মূলত সজনে গাছে হওয়া পাতা গুলোকেই বলা হয় সজনে পাতা। সজনে গাছে ধরা এই পাতাকে অনেকেই বলে অলৌকিক পাতা। পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্বগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সজনে পাতা। বাংলাদেশে এটিকে অনেকে সাজনা বলে চিনে।
সজনে পাতাকে কিছু কিছু গবেষকরা বলে থাকেন, নিউট্রিসন্স সুপার ফুড এমনকি অনেকেই সজনে গাছকে বলে থাকেন “Miracle Tree”।
এই পাতায় রয়েছে নানা রকম গুণ এবং রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতাও। বলা হয়ে থাকে লেবু থেকে প্রায় সাত গুনেরও বেশি ভিটামিন-সি রয়েছে এই পাতায়।
ডিমের থেকেও প্রায় দুই গুনেরও বেশি প্রোটিন রয়েছে সজনে পাতায় এছাড়াও এতে রয়েছে দুধের চেয়ে ৪ গুন বেশি ক্যলসিয়াম।
তো যাই হোক, আজকে এই লেখাতে আমরা জানবো সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা, সজনে পাতা খাওয়ার নিয়ম, সজনে পাতার গুনাগুন ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত। তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নেই সজনে পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।
সজনে পাতার পুষ্টিগুণ
আগেই বলেছি সজনে পাতা অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ পাতা। নিচে এই পাতার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হলো:-
উপাদান | পরিমাণ |
কি. ক্যাল | ৪৩ |
পানি | ৮৫.২ গ্রাম |
আমিষ | ২.৯ (গ্রাম) |
চর্বি | ০.২ (গ্রাম) |
শর্করা | ৫.১ (গ্রাম) |
খাদ্য আঁশ | ৪.৮ (গ্রাম) |
ক্যালসিয়াম | ২৪ (মি. গ্রাম) |
আয়রন | ০.২ (মি. গ্রাম) |
জিংক | ০.১৬ (মি. গ্রাম) |
ভিটা-এ | ২৬ (মি. গ্রাম) |
ভিটা-বি১ | ০.০৪ (মি. গ্রাম) |
ভিটা-বি২ | ০.০৪ (মি. গ্রাম) |
ভিটামিন-সি | ৬৯.৯ (মি. গ্রাম) |
সজনে পাতার উপকারিতা
অত্যন্ত স্বাস্থ্যগুন সম্পন্ন এই সজনে পাতার কয়েকটি বিশেষ উপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসি :-
ভিটামিনের ভালো উৎস
ধারণা করা হয় প্রতি গ্রাম সজনে পাতার মধ্যে একটি কমলা লেবুর চেয়েও সাত গুণের বেশি ভিটামিন C, দুধের তুলনায় প্রায়চার গুণের বেশি ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন রয়েছে দুই গুণের বেশি।
এছাড়াও এখানে গাজর এর থেকে প্রায় চার গুণ বেশি Vitamin A, কলার তুলনায় প্রায় তিন গুণের বেশি পটাশিয়ামও বিদ্যমান আছে এই পাতায়। যার ফলে রক্তস্বল্পতা, অন্ধত্ব সহ নানা রকমের ভিটামিনের ঘাটতি জনিত রোগ প্রতিরোধের একটি বিশেষ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেন।
এ পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক,এমনকি পালঙ্ক শাকের চেয়ে প্রায় তিন গুণের বেশি আয়রণ রয়েছে সজনে পাতায় যেটি এ্যানেমিয়া নামক রোগ দূরীকরণের একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কোলেস্টেরল ও সুগার নিয়ন্ত্রণ করে
মানব শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও অন্যতম ভুমিকা পালন করে এই পাতা। শুধু কোলেস্টেরলই নয় এটি আমাদের শরীরের সুগারের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন যার ফলে ডায়াবেটিসের মত কঠিন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে এই পাতাটি।
হজমে সাহায্য করে
শরীরের হজমের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অনেক অবদান রাখে সজনে পাতা, এছাড়াও পুষ্টিবর্ধক হিসেবেও কাজ করে এই পাতা। মানব দেহের প্রায় শতকরা ২০% প্রোটিনের গাঠনিক একক হচ্ছে এমাইনো এসিড। এমাইনো এসিড আমাদের শরীরের নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ মেটাবোলিজম এবং অন্যান্য শারীরবৃত্ত্বীয় কাজ সুষ্ঠ ও পরিপূর্ণ ভাবে সম্পাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
মানব শরীরে যে ৯ রকম এমাইনো এসিড খাদ্যের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হয় সেগুলোর প্রায় সবগুলোই এই পাতার মধ্যে উপস্থিত রয়েছে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
নিয়মিত দৈনিক সজনে পাতা সেবন আমাদের শরীরের ডিফেন্স মেকানিজমকে আরো বেশি শক্তিশালী করে তুলবে। এটি ‘ইমিউনিটি স্টিমুল্যান্ট’ হওয়ার কারনো ‘এইডস’ রোগে আক্রান্ত রোগীর জন্যও উপকারী। ব্যায়ামের পাশাপাশি সজনে পাতাও মানুষের শরীরের ওজন কমাতে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে।
কিডনি ও যকৃতকে সুস্থ রখে
এটির মধ্যে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে । যেটি কিডনী এবং যকৃতকে সুস্থ্য রাখে। তাছাড়াও রূপের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে এই পাতাটি।
প্রায় ৪৬ রকমের এবং ৯০টিরও বেশি এন্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান সজনে পাতায়এটিতে এন্টি-ইনফ্ল্যামমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে প্রায় ৩৬ টির মতো। তা ছাড়াও অকাল বার্ধক্যজনিত যেকঁন সমস্যা দূর করে এবং এই পাতা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ভুমিকা রাখে
দিনে ৪ থেকে ৬ চামচ সজনে পাতা গুঁড়া অত্যন্ত উপকারী উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য । এর ফলে নিয়ন্ত্রণে আসে রক্তচাপ এবং হঠাৎ রক্তচাপের অস্বাভাবিক ওঠানামা কম হয়। তাই ধারণা করা হয় নিয়মিত যদি সজনে পাতার গুঁড়া খাওয়া হয় তাহলে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ পরিহার করতে পারবে।
খাবারের রুচি বাড়ায়
অনেক দিন যাবত নানা রোগে আক্রান্ত বা অন্যান্য নানা কারণে যাদের খাবার প্রতি একটি অনীহা অথবা অনিচ্ছা জন্ম নেয় তাদের জন্য সজনে পাতা একটি কার্যকরী সমাধান হতে পারে। খাবারের অরুচি কমিয়ে এনে স্বাভাবিক রুচি ফেরত আনতে সজনে পাতা বেশ ভালোভাবে সাহায্য করে।
আয়রনের ভালো উৎস
প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় সজনে পাতা আমাদের রক্তের লোহিত কণিকার একটি অন্যতম উপাদান। এজন্য নিয়মিত সজনে পাতা খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দূর হতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।
রিলেটেডঃ আয়রন সমৃদ্ধ খাবার, সবজি ও ফল ২০২৩
ত্বকে বয়সের ছাপ ও ক্ষত সারাতে ভূমিকা রাখে
সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় এটি ত্বকে বয়সের ছাপ দ্রুত পড়তে দেয় না এবং যে কোনো প্রদাহে দ্রুত সাড়া দেয়। যার জন্য ক্ষত সারানো বা প্রদাহ দমনে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে এই সজনে পাতা।
হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে
আগেই বলেছি সজনে পাতা ব্লাড সুগার ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে। ব্লাড সুগার ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হার্টে রক্তের চাপ ও প্রবাহকে স্বাভাবিক রাখতে ভুমিকা রাখে সজনে পাতা। তাই এই সজনে পাতার অন্যতম আরেকটি গুণ হলো এটি মানব হার্টকে দীর্ঘ বয়স পর্যন্ত সুস্থ রাখে।
বর্তমানের মিল প্ল্যানার এবং ডায়েটিশিয়ানদের কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হয়ে উঠেছে সজনে পাতা। কারণ এই সজনে পাতায় থাকা উপাদান গুলো মেটাবলিজমে অনেক সাহায্য করাই আমাদের পেটে খাবার হজম হয় অনেক দ্রুত।
অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রেও কোনো জুড়ি নেই এই পাতার গুঁড়ার! তাই ডারা ডায়েটিশিয়ান আছে তারা সবসময় পরামর্শ দেন প্রতিদিন সকালে অন্তত ২ চা চামচ সজনে পাতার গুড়ো অথবা রসের সাথে লেবুর রস এবং মধু এক চা চামচ মিশিয়ে খেতে।
এর ফলে সারা দিনের খাবার গুলো হজম হবে আরো দ্রুত এবং অনেক বেশি পরিমাণ চর্বি জমা হতে পারে না শরীরে। সজনে পাতায় হেলথ বেনিফিটস অর্থাৎ স্বাস্থ্য গুণের কথা সত্যিকার অর্থেই অনন্য এবং তালিকার দিক দিয়েও দীর্ঘ।
প্রধানত গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলোতে সুবিধা হলো এ জায়গা গুলোতে সারা বছরই থাকে সজনে গাছ এবং ফলনও দেয় ভারো। যার জন্য যে কোন সময় সতেজ পাতা দিয়েই কাজ করা সম্ভব। কিন্তু শীতপ্রধান দেশগুলোর মতো সুপারশপ থেকে অতিরিক্ত দামে সজনে গুড়ো কিনে খাওয়ার ঝামেলা তেমন নেই।
যেহেতু আপনার ঘরের পাশেই এত উপকারী একটি গাছের চাষ করা সম্ভব হচ্ছে এবং প্রক্রিয়া করাও খুব বেশি কঠিন নয়। তাই আমাদের সকলের উচিত সুযোগ থাকলে বাসার আশেপাশে সজনে গাছ লাগানো এবং যথাযথ ব্যবহার করা এ পাতার।
সজনে পাতার অপকারিতা
অনেক উপকারিতা থাকার পরও সাজনা পাতার অপকারিতা রয়েছে অনেক। আমাদের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা গুলো সম্পর্কেও অবগত থাকতে হবে। চলুন জেনে আসি সাজনা পাতার অপকারিতা গুলো:-
১. পেটের বিভিন্ন সমস্যা
সাজনে পাতা খেলে আমাদের পেটের বিভিন্ন সমস্যা হওয়ার একটি সম্ভাবনা থাকে। সাজনে পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে Minerals, Vitamins, ও Antioxidant। মাত্রাধিক পরিমাণে সাজনে পাতার গুড়ো গ্রহনের ফলে দেখা দিতে পারে ক্ষুধামন্দা।
এই ক্ষুধামন্দার কারনেই আমাদের খাওয়ায় অরুচি এবং শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে পেটে সাথে ডায়রিয়াও হয়ে পারে।
২. ব্লাড প্রেসারের সমস্যা
যেসব মানুষের ব্লাড প্রেসারের সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে সাজনে পাতা ক্ষেত্রবিশেষে অনুপযোগী। এটি গ্রহনের ফলে মানব শরীরের ব্লাড প্রেসার মাত্রা কমে যায়।
হাই ব্লাড প্রেসার থাকা রোগীর জন্য এটি উপকারি হলেও যদি আপনি ব্লাড প্রেসার কমানোর জন্য কোন প্রকার ঔষধ সেবন কর থাকেন তাহলে এটি না গ্রহণ করাই উচিত।
কারন এই সাজনা পাতা দেহের ব্লাড প্রেসার লেভেল কমিয়ে দিবে সেক্ষেত্রে এটি তখন খাওয়া মারাত্মক ক্ষতিত কারণ হতে পারে।
৩. শিশু ও গর্ভবতীদের সমস্যা
সাজনে পাতা গর্ভবতী মহিলাদের ও শিশু না খাওয়ানোই অধিক উত্তম। কারন এদের ক্ষেত্রে সাজনে পাতার অপকারিতা ভালোভাবে লক্ষ্য করা যায়। সজনে পাতায় বেশ কিছু প্ল্যান্ট কেমিক্যাল এর উপস্থিতি রয়েছে যেটি শিশু এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই এই সাজনে পাতা অথবা পাতার গুড়ো শিশু ও গর্ভবতীদের গ্রহন থেকে বিরত থাকা উচিত।
৪. ইমিউনিটি সিস্টেমের ক্ষতি
সাজনে ডাঁটা এবং পাতা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ভালো। কিন্তু সাজনে পাতার সাথে সংলগ্ন ডাল গুলো আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এগুলোতে বেশ কিছু ধরনের ক্ষতিকারক উপাদান থাকে যেগুলো আমাদের দেহের ইমিউনিটি সিস্টেমের বিশাল ক্ষতি করতে পারে। তাই আমাদের সকলের উচিত সাজনে পাতা খাওয়ার সময় পাতার সাথে সংলগ্ন ডালটি পরিহার করা।
সজনে পাতা খাওয়ার নিয়ম
সাজনা পাতা খাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে। কিভাবে সজনে পাতা খেতে হয় তার কিছু বিখ্যাত নিয়ম/রেসিপি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো:
১) সাজনে পাতা আপনি চাইলে শাক ভাজির মতো করে খেতে পারেন।সেক্ষেত্রে প্রথমেই অল্প পানিতে পাতাগুলো সিদ্ধ করে নিন। তারপরে মরিচ, পেঁয়াজ, কালোজিরা (ঐচ্ছিক),রসুন, তেল, লবণ ইত্যাদি মিশিয়ে কড়াইতে ভাজতে থাকুন। স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য আমরা অনেকেই খুব বেশি পরিমাণে তেল ব্যবহার করি। সেটি একদমই করা যাবে না। বরং তেল ও লবণের ব্যবহার পরিমাণ মতো হতে হবে।
২) সজনে পাতা খাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় গুলোর একটি হলো সাজনে পাতা দিয়ে ভর্তা বানানো। যার জন্য প্রথমে কচি পাতা সংগ্রহ করতে হবে গাছ থেকে। তারপরে কিছুক্ষন ময়লা দূর করার জন্য ভালো ভাবে পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।
তারপরে একটি পাতিলে বা হাড়িতে অল্প পরিমাণে পানি নিয়ে তার মধ্যে সাজনা পাতা দিয়ে সিদ্ধ করতে হবে। সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার পরে কুঁচি কুঁচি করে কাটা পেঁয়াজ, মরিচ এবং সামান্য তেল আর লবণ মিশিয়ে সেগুলোকে ভর্তা করে ফেলুন। তারপরে এই ভর্তা গরম ভাতের সাথে মিশিয়ে খেতে খুব মজাদার লাগবে।
৩) যে কোনো ধরনের মাছের তরকারি অথবা শুধু সবজি রান্না করার সময় সেখানে শাকের বিকল্প হিসেবে সাজনে পাতা ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য সাজনে পাতাকে আলাদা ভাবে কিছুক্ষণ অল্প পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এরপরে বাকি অন্যান্য সবজি গুলোর সাথে মিশিয়ে রান্না করে ফেলুন।
আপনাদের একটি বিষয় সবসময় খেয়াল রাখা জরুরি এবং তা হলো রান্নায় যেনো কোন ভাবেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিমাণে মশলা ব্যবহার করা না হয়। কারণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
৪) সজনে পাতা খাওয়ার আরেকটি উপায় হলো বড়া বানিয়ে খাওয়া। সেক্ষেত্রে প্রথমে সজনে পাতা গুলোকে বেটে বা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। বড়া তৈরির সহযোগী উপাদান হিসেবে প্রয়োজন হবে। ডাল গুলো পিষে সজনে পাতার সাথে মিশিয়ে নিতে হবে।
তারপর সেখানে লবণ,পেঁয়াজ, মরিচ, ও অন্যান্য দরকারী উপকরণ পরিমাণ মতো যোগ করে সেগুলোকে তেলে ভেজে নিতে হবে। মচমচে গরম বড়াগুলো খাবার হিসেবে বেশ সুস্বাদু ।
৫) সাজনে পাতার চা বানিয়ে খেয়েও এ পাতার উপকার আপনি পেতে পারবেন। সাজনে পাতার চা প্রধানত দুই ভাবে তৈরি করা যাবে।
- সরাসরি কাঁচা সাজনে পাতা লাল রং চায়ের মধ্যে মিশিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে ভালো উপকারিতা পাওয়া যায়।
- আবার সর্বপ্রথমে সাজনা পাতা শুকিয়ে নিয়ে।তারপর সেগুলো হাতের মুঠোর মধ্যে নিয়ে যতটুকু সম্ভব গুঁড়ো করতে হবে। তারপরে সেগুলো গরম পানির মধ্যে মিশিয়ে চা বানাতে হবে। সেই চায়ের সাথে প্রয়োজনীয় পরিমাণ মতো চিনি, কুঁচি কুঁচি করে কাটা লেবু ও আদা ব্যবহার করতে পারেন।
সাজনে পাতা দীর্ঘদিন ঘরে সংরক্ষণ করে রাখা যায় গুঁড়া করে । সে ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে পাতা সংগ্রহ করে সেগুলো ভালোভাবে ধুঁয়ে নিতে হবে। তারপর রোদের আলোয় দিয়ে ভালো ভাবে শুকিয়ে নেওয়ার পর শক্ত কোন কাঠামোর উপর রেখে পিষে অথবা গ্রিন্ডার মেশিনের সহায়তায় পাতা গুলোকে গুড়ো করতে হবে।
বাটিতে অথবা প্লাস্টিকের বোতল না রেখে পাতা গুলোকে কাঁচের পাত্রে সংরক্ষণ করুন। তাতেই পাতা গুলোর গুনাগুণ সবচেয়ে ভালো থাকবে।
শেষ কথা
আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সজনে পাতার উপকারীতা অপকারীতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই পোস্টে ব্যবহৃত সকল তথ্য ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা।
যদি কোন তথ্য ভুল মনে হয় তাহলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং আমাদের এ ব্যাপারে অবগত করে ভুল সংশোধনের সুযোগ দিবেন। অত্যন্ত ধন্যবাদ আপনাকে পুরো পোস্টটি এতক্ষণ সময় দিয়ে পড়ার জন্য।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
সজনে পাতার মাধ্যমে কি ক্ষতি হতে পারে?
সজনে পাতার অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে সেটি দেখতে পারেন। তাছাড়া সজনে পাতার মূল অনেক সময় বিষাক্ত হতে পারে তাই সেটি খাওয়া থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।
সজনে পাতা ত্বকের উজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে?
হ্যা। শুধু উজ্জ্বল্যই নয় ত্বকের প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে কাজ করে এটি যা আপনার ত্বককে সুস্থ করবে।
সজনে পাতার গুড়ার দাম কত?
সজতে পাতার গুড়ার (Moringa leaf powder) দাম আনুমানিক ১৫০-২০০ টাকা হয়ে থাকে।
সার্চ কিওয়ার্ড
সাজনা পাতার অপকারিতা
সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
সজনে পাতা খাওয়ার নিয়ম
সাজনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
সাজনা পাতা খাওয়ার নিয়ম
সজনে পাতা খাওয়ার উপকারিতা
তথ্যসুত্রঃ
১। https://saudijournals.com/media/articles/SJBR_612_298-306.pdf
২। https://www.aimilpharmaceuticals.com/moringa-oleifera/
৩। https://en.wikipedia.org/wiki/Moringa_oleifera
৪। https://www.webmd.com/vitamins-and-supplements/health-benefits-moringa
৫। https://www.asbestos.com/blog/2019/11/26/moringa-tree-cancer-research/