প্রেগনেন্সির সময়টা প্রতিটি মায়ের জন্য একটি জীবনের সেরা সময়। প্রেগনেন্সির শেষ সময়ে এসে মায়েরা ডেলিভারি পেইনের জন্য অপেক্ষা করতে শুরু করেন। কারণ ডেলিভারি পেইন মানে তার সন্তানের ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় হয়ে এসেছে।
প্রতিটি মায়ের জীবনে এটি একটি বহুল প্রতীক্ষিত সময়। তবে এই ডেলিভারি পেইন সহ্য করাটা অনেক বেশি কষ্টদায়ক। বাচ্চা পেট থেকে বের হয়ে আসার পর গর্ভাবস্থার সমাপ্তি ঘটে থাকে।
একটি সন্তান পেটের মধ্যে ৯ থেকে ৯ মাস ১৫ দিনের মতো বৃদ্ধি পায় এবং যখন বাচ্চাটি পেট থেকে বের করা হয় তখন নারীর ডেলিভারি পেইন অনুভব হয় এবং এই ব্যথাটি কিছু সময়ের জন্য কিন্তু খুবই যন্ত্রণাদায়ক কেননা ডেলিভারির সময় দেহ থেকে রক্ত নিঃসৃত হয় এবং মায়েদের তলপেট মাজা সকল কিছু ব্যথা হয়ে থাকে।
তো সে যাই হোক, এই লেখাতে আমরা জানবো ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায়, ডেলিভারি পেইন ওঠার লক্ষণ ও প্রাকৃতিক খাবার নিয়ে বিস্তারিত।
ডেলিভারি পেইন কি?
ডেলিভারি পেইন হচ্ছে প্রসবের ব্যথা, ডেলিভারি পেইন কে পেরিনিয়াল ব্যথাও বলা হয়ে থাকে। গর্ভধারণ নারীদের জীবনে একটি লম্বা যাত্রা, এই যাত্রা শেষে প্রসবের মাধ্যমে বাচ্চার জন্ম দেওয়া হয়, প্রসবের সময় যে ব্যথা বা পেইন হয়ে থাকে সে পেইনকে লেবার পেইন বা ডেলিভারি পেইন বলা হয়ে থাকে।
ডেলিভারির সময় স্বাভাবিকভাবে প্রায় বেশিরভাগ নারীদের পেরিনিয়াম অংশে প্রসারিত হয়ে থাকে ব্যথা অনুভব হয়। এই পেইনের প্রথম পর্যায়ের দিকে খিঁচুনি ভাত বা পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব হয়।
ব্যথাটি ২০ থেকে ৩০ মিনিট পরপর হয়ে থাকে। এক কথায় বলতে গেলে মাসিকের ব্যথা তীব্র আকার দেখা দেয়। এবং সেই ব্যথার ফলে বাচ্চা প্রসবের সংকেত পাওয়া যায়। প্রসবের ব্যথা পেছনের দিক থেকে শুরু হয় এবং আস্তে আস্তে সামনের দিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং তীব্র ব্যথার সৃষ্টি করে। সন্তান জন্মদানের সময় যত নিকটে চলে আসে ততোই প্রসবের লক্ষণ দেখা দিতে থাকে।
প্রসবের ব্যথা নিয়ে বা ডেলিভারি পেইন নিয়ে গর্ভাবস্থায় অবস্থায় নারীদের মধ্যে চিন্তিত ভাব দেখা দেয়। অনেক সময় গর্ভাবস্থায় নারীরা মানসিকভাবে চিন্তায় ভোগে।
কিন্তু তারা বুঝতে পারে না যে এই চিন্তা মা ও শিশুর জন্য খুবই গুরুতর একটি সমস্যা এতে দুজনের জীবনে ঝুঁকি রয়েছে। গর্ভাবস্থায় ব্যথা তীব্র হতে পারে আবার স্বাভাবিক ও হতে পারে।
ডেলিভারি পেইন কখন শুরু হয়?
সন্তান প্রসবের সময় নারীর পেটে মাজায় অত্যন্ত ব্যথা শুরু হয় আর সেটি হচ্ছে ডেলিভারি পেইন। সন্তান জন্মানোর আগ মুহূর্ত থেকে আস্তে আস্তে মায়েদের শরীরে জায়গায় জায়গায় ব্যথা শুরু হয় তলপেট থেকে শুরু করে মাজা পায়ের রান হারে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হয়।
প্রত্যেকটা নারীর জীবনে ডেলিভারি পেইন দেখা দেয় যখন সে সন্তান জন্ম দানে সক্ষম হয়। সন্তান জন্ম দেওয়া নারীর জন্য লম্বা একটি পথ চলা কেননা ৯ থেকে ১০ মাস একটি সন্তান পেটে ধারণ করা এক কথায় লম্বা জার্নি বললেই চলে।
যখন বাচ্চা হওয়ার সময় ঘনিয়ে আসে তখন কিছু তরল দেহ থেকে যোনি পথ দিয়ে নিঃসৃত হয় এবং তার সাথে রক্ত ক্ষরণ হয় তখন ডেলিভারি পেইন শুরু হয়।
ডেলিভারি পেইনের লক্ষণ
ডেলিভারির সময় যত ঘনিয়ে আসে বাচ্চাটি আস্তে আস্তে পেটের নিচের দিকে চলে আসে কিছুটা জরায়ু থেকে যৌনপথের কাছাকাছি। তখন শরীর বা তলপেটে ব্যথা অনুভব হয়। ডেলিভারির সময় ঘনিয়ে এলে জরায়ু পথ প্রসারিত হতে শুরু করে।
আবার মহিলাদের সার্ভিক্স ১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত খুলে যায়। এই দুইটির ফলে প্রসব ব্যথা চেনা যায়। নারীরা সন্তান আগমনের সময় অনেক প্রস্তুতি আপনি তো থাকে।
তারা অত্যন্ত উত্তেজনায় শরীরের উপর প্রেসার দিয়ে থাকে তাতে তাদের প্রসবের ব্যথা দেখা দেয়। চলুন জেনে নেই ডেলিভারি পেইনের কিছু লক্ষণ:
১। স্বাভাবিক ব্যথার তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণে পেট ব্যথা হয়, এবং এই ব্যাথা পিটেও হতে পারে।
২। যোনিপথ দিয়ে কিছুটা হলুদ বা বাদামী বর্ণের তরল এবং কিছু রক্ত নিশ্রিত হয়।
৩। পায়ে পানি জমা দেখা দেয়।
৪। কারো কারো ক্ষেত্রে পানি ভেঙ্গে যায়।
৫। বাচ্চা স্বাভাবিকের তুলনায় কম নাড়াছাড়া করে।
৬। মলত্যাগের চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা মূলত বাচ্চার মাথা নিচের দিকে চাপ দেওয়ার ফলে হয়ে থাকে।
সকলেরই উচিত প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং চিকিৎসকের কাছে যাওয়া আর ব্যথা যদি অনুভব না হয় ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রসবের ব্যথা শরীরে আনা।
রিলেটেডঃ প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ । ২০২৩
ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায়
ডেলিভারির পেইন উঠানোর জন্যে ঘরোয়াভাবে যেসব উপায় বেশ কার্যকারী সেসব হলঃ
১। ব্যায়াম
গর্ভাবস্থায় শুরু থেকেই নিয়মিত ব্যায়াম করা বাচ্চা এবং মায়ের জন্য সুস্থ জনক। মা যেমন সুস্থ থাকবে তেমনি সন্তানও দেহে সুষ্ঠুভাবে বৃদ্ধি লাভ করবে।
যখন মায়েরা অতিরিক্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেন তখন সেটি বাচ্চার জন্য ক্ষতিকারক হাঁটাচলা করার ফলে বাচ্চা সুস্থ ভাবে পেতে থাকে এবং প্রসবের সময় চলে আসলে প্রসব বেদনা দেখা দেয়।
ব্যায়াম ডেলিভারি ডেলিভারি পেইন প্রাকৃতিকভাবে উঠানোর জন্য কার্যকরী। এই সময় মায়েদের উচিত দিনে কিছু সময় হাঁটাচলা করা।
২। খেজুর
খেজুর সকল রোগেরই সমাধানের একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান। তারমধ্যে ডেলিভারির পেইন প্রাকৃতিকভাবে উঠানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর ডেলিভারির সময় ঘনিয়ে এলে যদি নিয়মিত খেজুর খাওয়া যেতে পারে তাহলে জরায়ুর মুখ আস্তে আস্তে নরম হতে শুরু করে এবং বাচ্চা বের করতে সুবিধা হয়।
৩। সুস্থ খাবার
কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খাওয়ার ফলে প্রাকৃতিকভাবে প্রসব ব্যথা উঠানো সম্ভব। দারুচিনিপাতার চা খাওয়া যেতে পারে। মসলাযুক্ত খাবার পরিমাণ মতো খাওয়া তাহলে খুব শীঘ্রই ব্যথা অনুভব হয় হাত ও পায়ে মাজা সহ ব্যাথা ধরে। বেশিরভাগ মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া গেলে প্রাকৃতিক উপায়ে ডেলিভারি পেইন উঠানো সম্ভব
৪। সহবাস
প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে যদি ব্যথা না হয় তাহলে সহবাসের মাধ্যমে ব্যথা উঠানো সম্ভব এবং সন্তান সক্ষম ভাবে জন্ম দেওয়া যায়। কেননা সহবাসের ফলে প্রসবের ব্যথা দ্রুত দেখা দেয়। প্রেগনেন্সির পাঁচ থেকে ছয় মাস পর সহবাস করা যায়। এতে করে কোন অসুবিধা হয় না।
অনেকেই মনে করে প্রেগনেন্সির সময় সহবাস হয়তো করা উচিত নয় কিন্তু এটি একদমই ভুল। গর্ভবস্থায় সহবাস নিয়ে আমাদের পুরো একটি আর্টিকেল আছে। নিচের লিংকে পড়তে পারেন।
রিলেটেডঃ গর্ভাবস্থায় সহবাস করার নিয়ম । ২০২৩
৫। স্তনের বোটা ম্যাসেজ-
স্তনের বোটা যদি ভালোভাবে ম্যাসাজ করা যায় তাহলে দ্রুত ডেলিভারি পেইন উঠবে। কারণ এই বোটা থেকে অক্সিটোসিন হরমোন নির্গত হয়। স্তনের বোঁটা যখন ভালোভাবে ম্যাসাজ করা হয়, তখন এর ফলে সার্ভিক্সএর মুখ বড় হয়ে খুলে যায়। স্তনের বোটা ম্যাসাজের ফলে ব্যথা দেখা দেয় পেট সহ মাজা এবং পায়ে।
৬। Castor oil
ডেলিভারি পেইন উঠানোর ক্ষেত্রে ক্যাস্টর অয়েল বেশ কার্যকারী ও প্রচলিত প্রাকৃতিক উপায়, তবে এটির ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে, অতিরিক্ত ক্যাস্টর অয়েলের ব্যবহার জরায়ুতে বেশি জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি করতে পারে।
ক্যাস্টর অয়েলে প্রাকৃতিক laxative থাকার ফলে এইট সালাদ বা কোন খাবারের সাথে খেলে জরায়ুতে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি করে, ফলে জড়ায়ুর মুখ খুলতে ও ডেলিভারি পেইন উঠাতে সাহায্য করে।
৭। আনারস
ঘরোয়াভাবে ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্যে আনারস হতে পারে আরেকটি প্রাকৃতিক উপায়। এটিতে Bromelain নামক এনজাইম রয়েছে যা মহিলাদের জরায়ুকে পাকা করে এবং সংকোচন ঘটাতে সক্ষম। যদিও এই বিষয়ে যথেষ্ট কোন প্রমাণ নাই, তবে অধিকাংশ মহিলারাই এটি বিশ্বাস করেন আনারস ডেলিভারি পেইন বাড়েতে সাহায্য করে।
রিলেটেডঃ নরমাল ডেলিভারি হওয়ার দোয়া ও প্রসব সহজে হওয়ার আমল
ডেলিভারি পেইন উঠানোর খাবার
ডেলিভারি পেইন বাড়ানোর জন্য বা উঠানোর জন্য যেসব খাবার খাওয়া জরুরী সেগুলোর মধ্যে খেজুর স্পাইসি(জ্বাল) জাতীয় খাবার, আনারস, কাস্টার্ড ওয়েল এই সকল খাবার খাওয়া উচিত। এগুলো ঘরোয়া উপায়ে বা প্রাকৃতিক উপায়ে প্রসব ব্যথা উঠাতে পরীক্ষিত খাবার।
যদি ঘরোয়া উপায়ে কার্যকারিতা পাওয়া না যায় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শরীরে স্যালাইন প্রবেশ করাতে হবে, অথবা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ব্যথা উঠানোর জন্যে ওষুধ কিংবা ইনজেকশন দিয়ে থাকেন।
রিলেটেডঃ নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায়, লক্ষণ ও উপকারিতা
ফলস ডেলিভারি পেইন এবং সত্যি কারের ডেলিভারি পেইনের মধ্যে পার্থক্য
ফলস ডেলিভারি পেইন
১.এই ব্যথা বিরতি দিয়ে দিয়ে হয়ে থাকে এতে শরীরে বারবার সংকোচন প্রসারণ হয় নিয়মিতভাবে।
২. ফলস ডেলিভারি পেইন উঠলে এটি কম সময়ে স্থায়ী থাকে এবং ৩০ সেকেন্ডের মত দেখা দেয় আবার এক পর্যায়ে চলে যায়।
৩. ফলস ডেলিভারি পেইন পেটের সামনের দিকে হয়ে থাকে।
৪. ফলস ডেলিভারি পেইনের ক্ষেত্রে ব্যথা উঠলে হাঁটা চলা ব্যায়াম বা বিস্রাম নিলেই ব্যথা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে বা কমে যায়।
আসল ডেলিভারি পেইনের
১.শুরুতে নিয়মিত ব্যথা হয় এবং আস্তে আস্তে তীব্র পর্যায়ে দেখা দেয়। এই বেদনা প্রসবের সময় তীব্র মাত্রায় দেখা দেয় এবং ৩০ থেকে ৭০ সেকেন্ডের মতো এটি স্থায়ী থাকে। সংকোচন এবং প্রসারণ হয়।
২. এই পেইন বা প্রসব বেদনা শরীরের পিছন পিঠ থেকে শুরু হয়ে উপর দিকে বা সামনের দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
৩. প্রসবের বেদনার ক্ষেত্রে যতই ব্যায়াম বা হাঁটাচলা বা বিশ্রাম নেওয়া হোক না কেন ব্যথা ক্রমশ উচ্চমাত্রায় বাড়তে থাকে।
রিলেটেডঃ অর্থসহ সহবাসের দোয়া, বাংলা ও আরবি ২০২৩
প্রসবের তারিখ পেরিয়ে গেলে পরবর্তীতেও যদি প্রসবের শুরু না হয় তাহলে কি হয়?
বেশিরভাগ বাচ্চাই গর্ভাবস্থার ৩৭ থেকে ৪১ সপ্তাহের মধ্যে জন্ম ধারণ করে। শেষ মাসিকের পর থেকে হিসাব করে ডেলিভারি ডেট দেওয়া হয়। একটু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৯ মাস বা ৯ মাস ১৫ দিনের মধ্যে বাচ্চা প্রসব হয়।
অনেক সময় মায়েরা শেষ মাসিকের সময় মনে রাখেনা এতে করে বাচ্চা প্রসবের নির্ধারিত টাইম ডাক্তাররা বুঝে উঠতে পারে না তখন অনেক সময় প্রসবের ডেট পিছিয়ে যায় বা সমস্যা দেখা দেয়।
এটি কে পোস্ট টার্ম প্রেগনেন্সি বলা হয়। এই সময় কিছুদিন পেরিয়ে গেলে তেমন কোন সমস্যা হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডাক্তাররা এই সময় কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চা প্রসবের অনুমোদন দেয় না।
কিন্তু ডেলিভারি ডেইট পেরিয়ে যদি দুই থেকে তিন সপ্তাহের মতো হয়ে যায় তখন মা এবং শিশুর জন্য এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে । কেননা বিয়াল্লিশ সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা পেটের মধ্যে থাকলে মারা যাওয়ার সম্ভাবণা অনেকাংশে বেড়ে যায়। তাই ডেলিভারি ডেইট পেরিয়ে গেলেই দেরী করা যাবে না, তাৎক্ষণিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
৪০-৮২ সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা প্রসব না হলে, ৯০% বাচ্চাই পেটের ভিতরে প্রসাব ও পায়খানা করতে শুরু করে, এবং পেটের পানি ঘোলাটে ও সবুজ হয়ে যায়, এবং এই পানি বাচ্চা আবার খেতে শুরু করে, যা নবজাতকের জন্যে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু কিছু নবজাতকের ক্ষেত্রে দেখা গেছে ডেলিভারি ডেইট পেরিয়ে গেলে ভেতরে থেকে শ্বাসকষ্ট, জন্ডিসের মতো ভয়াবহ সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে।
এবং আরো কিছু বাচ্চার ক্ষেত্রে এই ডেলিভারি ডেইট পেরিয়ে গেলে ওজন কমতে শুরু করে, যা গর্ভে থাকা সন্তানের জন্যে খুবই বিপদজনক।
রিলেটেডঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় ২০২৩
নির্ধারিত তারিখ পেরিয়ে গেলে কি হবে?
প্রসব হওয়ার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর তারা আল্ট্রাসনোগ্রাম করার ফলে বাচ্চার অবস্থা শরীর এবং সকল কিছু সম্পর্কে তথ্য দিবে এবং বাচ্চা নড়াচড়া সম্পর্কে মায়ের কাছ থেকে জানতে চাইবে যে বাচ্চা দিনে কেমন নড়াচড়া করে।
এ সময় কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চা প্রসব করানো হতে পারে। কৃত্তিম উপায়ে বাচ্চা প্রসব করানো কে ইন্ডাকশন বা সিজার বলা হয়ে থাকে। কিন্তু সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করে এটি করতে হবে এবং নিজেকেও শক্ত হতে হবে।
ডেলিভারি পেইন উঠলে কি কি করা যাবে না?
প্রসবের ব্যথা বা ডেলিভারি পেইন উঠলে নারীদের কিছুটা সচেতন হওয়া উচিত। কেননা ভুল কিছু হলে সেটি সন্তান এবং মায়ের জন্য খুবই মারাত্মক হয়ে দাঁড়াবে তাই আমাদের কিছু নিয়মাবলী মেনে চলা উচিত তাই ডেলিভারি পেইন উঠলে কিছু কিছু জিনিস করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ডেলিভারি ডেট পার হয়ে যাওয়ার পর কখনোই বসে থাকা চলবে না এতে সন্তানের মৃত্যু বা মায়ের মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে।
ডেলিভারি পেইন উঠলে যে সকল কাজ করা যাবে না সেগুলো হচ্ছে-
১.ডেলিভারি পেইন উঠলে শুয়ে বা বসে থাকা যাবে না।
২.ডেলিভারি পেইন উঠলে মায়ে দের পেট খালি রাখা চলবে না। খাবার খেয়ে পেট ভরপুর রাখতে হিবে। তা না হলে বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর।
৩.ডেলিভারি পেইন উঠলে বারবার ঘনঘন মায়েদের পায়খানা চাপে কিন্তু তাদের বাথরুমে যাওয়া যাবে না কেননা অনেক সময় বাচ্চাও বের হতে পারে তাই ঘরে বা নিচে কোথাও বসতে হবে।
৪.ডেলিভারি পেইন উঠলে ঘরে চুপচাপ বসে থেকে নিজের বা বাচ্চার ক্ষতি করা যাবেনা তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের নিকট যাওয়া আবশ্যক।
শেষ কথা
প্রসব নিয়ে ছেলে খেলা করা যাবেনা সময় মত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং যদি প্রসবের সময় পেরিয়ে যায় তাহলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ব্যথা না হলে প্রসব ব্যথা বাড়ানোর জন্য এবং বাচ্চা জন্ম দেওয়ার জন্য ঘরোয়া উপায় বা কৃত্রিম উপায় অবলম্বন করতে হবে এবং মায়েদের সচেতন থাকতে হবে।
প্রসব নারীদের জন্য যেমন ভাল তেমন ক্ষতি ও বয়ে আনতে পারে, তাই চিকিৎসকের কিছুদিন পরপর ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং বাচ্চা পেটে কেমন আছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত। আপনি এবং আপনার বাচ্চা সুরক্ষার জন্য সেটাই করুন যেটা আপনার চিকিৎসক আপনাকে পরামর্শ দেন।
তো বন্ধুরা এই ছিলো আজকের লেখা ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় ও ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ নিয়ে আজকের এই বিস্তারিত লেখা। যদি এই লেখা সম্পর্কে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
আজকের মতো এখানেই বিদায়, দেখা হবে আগামী লেখাতে। সবাই ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন।