Skip to content

মিল্ক শেক এর উপকারিতা, পুষ্টিগুণ, খাওয়ার নিয়ম | ২০২৪

মিল্ক শেক এর উপকারিতা

স্বাদে আহামরি নয়! তবে স্বাস্থ্যসম্মত পানীয় হিসাবে মিল্ক শেকের যেনো জুড়ি মেলা ভার। ডায়েট করার ক্ষেত্রে কিংবা মুখে বাড়তি রুচি আনতে যেকেউই পান করতে পারে এই স্বাস্থ্যসম্মত পানীয়টি। 

মিল্ক শেকের ক্ষেত্রে আবার আলাদা আলাদা ফ্লেভারেরও ব্যবস্থা আছে। ক্লাসিক মিল্কশেকের স্বাদের মধ্যে রয়েছে ভ্যানিলা, চকলেট এবং স্ট্রবেরি ফ্লেভারের মিল্ক শেক। 

একটি বড় গ্লাসে করে মিল্ক শেক বরফকুচি দিয়ে পরিবেশন করতে পারলে ডাইনিংটুকু হয়ে উঠে বেশ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার এবং পানীয়তে ভারপুর টেবিল। 

আজকের এই কোমল এবং অস্বাস্থ্যকর পানীয় পান করার যুগে এসে আপনি যদি নিজেকে ফিট রাখতে চান এবং ঔষধের পেছনে অনেক বেশি খরচ করতে না চান তবে নিয়মিত মিল্ক শেক খেতে পারেন৷ 

আসুন। আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক মিল্ক শেক এর পরিচিতি, মিল্ক শেক এর উপকারিতা, অপকারিতা এবং মিল্ক শেক তৈরির নিযম সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য। 

মিল্ক শেক কি?

যারা ডায়েট কন্ট্রোলসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য-সচেতন তথ্য সম্পর্কে কিছুটা হলেও অবগত তারা জানেন মিল্ক শেক মূলত একটি পানীয়ের নাম। যা একসাথে বিভাব তরল উপকরণের সাহায্যে তৈরি করা হয়ে থাকে। 

সাধারণত বিভিন্ন ফ্লেভারের মিল্ক শেক বানানো যায় বা বিভিন্ন দোকানে রেডিমেড পাওয়া যায়। তবে বানানোর দিক দিয়ে ফলের মিল্কশেক তৈরি করা অনেক বেশি সহজ এবং এতে একসাথে বিভিন্ন ফ্লেভার উপভোগ করার সুযোগ থাকে। 

মিল্ক শেক এর উপকারিতাসহ বিস্তারিত তথ্য জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। 

মিল্ক শেক এর পুষ্টিগুণগুলি কি কি? 

মিল্ক শেকে যেহেতু একসাথে অনেক উপকরণ ব্যবহার করা হয়, সেহেতু এর পুষ্টিমান অনেকাংশে বেড়ে যায়। তবে মিল্ক শেকের পুষ্টিমান নির্ভর করবে আপনি এতে ঠিক কোন কোন উপকরণ ব্যবহার করছেন তার উপর। চলুন প্রতি ১০০ গ্রাম মিল্ক শেকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করা যাক: 

নাম্বারউপাদানপরিমাণ
ক্যালোরি১১১.৯ গ্রাম
ফ্যাট১.৯ গ্রাম
কোলেস্টেরল১২ মিঃগ্রামঃ
সোডিয়াম৯৫ মিঃগ্রাঃ
পটাশিয়াম১৮৩ মিঃগ্রাঃ
শর্করা১৮ গ্রাম
সুগার১৮ গ্রাম
প্রোটিন৩.৯ গ্রাম
ক্যালসিয়াম১৪%
১০ভিটামিন ডি১২%
১১ম্যাগনেসিয়াম৩%
মিল্ক শেক এর পুষ্টিগুণগু

মিল্ক শেক এর উপকারিতা ও অপকারিতা

মুদ্রার এপিটওপিট যেমন আছে, ঠিক তেমনই যেকোনো খাবার বা পানীয় উপকারিতা এবং অপকারিতা দু’টোই রয়েছে। চলুন এবারে স্বাস্থ্য সচেতনার অংশ হিসাবে জেনে নেওয়া যাক মিল্ক শেক এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। যা একেবারে না জানলেই নয়। 

মিল্ক শেক এর উপকারিতা:

প্রতিদিন ১ গ্লাস দুধ পান করা, নিয়মিত যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করা ইত্যাদি হলো সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। আর এই কৌশলটাকে আরেকটু পাকাপোক্ত করে তুলতে প্রয়োজন নতুন কোনো পানীয়ের সংযোজন। 

এক্ষেত্রে মিল্ক শেককে ধরে নেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে চলুন জেনে নেওয়া যাক মিল্ক শেক এর উপকারিতাগুলি কি কি সে-সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য: 

মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে

মিল্ক শেক এর উপকারিতার মাঝে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো এটি মস্তিষ্ক ঠিক রাখতে সাহায্য করে৷ এক্ষেত্রে বিভিন্ন ফ্রুট মিল্ক মেক খেতে পারেন। কারণ ফলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্ককে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

যৌন শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে

দুধে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন থাকে, তার সাথে কলা, খেজুর, কিংবা তরমুজের মিল্কশেক নিয়মিত খেলে এটি পুরুষ ও নারী উভয়ের যৌন শক্তি বাড়াতে কাজ করে। যৌন শক্তি বাড়াতে এই মিল্কশেকের সাথে প্রতিবার কিছু কাচা রসুনের কোয়া যোগ করে নিতে হবে। এতে পুরুষের লিঙ্গ উথান সমস্যাও সমাধান হবে।

মিল্ক শেক
মিল্ক শেক (Photo by Canva)

হৃদপিণ্ডের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে

স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, কমলা এবং পেঁপে, দুধ ইত্যাদি খাবার কিন্তু হার্টের জন্যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কারণ এতে রয়েছে কম ফ্যাটিযুক্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আর এসব খাবার একসাথে খেতে চাইলে ফ্রুট মিস্ক মিল্ক শেক বানানো যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে ফল ও শাকসবজির মতো পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাবার বেছে নিতে হবে। 

ওজন কমাতে সাহায্য করে

যেকোনো ধরণের মিল্ক শেকই আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। তবে তার পূর্বে নিশ্চিত করতে হবে আপনি মিল্ক শেকে কোনো উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত উপাদান যোগ করেছেন কিনা। 

এক্ষেত্রে ওজন কমানোর জন্যে মিল্ক শেক হিসাবে ফ্রুট মিল্ক শেক বেছে নিলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। কারণ ফলে থাকা ফলের উচ্চ ফাইবার এবং কম-ক্যালোরির বিষয়টি ওজন কমানোর ক্ষেত্রে রীতিমতো ম্যাজিকের মতো কাজ করে থাকে। শুধু দেহের বাড়তি ওজনই নয়! বরং এই মিল্ক শেক পেটের বাড়তি মেদ দূর করতেও সাহায্য করবে। 

পুষ্টি উপাদানের ভালো উৎস 

মিল্ক শেকে থাকা গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ বিশেষ করে বিভিন্ন ধরণের ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা আপনাকে হজম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে এবং পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে এতে থাকা উচ্চ পটাসিয়াম আপনাকে দেহের রক্তচাপের মাত্রা সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করবে। 

এছাড়াও যেকোনো ফ্লেভারের মিল্ক শেক ভিটামিন B6 এর ভালো উৎস হিসাবে কাজ করে থাকে। যা দেহে শক্তি উৎপাদন এবং ইমিউন সিস্টেমকে সুস্থ রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও নতুন রক্ত ​​কণিকা গঠনের জন্যও ভিটামিন বি৬ বেশ গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান হিসাবে কাজ করে থাকে। 

এছাড়াও মিল্ক শেক ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস হিসাবেও কাজ করে থাকে। যা মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং পেশীর বিভিন্ন রোগ সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্যে হলেও আপনি নিয়মিত মিল্ক শেক পান করতে পারেন। 

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে

বলে রাখা ভালো মিল্কশেককে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস বলা হয়ে থাকে। যা শরীরকে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে থাকে। শুধু তাই নয়, এমনকি ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে থাকে এই মিল্ক শেক। 

কার্বোহাইড্রেটের অভাব দূর হয়

মিল্ক শেক তৈরিতে প্রয়োজন পরিমিত পরিমাণের চিনি। যা কার্বোহাইড্রেটের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। মনে রাখবেন, পরিমিত পরিমাণে চিনি দেহের জন্যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। কারণ এই চিনি মস্তিষ্ককে সঠিকভাবে কাজ করার জন্য তাৎক্ষণিক শক্তি প্রদান করে থাকে। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এমন মিল্ক শেক তৈরি করতে হলে আপনাকে বিভিন্ন ফল যোগ করতে হবে এই শেকে। বিশেষ করে ভিটামিন সি জাতীয় ফল যোগ করাটা জরুরি। কারণ ভিটামিন সি রয়েছে এমন ফল আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয় এবং আমাদের সারা বছই সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।

মিল্ক শেক এর অপকারিতা:

মিল্ক শেক এর উপককারিতা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য তো জানলেন। এবারে চলুন এমনকিছু কারণ সম্পর্কে আলোচনা করা যাক যেসব কারণের পরিপ্রেক্ষিতে সকলেরই উচিত পরিমিত পরিমাণে মিল্ক শেক পান করা। 

রক্তকে অস্বাস্থ্যকর করে তোলে 

মনে রাখবেন, অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত মিল্ক শেক পান করলে আপনার রক্তনালী এবং আপনার লোহিত রক্তকণিকার অস্বাস্থ্যকর পরিবর্তন ঘটে। সুতরাং সবসময় কম চিনিযুক্ত এবং অতিরিক্ত ফ্যাট আছে এমন উপকরণ পরিমাণে কম ব্যবহার করে তবেই মিল্ক শেক তৈরি করতে হবে। 

তাছাড়া মানবদেহে রক্ত বেশ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যা ক্ষতিগ্রস্ত হলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পাশাপাশি মিল্ক শেক তৈরি করার সময় হুইপড ক্রিম এবং আইসক্রিম দিয়ে তৈরি যেকোনো ক্রিম ব্যবহার না করাই বুদ্ধিমানের কাজ। 

ওজন বাড়িয়ে ফেলে 

যারা অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত উপকরণ বাছাই করে মিল্ক শেক তৈরি করবেন ভাবছেন তাদের জানিয়ে রাখা ভালো এই অতিরিক্ত ক্যালোরির মিল্ক শেক আপনার ওজন বাড়িয়ে ফেলবে। এক্ষেত্রে সমাধান হিসাবে শেকে অতিরিক্ত চিনি, চকোলেট, বা ক্রিম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে পারেন। 

বেশি ওজন
বেশি ওজন (Photo by canva)

ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষতি করে

যেকোনো মিল্ক শেক তৈরি করার সময় আমরা কম-বেশি চিনি যোগ করেই থাকি। তবে এই চিনির পরিমাণ যদি মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যায় তবে ডায়াবেটিস রোগীরা মারাত্বক ক্ষতির মুখে পড়বেন। কারণ বাড়তি চিনি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দিবে। যা রোগীকে সরাসরি মৃত্যুর দিকে পর্যন্ত ঠেলে নিয়ে যেতে পারে।

বাড়তি কৃত্রিমতা থাকে

সাধারণত অনেকেই মিল্ক শেক তৈরি করার সময় বিভিন্ন কৃত্রিম ফ্লেভার যোগ করে থাকে। যা স্বাস্থ্যের জন্যে খুব একটা ভালো নয়। আবার অনেক সময় বিভিন্ন ফলকে ব্লেন্ড করে শেকে ব্যবহার করা হয় বলে এর পুষ্টিমানেরও অস্বাভাবিক তারতম্য ঘটে। 

যার ফলে কোনো ফলে সঠিক পুষ্টির পরিমাণটুকু মানবদেহে সঠিকভাবে জুটে না। এদিক দিয়ে মিল্ক শেকের গুরুত্ব কিছুটা কমে যায়। 

ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে

আপনি যদি নিয়ম না মেনে আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে মিল্ক শেক খান তবে আপনার ক্ষেত্রে ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে। কারণ এতে ব্যবহার করা দুধ অতিরিক্ত পরিমাণে পান করলে হজমে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। 

মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়মগুলি কি কি? 

মিল্ক শেককে আসলে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে বিভিন্ন স্বাদের পানীয় হিসাবে তৈরি করা যায়। চলুন বেশকিছু সহজ এবং ঘরেই বানানো যায় এমন মিল্ক শেক রেসিপি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক: 

স্ট্রবেরি মিল্ক শেক

আজকাল বাংলাদেশে সাধারণ ফলের মতোই স্ট্রবেরি সহজলভ্য হয়ে গেছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই সহজলভ্য ফলের সাহায্যে কিভাবে ঘরে বসেই তৈরি করে ফেলা যাকে স্ট্রবেরি মিল্ক শেক।

  • ৩ কাপ দুধ নিন
  • ১ কাপ ভ্যানিলা ফ্লেভারের আইসক্রিম নিন
  • ২ কাপ স্ট্রবেরি কিউপ করে নিন
  • ১ টেবিল চামচ পরিমাণে স্ট্রবেরি ফ্লেভার দিন

এবার সব উপকরণ একসাথে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে পরিবেশন করুন। ব্যাস! হয়ে গেলো স্বাদে অন্যন্য এবং পুষ্টিমানসম্পন্ন সেরা স্ট্রবেরি মিল্ক শেক। চাইলে এটি আপনি প্রতদিনি সকালে পান করতে পারেন। আর হ্যাঁ! ইচ্ছে করলে খাবার পরিবেশনের জন্যে ১/২ টি স্ট্রবেরি কিউপ করে কেটে উপরে ছিটিয়ে দিতে পারেন। যদিও এটি সম্পূর্ন আপনার ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে।

স্ট্রবেরি
স্ট্রবেরি (Photo by Canva)

খেজুরের মিল্ক শেক

বর্তমানে প্রত্যেক রান্নাঘরেই পাওয়া যাবে এই খেজুর। আপনি চাইলে হাতের কাছে থাকা এই স্বাস্থ্যকর ফলটির সাহায্যেও তৈরি করে ফেলতে পারেন মজাদার খেজুরের মিল্ক শেক। চলুন সহজ পদ্ধতিতে এই শেক বানানোর রেসিপিটি এক নজরে দেখে নিই: 

  • দানা ফেলে দিয়ে ৪ কাপ খেজুর নিন
  • ২ চামচ চিনি নিন
  • ৭২০ মিলিগ্রামের মতো ফ্রেশ দুধ নিন
  • ১ কাপ পরিমাণ আইস কিউপ নিন

এবারে একত্রে উপরের সমস্ত উপকরণ ভালোমতো মিশিয়ে ইচ্ছামতো ডিজাইনে পরিবেশন করুন। তাছাড়া আপনি চাইলে এই শেকে চিনির পরিমাণটুকু পরিবর্তন করতে পারেন। কারণ এই শেকে ব্যবহৃত খেজুরে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট পরিমাণে চিনি রয়েছে। সুতরাং চিনি দেওয়ার সময় একইসাথে স্বাদ এবং স্বাস্থ্য সচেতনার বিষয়টি বিবেচনা করবেন। 

চকোলেট মিল্ক শেক

এই চকোলেট মিল্ক শেকটি বাচ্চাদের জন্যে বেশ কাজে দেবে। কারণ তারা সবসময় মুখরোচক খাবারের দিকে অনেক বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে এই মজাদার শেকটিকে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ঘরে বানিয়েই তাদের সামনে পরিবেশন করতে পারেন। এই চকোলেট মিল্ক শেকটি বানাতে যা যা লাগবে: 

  • ক্যারামেল আইসক্রিমের ক্রিম
  • ২ কাপ পরিমাণ সাধারণ দুধ
  • ৩ চা চামচ ভ্যানিলা ফ্লেভার
  • ১ টি কলা
  • ২ চা চামচ যেকোনো লিকুইড চকলেট

এবারে সমস্ত উপকরণ হালকা পানির সাথে ব্লেন্ড করে নিন। এই চকোলেট মিল্ক শেকটির স্বাদ যে একবার উপভোগ করতে পারবে, তার আর কোনো পানীয়ের প্রতিই আকর্ষণ থাকবে না। আর হ্যাঁ! যারা ক্যারামেইল আইসক্রিমের ক্রিম সম্পর্কে জানেন না, তাদের বলে রাখি এই বিশেষ ক্রিম যেকোনো সুপার শপেই পাওয়া যাবে। 

আর যদি না পান তবে আপনি ঘরে বসেই এটি বানিয়ে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে ক্যারামেল তৈরি করে তাতে হুইপড ক্রিম এবং আইসক্রিম জাল করে নামিয়ে নিবেন। পরে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এলে তা ফ্রিজে রেখে মাসের পর মাস সংগ্রহ করা যাবে। 

শেষ কথা

মিল্ক শেক এর উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তো জানলেন। এবারে ভালোমন্দ বিচার করে এই পানীয় পান করার সিদ্ধান্ত আপনার। মনে রাখবেন বিভিন্ন রোগ থেকে প্রতিকার পাওয়ার যুদ্ধ করার চাইতে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এক্ষেত্রে খেতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার এবং পান করতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত পানীয়। 

চকোলেট বা ফলের সাথে দুধ মিশিয়ে তৈরি করা এই মিল্ক শেক নিয়মিত পান করার চেষ্টা করুন পরিমিত পরিমাণে। চাইলে স্বাদ বাড়াতে বিভিন্ন উপায়ও অবলম্বন করতে পারেন। 

যাইহোক! মনে রাখবেন, বিভিন্ন ধরণের মিল্ক শেকের ক্ষেত্রে ফ্রুট মিল্ক শেক বা ফলের সাহায্যে তৈরি করা মিল্ক শেকই সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যসম্মত শেক। সুতরাং ধীরে ধীরে ফ্রুট মিল্ক শেকে অভ্যস্ত হয়ে পড়ার চেষ্টা করুন। 

সুতরাং নিয়ম মেনে বিভিন্ন স্বাদের মিল্ক শেক পান করার চেষ্টা করুন। বাজারের কোমল পানীয়কে আজই না বলুন। অন্ততপক্ষে এসব পানীয় তৈরির বাজে প্রক্রিয়ার জন্যে হলেও আপনার-আমার এসব পানীয় বর্জন করা উচিত। 

যাইহোক! মিল্ক শেক নিয়ে যদি আর কোনো বাড়তি প্রশ্ন থাকে তবে তা সরাসরি কমেন্টবক্সে সেরে ফেলুন। আমরা যত দ্রুত সম্ভব উত্তর প্রদানের চেষ্টা করবো। 

সচরাচর জিজ্ঞাসা

আমি কি প্রতিদিন মিল্ক শেক পান করতে পারবো?

হ্যাঁ! আপনি চাইলে প্রতিদিনই মিল্ক শেক পান করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে মিল্ক শেক পান করতে পারলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যাবে।  

মিল্ক শেক খেলে কি ওজন বেড়ে যাবে?

মিল্ক শেক খেলে ওজন বেড়ে যাবে কিনা এটি নির্ভর করবে শেকটটি কোন কোন উপকরণের সাহায্যে তৈরি হচ্ছে তার উপর। উচ্চ পরিমাণে সুগার বা ক্যালোরি রয়েছে এমন ফল এবং উপকরণের সাহায্য মিল্ক শেক তৈরি করলে তা ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। 

তবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে লো সুগারের উপকরণের সাহায্যে মিল্ক শেক বানিয়ে ২/৩ দিন পরপর পান করতে পারেন। এতে করে ওজন ঠিক থাকবে এবং সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। 

এলার্জির রোগীরা কি মিল্ক শেক খেতে পারবে? 

হ্যাঁ পারবে। তবে মিল্ক শেক তৈরি করার সময় এলার্জির ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলে এমন উপকরণ বাদ দিতে হবে। বিশেষ করে যেসব ফলে এলার্জি রয়েছে সেসব ফল বাদ দিয়ে সাধারণ নিয়মেই মিল্ক শেক তৈরি করে পান করা যাবে। 

ব্যানেনা মিল্ক শেক কি স্বাস্থ্যের জন্যে খারাপ? 

মূলত কলাতে প্রচুর পরিমাণে টনিক এসিড থাকে। এই এসিড অল্প পরিমাণে গ্রহণ করা দেহের জন্যে ভালো। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে এই এসিড গ্রহণ করলে দেহের মারাত্মক ক্ষতি দেখা দিতে পারে। 

যারা ব্যানেনা মিল্ক শেক খেতে চাচ্ছেন তারা শেক তৈরির সময় পরিমিত পরিমাণে কলা ব্যবহার করবেন। পাশাপাশি এই শেক একদিন পরপর পান করার চেষ্টা করবেন। এতে করে আশা করি কোনো স্বাস্থ্যহানি ঘটবে না।

Leave a Reply