয়েছে অনেক ধরনের পুষ্টিগুণ। সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে এই ফলটিতে। তাই প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ‘সি’ ও লাইকোপেনসমৃদ্ধ ফল পেয়ারা।
পেয়ারার মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ এবং পেয়ারার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কেই আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
এর মাধ্যমে আপনারা পেয়ারায় থাকা পুষ্টি উপাদান এবং এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পেয়ারা:
পেয়ারা একটি সবুজ রঙের বেরী জাতীয় ফল। এটি অন্যান্য রঙেরও হয়ে থাকে। লাল রঙের পেয়ারাও রয়েছে যা লাল আপেল নামে পরিচিত। পেয়ারার মধ্যে ১০০ টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো Psidiun guajava..
বিশেষ করে মধ্য আমেরিকা, মেক্সিকো, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রভৃতি স্থানে পেয়ারা বেশি জন্মে। ১৭শ’ শতাব্দীতে পেয়ারার উৎপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
দেশীয় ফল হিসেবে পেয়ারা অনেক জনপ্রিয়। এটি বর্ষা মৌসুমের ফল হলেও সারাবছর পাওয়া যায় এবং দামেও সস্তা। নানা পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য পেয়ারা ‘সুপার ফ্রুট’ নামে পরিচিত।
প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় রয়েছে:
- ১৮০ মি.গ্রাম ভিটামিন সি
- ০.২১ মি.গ্রা ভিটামিন বি-১
- ০.০৯ মি.গ্রা বি-২
- ১.৪ গ্রাম প্রোটিন
- ১.১ গ্রাম স্নেহ
- ১৫.২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট
- ৫.৪ গ্রাম আঁশ
- ৬৮ ক্যালরি শক্তি
- ৮৬.১০ গ্রাম পানি
- ০.৬ গ্রাম মিনারেল
- ২৮ মি.গ্রাম ফসফরাস
- ২০ মি.গ্রাম ক্যালসিয়াম
- ১.৪ মি.গ্রাম আয়রন
- ৪১৭ মি.গ্রাম পটাশিয়াম
- ৩ মি.গ্রা. সোডিয়াম
- ০.০৩ মি.গ্রাম থায়ামিন
- ০.০৩ মি.গ্রাম রিবোফ্লেভিন
- ১.২ মিলিগ্রাম নিয়াসিন
এছাড়াও পেয়ারার বীজে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ পলি আন-সেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ও ফাইবার বিদ্যমান।
পেয়ারায় অন্যান্য সাইট্রিক ফল যেমন, কমলার চেয়ে ৪ গুণ বেশি ভিটামিন সি আছে।
তাই নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পেয়ারার উপকারিতা অনেক।
পেয়ারার উপকারিতা সমূহঃ
প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল থাকে যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে বা যেকোনো ধরনের রোগের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।
অনেকেই সহজলভ্য বলে পেয়ারাকে অবহেলা করে থাকেন, খেতে চান না। কিন্তু পেয়ারার উপকারিতা সম্পর্কে জানলে পেয়ারাকে আর কখনোই উপেক্ষা করতে পারবেন না। আসুন জেনে নেই পেয়ারার উপকারিতা সম্পর্কে–
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
পেয়ারাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ক্যারটিনয়েড, পলিফেনল, লিউকোসায়ানিডিন ও অ্যামরিটোসাইড নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এর মাধ্যমে দেহে সহজে কোনো রোগ জীবাণুর আক্রমণ ঘটে না।
এটি শরীরের ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে দেহকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। দেহের কোথাও কেটে গেলে ক্ষতস্থান শুকানোর জন্যও এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কার্যকর ভূমিকা রাখে।
২. হৃদপিন্ড সুস্থ রাখে:
পেয়ারাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখে। পাকা পেয়ারা খেলে রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড ও খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। এক
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্ত চাপ ও রক্তের লিপিড কমে আসে। এছাড়াও তা কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকিও কমিয়ে আনে। এভাবে পেয়ারা হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
হৃদপিন্ড, হার্ট বা বুকের ব্যথা নিয়ে আমাদের বিস্তারিত লেখাটি পড়তে পারেন এখানে: বুকের বাম পাশে ব্যথা: বুকের বাম পাশে ব্যথা হলে করনীয়
৩. ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে:
পেয়ারাতে রয়েছে ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উপাদান। ১৯৮৩ সালে American Journal of Chinese Medicine প্রকাশ করে, পেয়ারার রসে থাকা উপাদান ডায়াবেটিস মেলাইটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর।
এছাড়াও এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে। পেয়ারার এই গুণ রক্তে সুগারের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পেয়ারাপাতাও বেশ কার্যকরী। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পেয়ারা খুবই উপকারী একটি ফল।
৫. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক:
পেয়ারাতে থাকা উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন– লাইকোপেন, ভিটামিন সি ও কোয়ারসেটিন এর মত অনেকগুলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি রোধ করে। এভাবে পেয়ারা প্রোসটেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
৬. ওজন কমাতে সাহায্য করে:
পেয়ারায় থাকে প্রোটিন এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা পরিপাক হতে অনেক সময় লাগে, ফলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে এবং সহজে ক্ষুধাও লাগে না। এছাড়া পেটের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলতেও সাহায্য করে পেয়ারা। তাই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবছেন তারা নিয়মিত খাদ্যতালিকায় পেয়ারা রাখতে পারেন।
৭. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:
ফাইবার বা আঁশের গুরুত্বপূর্ণ উৎস পেয়ারা। পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়া শক্তিশালী করে ও পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
ফাইবার হজমে সাহায্য করে এবং অন্ত্র থেকে খুব সহজে বেরিয়ে যেতে পারে। এর মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হয়।
৮. চোখ ও ত্বকের জন্য উপকারী:
পেয়ারার পুষ্টিগুণ চোখ ও ত্বকের জন্য সমানভাবে উপকারী। আমরা সবাই জানি ভিটামিন-এ চোখের জন্য কতটা উপকারী। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকায় এটি চোখে ছানি পরা থেকে রক্ষা করে এবং চোখের পেশী ও স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
খাদ্যতালিকায় নিয়মিত পেয়ারা থাকলে ত্বক আরো উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে। কারণ এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে পানি যা ত্বকের রুক্ষতা দূর করে।
৯. পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে
অবিবাহিত কিংবা বিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে পিরিয়ডের ব্যথা খুবই স্বাভাবিক, তবে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে পেয়ারার পাথা বাজারে প্রচলিত পেইন কিলারের চাইতেও বেশি কার্যকারী।
গবেষকরা ১৯৭ জন মেয়েকে পিরিয়ডের ব্যথার সময় ৬ মিঃগ্রঃ পেয়ারর পাতা খেতে পরামর্শ দেন, সেসব মেয়েদের তথ্য অনুযায়ী পেয়ারা তাৎক্ষণিকভাবে মাসিকের সময় তলপেটের ব্যথা কমাতে সক্ষম।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় নিয়ে আমাদের একটি বিস্তারিত লেখা আছে, আগ্রহীরা পড়ে দেখতে পারেন।
এছাড়াও পেয়ারায় থাকা লাইকোপেন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে ত্বককে বাঁচাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি বৃদ্ধির পাশাপাশি পেয়ারা ত্বকের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।
পেয়ারার অপকারিতা সমূহঃ
পেয়ারার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে পেয়ারা খেলে হতে পারে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা, দেখা দিতে পারে অসুস্থতা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পেয়ারা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তবে যখন অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া হয়ে যায় তখন তা ক্ষতিকারক হয়ে যায়। আবার পেয়ারাতে উপস্থিত কিছু উপাদান কয়েকটি রোগের জন্য অনেক সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই পেয়ারার অপকারিতাও রয়েছে।
পেয়ারার উপকারিতার পাশাপাশি এর কিছু অপকারিতা সর্ম্পকেও জেনে নেয়া জরুরী।
আসুন জেনে নেই পেয়ারার অপকারিতা সম্পর্কে –
১. সর্দি-কাশির সমস্যা বাড়িয়ে দেয়:
পেয়ারা খুব ঠান্ডা একটি ফল তাই এটি বেশি খাওয়ার কারণে সর্দি-কাশি বাড়তে পারে। একারণে যাদের প্রায়ই সর্দি কাশির সমস্যা হয়ে থাকে তাদের পেয়ারা খাওয়া এড়ানো উচিত।
রিলেটেডঃ সার্দি কেনো হয়? জেনে নিন সর্দি থেকে মুক্তির উপায়
২. পেটে সমস্যা হতে পারে:
খালি পেটে পেয়ারা খেলে পেটে অতিরিক্ত গ্যাস হতে পারে। যাদের আগে থেকেই গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের পেয়ারা খেলে আরো সমস্যা বাড়তে পারে। আর পেয়ার ভিতরের অংশে অনেক বীজ থাকে যা আমাদের পেটে কখনোই ঠিক মতো হজম হয়না।
তাই অধিক পেয়ারা খেলে পেটে ব্যথা,পেট ফাঁপা, হজমে সমস্যা, ডায়রিয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. একজিমার ঝুঁকি বাড়তে পারে:
পেয়ারা পাতার নির্যাস হতে একজিমা হতে পারে। তাই যাদের একজিমার সমস্যা রয়েছে তাদের পেয়ারা অথবা এর পাতার নির্যাস ব্যবহার না করাই ভালো।
৪. গর্ভবতী মহিলাদের সমস্যা সৃষ্টি করে:
গর্ভবতী এবং দুগ্ধদানকারী মহিলারা পেয়ারা বেশি পরিমাণে খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। পেয়ারাতে থাকা ফাইবার বেশি পরিমাণে শরীরে জমা হয়ে গেলে তা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৫. এলার্জি হতে পারে:
বিভিন্ন মানুষের ফলে বা সবজিতে অ্যালার্জি থাকে, তাই অনেকের পেয়ারা খেলেও অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে এলার্জির সমস্যা থাকলে পেয়ারা না খাওয়াই ভালো।
পেয়ারা খাওয়ার নিয়ম:
পেয়ারা বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। কাঁচা অথবা পাকা পেয়ারা ধুয়ে সরাসরি খাওয়া যায়। যারা এভাবে খেতে পারেন না তারা জুস বানিয়েও খেতে পারেন।
আবার আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষ কাঁচা পেয়ারা কেটে কাসুন্দি,লবণ ও মরিচ গুঁড়া মিশিয়ে এর ভর্তা বানিয়ে খেতে পছন্দ করেন।
অনেকে পেয়ারার আচার ও ফ্রুট সালাদ তৈরি করে খেয়ে থাকেন। এছাড়া বাজারে পেয়ারার জ্যাম বা জেলি কিনতে পাওয়া যায়। তবে এর থেকে কাঁচা পেয়ারা খেলেই বেশি উপকার পাওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দুপুরের খাবার ও রাতের খাবার খাওয়ার মাঝামাঝি সময়ে পেয়ারা খেলে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়। সকালে খালি পেটেও পেয়ারা খাওয়া যায়।
পেয়ারার উপকারিতা পেতে এভাবে প্রতিদিন বা সপ্তাহের কয়েকদিন খাদ্যতালিকায় পেয়ারা রাখতে পারেন।
উক্ত নিয়মে পেয়ারা খেলে আপনি পেয়ারার সঠিক পুষ্টিগুণ পাবেন।
পেয়ারা পাতার ব্যবহার:
সুস্বাদু ফল পেয়ারার গুণাগুণের শেষ নেই। পেয়ারা যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের উপকার করে থাকে, তেমনি এর পাতাও সমানভাবে উপকারী।
পেয়ারা পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য। এর পাশাপাশি এতে ফ্ল্যাভোনয়েড,পলিফেনল এবং ক্যারোটিনয়েড রয়েছে যা হজমের সমস্যা দূর করতে সহায়ক। এ
ই পাতায় থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য পেটের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে সহায়তা করে।
এজন্য দেড় কেজি পানিতে ৬ থেকে ৭ টি পেয়ারা পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিনে ৩ বার পান করতে হবে। এর মাধ্যমে শরীর থেকে টক্সিন পদার্থ দূর হয়ে যাবে।
পেয়ারা পাতায় অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য থাকে যা ত্বক টানটান রাখে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে। তাই পেয়ারা পাতা খেলে ত্বক অনেকদিন তরুণ থাকে ও সহজে বয়সের ছাপ পড়ে না।
পেয়ারা পাতা রক্তে গ্লুকোজের শোষণকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই পেয়ারা পাতার চা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খেলে তা দাঁতের জন্যও উপকারী। এটি দাঁত ব্যথা ও মুখের কোনো ক্ষত বা ফোস্কা নিরাময় করে।
পেয়ারা পাতায় থাকে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ত্বকের ব্রণ দূর করতেও সহায়ক। এজন্য পানিতে পেয়ারা পাতা ফুটিয়ে সেই পানি ঠান্ডা করে সেটা দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এতে মুখের ব্রণ ও কালো দাগ দূর হবে।
এভাবে পেয়ারার পাশাপাশি পেয়ারার পাতাও আমাদের জন্য উপকারী ভূমিকা রাখে।
পরিশেষে বলা যায়,
উক্ত আর্টিকেলের মধ্যে আমরা পেয়ারার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেছি। সেই সাথে এখানে পেয়ারা পাতার ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে।
পেয়ারার অপকারিতা অপেক্ষা এর উপকারিতাই অনেকাংশে বেশি।
তাই যদি সঠিক নিয়মে ও সঠিক সময়ে পেয়ারা খাওয়া যায় তাহলে পেয়ারার উপকারিতা পাওয়া সম্ভব হবে। সেই সাথে পেয়ারার অপকারিতা থেকে বাঁচতে অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
পেয়ারা পাতাও কি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী?
পেয়ারার পাতায় ইমিউনোমোডুলেশন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীরকে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি বাড়ায় এবং অনেক মৌসুমি রোগ থেকে রক্ষা করে।
পাকা পেয়ারা নাকি কাঁচা পেয়ারা,কোনটা বেশি পুষ্টিকর?
বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা এবং পাকা পেয়ারা উভয়ই পুষ্টিকর। তবে বয়স্কদের জন্য কাঁচা পেয়ারা হজম করতে সমস্যা হতে পারে। অন্যদিকে পাকা পেয়ারা খেলে সহজেই তা হজম হয়ে যায়।
দিনে কয়টি পেয়ারা খাওয়া যায়?
দিনে একটি পেয়ারা খাওয়া ভালো। তবে দিনে দুটির বেশি পেয়ারা খেলে পেটে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রাতে পেয়ারা খেলে কি হয়?
সন্ধ্যায় ও রাতে পেয়ারা খেলে তা সঠিকভাবে হজম হতে পারে না। এতে পেটে ব্যথা হতে পারে। আবার সর্দি কাশি হওয়ার আশংকাও থাকে। তাই সন্ধ্যা বা রাতে পেয়ারা না খাওয়াই ভালো।
সকালে খালি পেটে পেয়ারা খেলে কি হয়?
পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ। এজন্য সকালে খালি পেটে পেয়ারা খেলে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত ক্ষুধা লাগে না। এভাবে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে।
শীতকালে কি পেয়ারা খাওয়া উচিত?
হ্যাঁ, শীতকালে পেয়ারা খাওয়া যাবে। শীতকালে পেয়ারা খেলে হজম প্রক্রিয়া ঠিক থাকে এবং এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন-সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।