জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্যই মূলত ইমার্জেন্সি পিল খাওয়া হয়। অনেকেই ইমার্জেন্সি পিল গ্রহণ করে থাকেন অসতর্কতায় কিংবা কোন প্রকার প্রটেকশন ছাড়া অনিরাপদ যৌন সঙ্গমের পরবর্তীতে গর্ভধারনের ঝুঁকি কমাতে। এটি সেবন করার জন্য কোন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন হয় না।
এই সকল পিল গুলোর অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে যার করানে সেবনকারীর বিভিন্ন সমস্যা ও দেখা দিতে পারে। মিলনের ৩ দিন অথবা ৫ দিন এর মধ্যে এই ট্যাবলেটটি খেতে হয়। এই ট্যাবলেট গুলো যত তাড়াতাড়ি খাওয়া যাবে তত দ্রুত কাজ করে থাকে।
বর্তমানে যে ধরনের পিল গুলো খাওয়া হয় সেগুলো অনেক আগে থেকেই মানুষ সেবন করে আসছে। ১৯৭০ সালের দিকে সর্বপ্রথমে গর্ভনিরোধক ইমার্জেন্সি পিল বা ঔষধ এর কথা মানুষের চিন্তায় আসে প্রথম এরপর ১৯৭৪ সালের দিকে মানুষ এটি নিয়ে গবেষণা শুরু করে।
তারপরে ১৯৮০ সালে প্রথম বারের মতোন এই পিল বের করে টেস্ট করা হয়। তারপরে টেস্ট সফল হওয়ার পর থেকে এই পিলটি সারাবিশ্বেই জন্ম নিরোধক ঔষধ বা পিল হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের জন্ম নিরোধক পিল পাওয়া যায়।
বর্তমানে আমাদের দেশেও নানা ধরনের পিল পাওয়া যায়। প্রতিটি পিলের খাওয়ার নিয়ম ভিন্ন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো ইমার্জেন্সি পিল কি? ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম, ইমার্জেন্সি পিল সম্পর্কে বিস্তারিত।
ইমারজেন্সি পিল নিয়ে বিস্তারিত সকল কিছু জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
ইমার্জেন্সি পিল কি?
অসতর্কতায় যৌন মিলনের গর্ভধারণের ঝুঁকি কমাতে যে ঔষধ সেবন করা হয় তাকে ইমার্জেন্সি পিল বলে। মূলত এটি হলো একটি জন্ম নিরোধক ট্যাবলেট। অনেকের কাছে এই ইমার্জেন্সি পিলটি মর্নিং -আফটার পিল নামেও পরিচিত। কিন্তু এর মানে বিষয়টি এমন নয় যে এই ঔষধটি সকালেই খেতে হবে। অরক্ষিত যৌন মিলনের পরে ৭২ থেকে ১২০ ঘন্টা অথবা ৩ দিন থেকে ৫ দিনের মধ্যে খাওয়া হয় এই ঔষধ। কিন্তু মিলনের পর এটি যত দ্রুত সম্ভব খাওয়া সম্ভব হবে তত দ্রুত এবং ভাল কাজ করতে সক্ষম হবে।
ইমার্জেন্সি পিল কিভাবে কাজ করে?
এই পিলটির কাজ হলো এটি সাধারণত গর্ভপাত করায় না। এই পিল খাওয়ার পর ওভুলেশনের বা ডিম্ব স্ফুটনের সময় কিছুটা পিছিয়ে দেয় ঔষধটি। যার ফলে ভিতরে যে শুক্রাণুটি থাকে সেটি গর্ভসঞ্চার করার সুযোগ পায় না। এবং আস্তে আস্তে জরায়ুতে থাকা এই শুক্রাণু নষ্ট হয়ে যায়। নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে আর কোন প্রেগন্যান্ট হওয়ার সুযোগ থাকেনা। সাধারণত এভাবেই এই পিল গুলো গর্ভধারণের ঝুঁকি কমিয়ে থাকেন।
তবে একটি কথা মনে রাখা উচিৎ যে কখনো কখনো এমনও হয শুক্রাণু দীর্ঘদিন থাকার পরেও সেটি নষ্ট হয় না যার ফলে ইমার্জেন্সি পিল সেবনের পরেও প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনা থাকে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইমার্জেন্সি পিল গ্রহণ করার পরেও দেখা যায় প্রতি ১০০ জনের নারীর মধ্যে ২ জন নারী গর্ভবতী হতে পারে।
তাই ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার পরও প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া উচিত।
রিলেটেডঃ পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় ২০২৩
ইমার্জেন্সি পিলের প্রকারভেদ
ইমারজেন্সি জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার নিয়ম জানার আগে জানতে হবে বাংলাদেশে কয় ধরনের পিল পাওয়া যায়। বর্তমানে বাজারে নানা রকমের জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল পাওয়া যায়। মূলত জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ৩ ধরনের :-
৩ দিনের ইমার্জেন্সি পিল :- এই পিল গুলো মিলনের ৩ দিনের মধ্যে সেবন করতে হয়। তিন দিন পর পিল গুলোর কাজ করার সক্ষমতা কমে যায়। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পিল সেবন করে ফেলা উচিত।
৫ দিনের ইমার্জেন্সি পিল:- এটির কার্যকরীতা থাকে ৫ দিন পর্যন্ত তাই মিলনের ৫ দিনের মধ্যেই এই পিল সেবন করলে বেশি কার্যকরী হবে।
২১ দিনের ইমার্জেন্সি পিল:- এই পিল গুলো নিয়ম মাফিক নিয়মিত সেবন করলে জন্মবিরতিকরণ সম্ভব। নিচে এটি নিয়ে আরো বিস্তারিত আছে। .
Note:
ইমার্জেন্সি পিল সেবনের পূর্বে প্যাকেটের গায়ে লেখা নিয়ম ভালো করে পড়ে তবেই সেবন করবেন।
ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম
বর্তমানে বাজারে অনেক রকমের ইমার্জেন্সি পিল পাওয়া যায়। প্রতিটা পিলের খাওয়ার জন্য রয়েছে বিভিন্ন রকম নিয়ম । তাই আজকে আপনাদের দেশের কিছু পরিচিত ও কমন কিছু ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম শেয়ার করবো।
আজকে আমরা এই পোস্টে সবচেয়ে কমন ৭ টি পিল খাওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত কথা বলবো। আশা করছি সবার উপকারে আসবে। বাংলাদেশে জনপ্রিয় ৭ টি ইমার্জেন্সি পিল হলো :-
১. আই পিল (i pill)
২. ফেমিকন
৩. পিউলি ইমার্জেন্সি পিল
৪. 5X ইমার্জেন্সি পিল
৫. নরপিল
৬. নোরিক্স ১
৭. ইমকন ১
I pill- আই পিল খাওয়ার নিয়ম:-
i-pill ইমার্জেন্সি পিলটি দ্রুতই গর্ভনিরোধক করতে সাহায্য করেন । আই পিল ঔষধটি খাওয়ার নিয়ম হলো যৌন মিলনের প্রায় ৭২ ঘন্টার মধ্যে যেকোন সময়েই এটি সেবন করতে হবে। তবে এটি যত দ্রুতই সম্ভব খেয়ে নিতে হবে। কারন ৭২ ঘন্টার পর আই পিল ঔষধটির কার্যকর ক্ষমতা কমে যায় । এজন্য এই পিলটি ১টি সেবন করার পর ৭২ ঘন্টার সময়ে কয়েক বার সহবাস করলেও সমস্যা হবেনা।
ফেমিকন পিল খাওয়ার নিয়ম:-
একটু ভিন্নরকমের নিয়ম রয়েছে ফেমিকন পিলটির। ফেমিকন পিলটির একটি পাতায় আছে মোট ২৮ টি ট্যাবলেট। তার মধ্যে রয়েছে ৭ টি লাল ও ২১ টি সাদা থাকে। এই ট্যাবলেটি খাওয়ার নিয়মটি হলো মাসিক শুরু হওয়ার ১ম দিন থেকেই এই ট্যাবলেটি খাওয়া শুরু করে দিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে প্রতি দিন একই সময়েই ঔষধটি খেতে। প্রথম ২১ দিনে ২১ টি সাদা ট্যাবলেট খাওয়ার পর ২২ তম দিন থেকে লাল ট্যাবরেট খাওয়া শুরু করবেন।
এভাবে লালটি খাওয়া শেষ হলে আপনাকে আবার নতুন করে প্রথম থেকেই সাদা ট্যাবলেট পরে লাল ট্যাবলেট ঠিক একই নিয়মেই খেয়ে যেতে হবে।
এভাবে যতদিন আপনি সন্তান নিতে ইচ্ছুক না ততদিন পর্যন্ত খেয়ে যেতে হবে এই ঔষধটি । যে সময়ে সন্তান নিতে চাইবেন তখন থেকেই আবার এই ট্যাবলেট খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।
হঠাৎ যদি কোনদিন ঔষধ খেতে ভুলে যান তাহলে তার পরদিন ২ টা ট্যাবলেট একসাথে খেয়ে নিতে হবে।
পিউলি খাওয়ার নিয়ম:-
অরিক্ষিত মিলনের প্রায় ১২০ ঘন্টা বা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়ে নিতে হবে পিউলি ইমার্জেন্সি পিলটি । ১২০ ঘন্টা পার হয়ে যাওয়ার পরে এই পিল খেলেও কোনো কাজ করবে না। আপনি খালি পেটে অথবা ভরা পেটেও এই পিলটি খেতে পারবেন। পানি দিয়ে গিলে এই পিলটি খেতে হবে।
5X ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম:-
অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভরোধের খুবই ভাল কাজ করে থাকে 5X ইমার্জেন্সি পিলটি । মিলনের ৫ দিন অথবা ১২০ ঘন্টা এর মধ্যে ১ বার এই পিল সেবন করতে হবে। অন্য সব ট্যাবলেট এর মতই সহবাসের পরে পানি দিয়ে গিলে ফেলতে হবে।
নরপিল পিল খাওয়ার নিয়ম:-
সহবাসের পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নরপিল ইমার্জেন্সি পিলটি খেয়ে নিতে হবে। সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন যেন ১২ ঘন্টার মধ্যে খাওয়ার, তবেই এই পিলটি সব থেকে ভাল কাজ করবে।
কিন্তু মনে রাখতে হবে সর্বোচ্চ ৭২ ঘন্টার মধ্যে খেয়ে ফেলতে এর পর এটি আর কাজ করবে না। অন্যান্য পিলের মত এই পিল ও পানি দিয়ে গিলে খেতে হবে।
নোরিক্স ১ ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম:-
সবারই পরিচিত একটি ইমার্জেন্সি পিল হলো নোরিক্স পিল। সাধারণত নোরিক্স খাওয়ার নিয়মটি হলো অনিরাপদ মিলনের ৭২ ঘন্টা বা ৩ দিনের মধ্যে একটি নোরিক্স পিল সেবন করলেই গর্ভধারণ রোধ করা সম্ভব। কিন্তু এই পিলটি একমাসে একটা পিলের বেশি অথবা নিয়মিত সবসময় খাওয়া যাবে না।
একটা পিল গ্রহণের পরে পরবর্তী পিরিয়ড ক্লিয়ার না হওয়ার আগ পর্যন্ত আরেকটি পিল খাওয়া যাবে না।
ইমার্জেন্সি নোরিক্স পিলটির পার্শ্ব পতিক্রিয়ার প্রভাবও বেশি দেখা দেয়, যার ফলে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। তাই সঠিক ভাবে মাসিক না হওয়া পর্যন্ত দ্বিতীয় পিল খাওয়া যাবে না।
যেহেতু এটি একটি ইমার্জেন্সি পিল তাই অনিরাপদ সহবাসের পর ১টি ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। এবং ঔষধ সেবনের ৭২ ঘন্টার মধ্যে প্রটেকশন ছাড়া কয়েক বার সহবাস করলে ও গর্ভবতী হবে না।
নোরিক্স পিল খাওয়ার নিয়ম, ব্যবহার ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জানতে আমাদের এই বিস্তারিত লেখাটি পড়তে পারেন: নোরিক্স পিল খাওয়ার নিয়ম, ব্যবহার ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ইমকন ১ ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম:-
অন্যান্য পিলের মতই ইমকম -১ পিল খাওয়ার নিয়মও একই। কোন প্রকার প্রটেকশন ছাড়া সহবাস করলে গর্ভনিরোধের জন্য সর্বোচ্চ ৭২ ঘন্টার মধ্যে এই ইমকন পিলটির একটি ট্যাবলেট খেতে হবে।
সাধারন ট্যাবলেটের মতো পানি দিয়ে গিলে ফেলবেন। এই পিলটির একটি ট্যাবলেট সেবন করলেই পিল খাওয়ার পরবর্তী ৭২ ঘন্টার মধ্যে কয়েকবার সহবাস করা যাবে।
ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার উপকারিতা
ইমার্জেন্সি পিল গুলোতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়ে থাকে। তাই এসব পিল গ্রহণে সব সময় অনুৎসাহিত করা হয়। এগুলো শুধু অনিরাপদ সহবাস কিংবা কোন দুর্ঘটনায় পড়লে মানুষ ব্যবহার করে থাকেন। দীর্ঘ সময় এসব পিল ব্যবহার করা একদমই উচিত নয়। এসব পিলের যে উপকারীতা আছে তা হলো :-
- এই পিল দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করে
- এই পিল গুলোর মাধ্যমে গর্ভপাত হয় না। ডিম্বস্ফোটনের সময় পিছিয়ে গর্ভধারণের ঝুঁকি এড়াতে সাহায্য করে।
- অনেকেই মনে করেন গর্ভরোধক ঔষধ নিলে ওজন বেড়ে যাবে। প্রকৃতপক্ষে ওজন বাড়ার সঙ্গে এটির কোন সম্পর্ক নেই।
- পরিবার পরিকল্পনায় সাহায্য করে।
- স্বল্প মাত্রায় এ পিল গুলোর ব্যবহারে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
- ভবিষ্যৎ গর্ভধারণে কোন সমস্যা করে না।
রিলেটেডঃ ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা, এবং খাওয়ার নিয়ম ২০২৩
ইমার্জেন্সি পিলের ক্ষতিকর দিক
ইমার্জেন্সি পিলের অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তাই যখন ইচ্ছা না জেনে না বুঝে এসব পিল খাওয়া ঠিক না। আর খাওয়ার পরেও সাবধান থাকতে হবে। নিচে ইমার্জেন্সি পিলের কয়েকটি ক্ষতিকর দিক উল্লেখ করা হলঃ-
- অতিরিক্ত পিল সেবনে কখনো কখনো যৌন ও চর্মরোগ ও হতে পারে।
- অনিয়মিত মাসিক দেখা দিতে পারে।
- পিল সেবনের পরে বমি বমি ভাব এমনকি বমিও হতে পারে।
- মুখে বিভিন্ন মেছতা, দাগ, এবং ছোট ছোট ব্রণ হতে পারে।
- মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা হতে পারে।
- কখনো কখনো মাসিকের সময় জরায়ু দিয়ে ফোটা ফোটা রক্ত যেতে পারে।
রিলেটেডঃ নরমাল ডেলিভারি হওয়ার দোয়া ও প্রসব সহজে হওয়ার আমল
ইমার্জেন্সি পিলের বিকল্প
ইমার্জেন্সি পিলের অনেক অপকারীতা থাকার কারনে অনেক বিশেষজ্ঞ এটি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করেন। তাই এটির অনেক বিকল্প উপায়ও আছে। এখন চলুন জেনে আসি ইমার্জেন্সি পিলের কয়েকটি বিকল্প নিয়ে:-
কনডম (Condom)
ইমার্জেন্সি পিলের খুব কমন একটি বিকল্প হরো কনডম। কনডম ছেলে মেয়ে উভয়ই ব্যবহার করতে পারেন। এটি মূলত একটি কাভার যেটি দিয়ে জননাঙ্গ সুরক্ষিত থাকে যেন কোন শুক্রাণু ডিম্বাশয়ে যেতে না পারে। গবেষণায় বলে গর্ভরোধক হিসেবে কনডম শতকরা ৭৯-৮০% সফল।
আযল
ইমার্জেন্সি পিলের সবচেয়ে সহজ ও ভালো বিকল্প হল আযল। মিলনের সময় বীর্য বাইরে ফেলার মাধ্যমে গর্ভরোধ করার প্রক্রিয়াকে আযল বলে। এটি ইসলামি শরীয়া সম্মত একটি উপায়। এই উপায়ে কোন প্রকার ঔষধ ব্যবহার হয়না বলে এটি স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি করেনা এবং ভবিষ্যৎ গর্ভধারণে কোন সমস্যা সৃষ্টি করেনা।
তাই যারা ইমার্জেন্সি পিলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে খুব চিন্তিত তারা এই সহজ বিকল্পটা কাজে লাগাতে পারেন।
ইনজেকশন (Injection)
গর্ভরোধক হিসেবে ইমার্জেন্সি পিলের বিকল্প কিছু ইনজেকশন রয়েছে। যেগুলো সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে গর্ভধারণ রোধ সম্ভব। কিন্তু এগুলো অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করতে হবে৷ গর্ভরোধক হিসেবে এই ইনজেকশন গুলো ৯০% কার্যকর হয় বলে ধরণা করা হয়।
Contraceptive Ring
Contraceptive Ring হলো এক প্রকার ছোট প্লাস্টিক রিং। যেটি স্ত্রীযোনিতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত লাগানো থাকে। তারপরে এটি এক প্রকার হরমোন নিঃসৃত করে যেটি গর্ভরোধে সহায়তা করে। সঠিক ব্যবহারে এটিও গর্ভরোধে ৯৫-৯৯% কার্যকর হয়।
রিলেটেডঃ ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম, উপকারিতা এবং অপকারিতা
শেষ কথা
আজকের এই লেখাতে আমরা আপনাদের ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম, ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়, বা কোন ইমার্জেন্সি পিল সবচেয়ে ভালো? এসব নিয়ে একটা বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। লেখাতে উল্লেখিত সমস্ত তথ্য ইন্টারনেটের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ।
তাই সকল তথ্যের শতভাগ সত্যতা আমরা দিতে পারছিনা। উক্ত তথ্যে কোন ভুল এবং অভিযোগ থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং আমাদের অবগত করবেন।
ইমার্জেন্সি পিল সেবনের পূর্বে অবশ্যই প্যাকের গায়ে লেখা নিয়মাবলি পড়ে নিবেন। কোন সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। এটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক তাই এটির ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়?
অনেকেই জানতে চায় ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পরে মাসিক হয় এইটা। আসলে মাসিক হওয়ার জন্য ইমারজেন্সি পিল খাওয়া হয়না।
মূলত এই ইমারজেন্সি পিল সেবন করা হয়ে থাকে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রেগন্যান্সি রোধ করতে । ইমার্জেন্সি পিলের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকার কারনে অনেক সময় এটির প্রভাবে মাসিকের নির্দিষ্ট তারিখের আগে বা পরে হতে পারে। আবার সেটি ঠিক সময়েও হতে পারে।মেয়েদের মাসিক সাধারণত প্রায় সময়ই অনিয়মিত হয়ে থাকে।
পিল খাওয়ার পর যদি মাসিক দেরিতে হয় তাহলে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। সাধারণত পিলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার জন্য ৫-১০ দিন দেরি হতে পারে।
কিন্তু যদি ১০ দিন এর বেশি দেরি হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে নিবেন। কারণ অনেক ক্ষেত্রে পিল গ্রহনের পর ও ১০০% নারীর মধ্যে ২% নারী প্রেগন্যান্ট হয়ে থাকে। তাই সতর্ক থাকাে জন্য অবশ্যই টেস্ট করে নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
ইমার্জেন্সি পিল বেশি খেলে কি হয়?
গর্ভরোধে স্থায়ী সমাধান ইমার্জেন্সি পিল নয়। এতে অনেক ধরনের সাইড ইফেক্ট কিংবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই ডাক্তারেরা সব সময় নিষেধ করেন এটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করার জন্য। যদি নিয়মিত দীর্ঘদিন এই সব পিল সেবন করেন তাহলে পিলের কার্যকারিতা হ্রাস পেয়ে গর্ভধারণের ঝুঁকি বেড়ে যায় । তাই এই পিল এড়িয়ে চলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত।
ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার পর ব্লিডিং হয় কেন?
ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার পরে ব্লিডিং হতেই পারে। এর কারণ হতে পারে ইমার্জেন্সি পিলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। যেটির কারণে মাসিক নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেও হতে পারে আবার পরে ও। তাই আগে দেখতে হবে এটা কি মাসিকের রক্ত কি না।
যদি মাসিকের না হয় তাহলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঠিক না হয় এবং যদি অতিরিক্ত ব্লিডিং হয় তাহলে অবশ্যই গাইনী বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
ইমার্জেন্সি পিল কয়টা খেতে হয়?
ইমার্জেন্সি পিল অতিরিক্ত বা একের অধিক খাওয়া যাবেনা। একটি ঋতু চক্রের জন্য একটাই খেতে হবে। সহবাসের তিন দিনের মধ্যে যেকোন সময় একটি ট্যাবলেট খেলেই চলবে । তবে যত তাড়াতাড়ি খাওয়া সম্ভব হয় তত ভালো কাজ করে।