Skip to content

সোনার তরী কবিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | ২০২৪

সোনার তরী কবিতা

সোনার তরী কবিতা বাংলা সাহিত্যের এক অনবদ্য সংযোযন, এই কবিতাটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক অনত্যম সৃষ্টি। সোনার তরী কবিতা ১৮৯৪ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়।

সোনার তরী কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত যা সোনার তরী কাব্য সংকলনের মানসী-সোনার তরী পর্বে অন্তর্গত।

সে যাইহোক, আজকের লেখায় আমরা জানবো সোনার তরী কবিতা, এর আবৃত্তি, মূলভাব ও ব্যাখ্যা, তাহলে চলুন দেরী না করে দেখে নেই কবিতাটি।

সোনার তরী কবিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।
কূলে একা বসে’ আছি, নাহি ভরসা।
রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হ’ল সারা,
ভরা নদী ক্ষুরধারা
খর-পরশা।
কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।

একখানি ছোট ক্ষেত আমি একেলা,
চারিদিকে বাঁকা জল করিছে খেলা।
পরপারে দেখি আঁকা
তরুছায়ামসীমাখা
গ্রামখানি মেঘে ঢাকা
প্রভাত বেলা।
এ পারেতে ছোট ক্ষেত আমি একেলা।

গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে!
দেখে’ যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ভরা-পালে চলে যায়,
কোন দিকে নাহি চায়,
ঢেউগুলি নিরুপায়
ভাঙ্গে দু’ধারে,
দেখে’ যেন মনে হয় চিনি উহারে!

ওগো তুমি কোথা যাও কোন্ বিদেশে!
বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে!
যেয়ো যেথা যেতে চাও,
যারে খুসি তারে দাও
শুধু তুমি নিয়ে যাও
ক্ষণিক হেসে
আমার সোনার ধান কূলেতে এসে!

যত চাও তত লও তরণী পরে।
আর আছে?—আর নাই, দিয়েছি ভরে’।
এতকাল নদীকূলে
যাহা লয়ে ছিনু ভুলে’
সকলি দিলাম তুলে
থরে বিথরে
এখন আমারে লহ করুণা করে’!

ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই! ছােট সে তরী
আমারি সােনার ধানে গিয়েছে ভরি।
শ্রাবণ গগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূন্য নদীর তীরে
রহিনু পড়ি’,
যাহা ছিল নিয়ে গেল সােনার তরী।

সোনার তরী কবিতা - ধান
সোনার তরী কবিতা – ধান (Photo by Canva)

সোনার তরী কবিতা আবৃত্তি

যারা সোনার তরী কবিতা আবৃত্তি খোজতেছেন তাদের জন্যে এই সেকশন, নিচের ভিডিওতে সোনার তরী কবিতার একটি চমৎকার আবৃত্তি রয়েছে, আগ্রহীরা দেখে নিতে পারেন।

Sonar Tori Kobita (সোনার তরী) | Bangla Kobita Abritti | Rabindranath Thakur Kobita | Abritti আবৃত্তি

সোনার তরী কবিতার ব্যাখ্যা ও মূলভাব

‘সোনার তরী’ কবিতাটি একটি রূপক কবিতা। এ কবিতায় একটি জীবনদর্শন অন্তলীন হয়ে আছে। কবিতাটি ‘একটি ছোট ধানখেত, তার চারপাশে স্রোতের বিস্তার, সোনার ধান নিয়ে। একা কৃষক, অবলীলায় তরি বেয়ে আসা মাঝি’- এই কয়েকটি চিত্রকল্প এবং এগুলোর অনুষঙ্গে রচিত। 

এই কবিতায় দ্বীপসদৃশ ধানখেতের চারপাশে ক্ষুরধার বর্ষার নদীস্রোত হিংস্র হয়ে খেলা করছে। সেখানে রাশি রাশি সোনার ধান নিয়ে অপেক্ষা করছে এক কৃষক, তার মনে নানা আশঙ্কা। সেখানে ভরা পালে তরি বেয়ে এক মাঝিকে আসতে দেখে কৃষকের মনে আশার সঞ্চার হয়। নিঃসঙ্গ কৃষক আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে, তার মনে হয় মাঝিটি তার চেনা। 

কিন্তু সেই মাঝি নির্বিকারভাবে তার পাশ দিয়ে অজানা দেশের দিকে তরি নিয়ে চলে যেতে থাকে। তখন কৃষক তাকে কাতর অনুনয় করে কূলে তরি ভিড়িয়ে সোনার ধানটুকু নিয়ে যেতে। মাঝি তরি ভিড়িয়ে তাতে সোনার ধান ভরে নিয়ে অজানার পথে চলে যায়। সেই তরিতে ধানের স্থান হলেও কৃষকের স্থান হয় না। আর শূন্য নদীতীরে অপূর্ণতার বেদনা নিয়ে কৃষক একা গুমড়ে মরে। 

এভাবে এ কবিতার রূপকল্পটি পূর্ণতা লাভ করেছে। এখানে মহাকালের চিরন্তন স্রোতে মানুষ যে অনিবার্য বিষয়টি এড়াতে পারে না তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মানুষ থাকে না, টিকে থাকে মানুষের সৃষ্ট সোনার ফসলরূপী উত্তম কর্ম। 

এভাবে কবির সৃষ্টিকর্ম কালের সোনার তরিতে স্থান পেলেও ব্যক্তি কবির স্থান সেখানে হয় না। এক অতৃপ্তির বেদনা নিয়ে তাকে অপেক্ষা করতে হয় অনিবার্যভাবে মহাকালের শূন্যতায় বিলীন হওয়ার জন্য।

রিলেটেডঃ আবার আসিব ফিরে কবিতা – জীবনানন্দ দাশ

সোনার তরী কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত?

সোনার তরী কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত হয়েছে।

রিলেটেডঃ কাজলা দিদি কবিতা- যতীন্দ্রমোহন বাগচী

সোনার তরী কবিতা কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?

সোনার তরী’ কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার তরী’ কাব্যগ্রন্থের নাম কবিতা।

পরিশেষে, তো এই ছিলো বন্ধুরা আজকের সোনার তরী কবিতা নামের লেখাটি, যদি এই লেখা পড়ে ভালো লাগে তাহলে কমেন্ট ক

Leave a Reply