Skip to content

এম এম কিট খাওয়ার নিয়ম, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, উপকারিতা | ২০২৪

এম এম কিট

বর্তমানে গর্ভপাত ঘটানোর ক্ষেত্রে বেশকিছু প্রক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে পিল বা ট্যাবলেট খাওয়ার প্রবণতাও প্রায় চোখে পড়ার মতো। কিন্তু নতুন অবস্থায় অনেকেই বুঝতে পারেন না, কোন সময়ে এবং কিভাবে কোন পিলটি খেতে হবে। 

এক্ষেত্রে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি হয়তো আপনাকে কিছুটা হলেও উপকৃত করবে। কারণ আজ আমরা এমন একটি কিট সম্পর্কে আলোচনা করবো যা গর্ভপাত করানোর প্রক্রিয়ায় সবসময় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, এটির ব্যবহার অনেক সহজ এবং ঝুঁকির মাত্রা তূলনামূলক অনেক কম। 

মোটকথা একইসাথে গর্ভপাত বা পিরিয়ড নিয়মিত করার ক্ষেত্রে কিংবা দু’টো কাজের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদাভাবে সমাধান হিসাবে ব্যবহার করা যাবে এই এম এম কিট (MM kit)। 

সুতরাং যারা এই কিটের ব্যবহার, উপকারিতা, ঝুঁকিসহ অন্যান্য তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান, তারা আমাদের সাথেই থাকুন। আশা করি যথেষ্ট উপকৃত হবেন। 

এম এম কিট কি?

এম এম কিট হলো U.S. Food and Drug Administration দ্বারা স্বীকৃত  একটি ট্যাবলেট যা সাধারণ গর্ভপাত ঘটানো কিংবা অনিমিয়ত পিরিয়ড নিয়মিত করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গর্ভপাতের বিভিন্ন ওষুধের পাশাপাশি এই MM kit বর্তমানে বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে এই কিট ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। 

আরো সহজ করে বললে, এম এম কিট হল বাচ্চা নষ্ট করার ট্যাবলেট, অপরিকল্পিত গর্ভধারণ ঠেকাতে এই ওষুধটি ব্যবহার হয়ে থাকে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন বাচ্চা নিতে প্রস্তুত না, তাই তারা মিলনের সময় প্রটেকশন হিসাবে কনডম কিংবা ইমার্জেন্সি পিল ব্যবহার করে থাকেন। যদি দুর্ভাগ্যবশত কোন প্রটেকশন কাজ না করে তাহলে তারা গর্ভধারণ করে ফেলেন, তখন এম এম কিট ব্যবহার করা হয় গর্ভপাত করতে।

এম এম কিটে সাধারণত দু’টো ঔষধ প্রধানভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর একটি হলো MIFTON (Mifepristone) এবং অপরটি হলো MISOTOL (Misoprostol)। দু’টোই কিন্তু প্যাকেটের ভেতর প্যাকেজিং করা অবস্থায় থাকে। 

এই সম্পূর্ণ প্যাকেজ বা কিটের ব্যবহার শুরু হয় প্রথমে একটি মিফটন ট্যাবলেট গ্রহণ করার মাধ্যমে। যা নিয়ে আজকের আর্টিকেলের “এম এম কিট খাওয়ার নিয়ম” অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। 

Mm kit খাওয়ার নিয়ম

ইতিমধ্যেই নিশ্চয় জানতে পেরেছেন এম এম কিট মাসিক নিয়মিত করতে এবং গর্ভপাত করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়! এবার চলুন এম এম কিট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। 

এম এম কিট একটি প্যাকেটে আপনি ৫ টি ট্যাবলেট পাবেন। এই ৫ টি ট্যাবলেট থাকা প্যাকেটে আপনি বড় ২০০ মি.গ্রা ট্যাবলেট পাবেন। যা সেই প্যাকেটের সবচেয়ে বড় ট্যাবলেট। এটির গায়ে নাম লেখা থাকবে। ট্যাবলেটটি নাম হলো মিফেপ্রিস্টোন। আর বাকি যে ছোট ছোট ট্যাবলেট ৪ টি থাকবে এই ট্যাবলেটগুলির নাম মিসোপ্রোস্টল। 

মনে রাখবেন, এমএম কিট নয় সপ্তাহ সময় পর্যন্ত গর্ভপাত ঘটানোর ক্ষেত্রে কাজ করবে। অর্থ্যাৎ আপনার শরীরে এই কিট ৯ সপ্তাহ বা ৬৩ দিনের গর্ভরোধে কাজ করবে। এরপর এর কার্যকারিতা হারিয়ে যাবে। চলুন জেনে নেই mm kit খাওয়ার সঠিক নিয়ম।

প্রথম দিনঃ 

  • ডাক্তারের সামনে বসেই বড় ট্যাবলেটটি খেতে হবে। যদি আপনি নিজে ফার্মেসি থেকে কিনে খেতে চান তাহলে অবশ্যই নিজ দায়িত্বে প্যাকেটের ভিতরের থাকা কাগজে mm kit খাওয়ার নিয়ম ভালোভাবে পড়ে নিবেন।
  • বড় ট্যাবলেটটি পর যত বেশি সম্ভব পানি খেতে হবে।

দ্বিতীয় দিনঃ

  • বাড়িতে এসে দ্বিতীয় দিনে Misoprostol নামক ৪টি ছোট বড়ি দুই গালের দুই পাশে ২+২ (প্রতি পাশে দুইটি করে) ৩০ মিনিট চুইংগামের মতো গুজে রাখতে হবে। 
  • ৩০ মিনিট পর পানি দিয়ে অবশিষ্ট অংশসহ গিলে ফেলতে হবে।

১৪-১৫ তম দিনঃ

সাধারণত এই ট্যাবলেটটি নেওয়ার ৩-৫দিনের মধ্যে মাসিক শুরু হয়ে যায়, তবে যদি কোন কারণে ৩/৫ দিনের মধ্যে মাসিক শুরু না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

এম এম কিট খাওয়ার পর সাধারণ লক্ষণঃ

  • উপরের নিয়ম অনুযায়ী ওষুধটি খাওয়ার পর রক্তপাত শুরু হবে, যেটা খুব স্বাভাবিক, এতে ভয় পাওয়ার কিছু নাই।
  • মাঝে মাঝে রক্তের জটলা বাধা চাকা বের হতে পারে, এটাও স্বাভাবিক লক্ষণ।
  • রক্তপাত ৭-১০ দিন ধরে চলতে পারে ঠিক সাধারণ মাসিকের মতো
  • পিরিয়ডের ব্যথার মতো তলপেটে ব্যথা হতে পারে, এটাও স্বভাবিক।

এম এম কিট খাওয়ার পর বিপদের লক্ষণঃ

  • যদি খুব বেশি রক্তপাত হয়, যদি ঘন্টায় ২টার বেশি প্যাড লাগে এবং এভাবে দুই/৩ ঘন্টা চলতে থাকে তাহলে অবশ্যই দ্রুত হসপিটালে যেতে হবে।
  • যদি এই কিট ব্যবহারের পর জ্বর টানা ৪ ঘন্টা থাকে, বা ১ দিনের বেশি সময় ধরে থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
এম এম কিট খাওয়ার নিয়ম
এম এম কিট খাওয়ার নিয়ম (Photo Ziska Pharmaceuticals Limited)

এম এম কিট এর উপকারিতা

এম এম কিট কিভাবে খেতে হয় সে-সম্পর্কে তো জানলেন। তবে এটি ব্যবহার করার পূর্বে সকলেরই উচিত এর উপকারিতা সম্পর্কিত তথ্য জেনে রাখা। যেহেতু গর্ভপাত ঘটানোর ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয় সেহেতু চলুন এই প্রেক্ষিতেই আলোচনা করা যাক। 

নিরাপদ উপাদানের ব্যবহার

এম এম কিটে থাকা যে দু’টো ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি সেই দু’টো ঔষধে থাকা প্রতিটি উপাদানই নিরাপদ। জিসকা ফার্মাসিকিউটিক্যালস লিমিটেড কোম্পানির তৈরি এই দুটো ঔষধেই ব্যবহৃত প্রতিটি উপাদানই নিরাপদ। 

সুতরাং আপনি নিশ্চিন্তেই এই কিট ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই কিট গ্রহণের পূর্বে প্রতিটি ব্যবহারকারীকেই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

দ্রুত কার্যকর হয়

এম এম কিট বেশ দ্রুত কাজ করে। গর্ভধারণের ৯ সপ্তাহের মধ্যেই এটি ব্যবহার করতে পারলে সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। তাছাড়া এটির কার্যকারিতাই মাত্র ৯ সপ্তাহ বা ৬৩ থেকে ৬৪ দিনের মতে। এর পরই পরিস্থিতি নিশ্চিত হতে গর্ভাবস্থার বিষয়টি হসপিটালে গিয়ে অথবা ফার্মেসী থেকে প্রেগন্যান্সি কিট কিনে ঘরে বসেই টেস্ট করতে পারবেন। 

ব্যবহার খুবই সহজ

আপনারা যারা এম এম কিটের মাধ্যমে গর্ভপাত ঘটাতে চাচ্ছেন তাদের বলে রাখা ভালো এই কিট ব্যবহার করা একদমই সহজ। শুরুতে বড় ট্যাবলেটটি যেকোনো ডাক্তারের সামনে সাধারণ ট্যাবলেটের মতো সেবন করবেন। এরপর পরবর্তী ৪ টি ছোট ছোট ট্যাবলেট জিহ্বার নিচে রেখে দিবেন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এটি ব্যবহার করা কতটুকু সহজ। 

চোখে পড়ার মতো সহজপ্রাপ্যতা 

এম এম কিটের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো এর সহজপ্রাপ্যতা। অন্যান্য কিটের তুলনায় গর্ভপাতের এই কিট আপনি যেকোনো ফার্মেসিতে পাবেন সহজেই। তাছাড়া আশেপাশের ফার্মেসি থেকে সংগ্রহ করতে না পারলে সরাসরি অনলাইন শপের সাহায্য নিতে পারেন।

অনিয়মিত মাসিকের ঔষধ

এই Mm Kit এক ধরনের অনিয়মিত মাসিকের ঔষধ, কোন বিবাহিত কিংবা অবিবাহিত মেয়ে যখন গর্ভধারণ করে তখন প্রথম লক্ষণ হল অনিয়মিত পিরিয়ড। এই অনিয়মিত পিরিয়ডকে নিয়মিত করতেই এম এম কিট কিংবা আরো নানান ধরনের গর্ভপাতের ওষুধের আবির্ভাব।

রিলেটেডঃ ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম

Mm kit এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

যেকোনো ইমার্জেন্সি পিল বা বাচ্চা নষ্ট করার ট্যাবলেটের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয়তো পরবর্তীতে আপনাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। 

সুতরাং সুবিধা বা উপকারিতা সম্পর্কে জানার পাশাপাশি যেকোনো কিটের অসুবিধা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানা উচিত। 

চলুন আর্টিকেলের এই পর্যায়ে এম এম কিট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও এম এম কিট খাওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করা যাক: 

রক্তপাত এবং ব্যাথা অনুভূত হতে পারে

যোনিপথে রক্তপাত ঘটা বা ব্যাথা লাগা যেকোনো গর্ভপাতের প্রক্রিয়ার স্বাভাবিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে কাজ করে। বিশেষ করে কিছুক্ষণ পর পর পেটে ব্যাথার কথা তো বলতেই হয়। এই সময়ে পেট ব্যাথার মাঝে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায় তলপেটে অনুভূত হওয়া ব্যাথা। 

তাছাড়া যোনিপথে রক্তপাত দেখা দিতে পারে, তবে এই রক্তপাতকে কোনোভাবেই পিরিয়ডের রক্তপাত মনে করা যাবে না। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত রক্তপাত হলে বিষয়টি বুঝতে হলে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং নিজে নিজে কোনো সিদ্ধান্ত বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না। 

এম এম কিট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এম এম কিট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (Photo: Ziska Pharmaceuticals Limited)

শর্ত পূরণ করতে হবে

এম এম কিট ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই আপনাকে বেশকিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে শুরুতে বলবো এলার্জির কথা। যাদের এলার্জি রয়েছে তারা এম এম কিট ছাড়া অন্য যেকোনো পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন

তবে যদি এম এম কিট ব্যবহার করতেই হয় সেক্ষেত্রে ডাক্তারকে জানিয়ে রাখবেন, আপনি এলার্জির রোগী এবং এমতাবস্থায় এই কিট আপনার জন্যে ভালো হবে কিনা। 

এলার্জির পাশাপাশি যাদের পোরফাইরিয়া, হেমোরেজিক ডিসঅর্ডার, বা সন্দেহজনক অ্যাক্টোপিকের সমস্যা রয়েছে তারাও ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। 

আর যারা উপরোক্ত সমস্যাগুলি দেহে উপস্থিত আছে কিনা বুঝতে পারছেন না তারা হালকা-পাতলা এই বিষয়টি রিসার্চ করে নেবেন। এক্ষেত্রে দক্ষ না হলে টেস্ট করিয়ে নেওয়াই সবচেয়ে ভালো! 

ব্যবহারের পর ঠান্ডা লাগতে পারে 

এম এম কিট ব্যবহারের পর ঠান্ডা লাগা সম্পর্কিত যত ধরণের সমস্যা বা রোগ রয়েছে সবগুলোই বা এর যেকোনো একটি রোগ দেখা দিবেই। যেমন অনেক বেশি জ্বর আসা, হাড় কাঁপানো ঠান্ডা লাগে, সর্দি আসা, গলা ব্যাথা করা ইত্যাদি যেকোনো সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

এর পাশাপাশি খাবারে অরুচি, ডায়রিয়া এবং বমি বমি ভাবও অনুভূত হতে পারে। আর যদি এসব সমস্যা বেশিদিন ধরে দেহে উপস্থিত থাকে সেক্ষেত্রে মাথা ব্যাথাও দেখা দিতে পারে। 

এই অংশে আলোচিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি যদি অনেক বেশি বেড়ে যায় সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নতুবা রোগী মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে। 

পরবর্তী দ্রুত গর্ভধারণে ঝুঁকি

গর্ভপাত করানোর ক্ষেত্রে যা এম এম কিটসহ অন্যান্য যেকোনো কিট ব্যবহারের কথা ভাবছেন তাদের বলা রাখা ভালো, একবার গর্ভপাত ঘটানোর পর সাথে সাথেই গর্ভবতী হওয়ার বাড়তি ঝুঁকি কাজ করে। এক্ষেত্রে পরবর্তীবার গর্ভবতী হওয়ার ক্ষেত্রে অন্তত ৬ থেকে ১২ মাসের মতো সময় নেওয়া প্রয়োজন। 

পূণরায় ব্যবহারের প্রয়োজন পড়তে পারে

এম এম কিট একবার ব্যবহার করার পর যদি কাজ না হয় সেক্ষেত্রে আবারও একই পদ্ধতি অনুসরণ করে এই কিট ব্যবহার করতে হবে। যাদের একবারেই গর্ভটিস্যু বের হয় না কিন্তু শরীরে এক ধরণের ভালো লাগা কাজ করে তাদেরও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আবারও একই পদ্ধতি ব্যবহার করে এম এম কিট নিতে হবে। 

স্তন্যপানে ঝুঁকি কাজ করে

আপনি যদি ইতিমধ্যেই মা হয়ে থাকেন এবং আপনার যদি দুধের বাচ্চা থাকে সেক্ষেত্রে এম এম কিট ব্যবহার না করাই ভালো। তবে অতিব প্রয়োজনে ব্যবহার করতে হলে শুরুতে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন এবং পরবর্তীতে এই কিট গ্রহণ করবেন। 

কারণ অনেক সময় এই ধরণের গর্ভপাতের সাথে সম্পর্কিত কিট গ্রহণের ফলে বাচ্চার অনেক সমস্যা হয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এম এম কিট গ্রহণের অন্তত ৫ ঘন্টা পর বাচ্চাকে দুধ পান করানো উচিত। বিশেষ করে স্তন্যপানের ক্ষেত্রে এই সমস্যা প্রত্যক্ষভাবে দেখা দিতে পারে। 

Mm kit খাওয়ার পর সাধারণত কত দিন রক্তপাত হয়?

mm kit খাওয়ার পর সাধারণত রক্তপাত হওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা, কেননা আপনি এই ওষুধটা খেয়েছেন রক্তপাত হয়ে পেট পরিষ্কার হওয়ার জন্যে, এতে কারো ক্ষেত্রে ১-৩দিন রক্তপাত হবে, আবার কারো ক্ষেত্রে দেখা গেছে ১-৭দিন রক্তপাত হয়।

Mm kit খাওয়ার পর রক্তপাত কতদিন হবে সেটা নির্ভর করে আপনি কততম সপ্তাহের গর্ভবতী, যদি আপনি ৫০-৬৩ দিনের মতো গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে রক্তপাত কিছুটা দীর্ঘ হতে পারে, কারণ তখন পেটে বাচ্চার ভ্রণ বৃদ্ধি পেয়ে যায়, তাই পেট পরিষ্কার হতে কিছুটা সময় লাগবে।

অপরদিকে আপনি যদি ২০-২৫ দিনের গর্ভবতী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ১-৭ দিনের মধ্যেই রক্তপাত বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের ব্লগে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত একটা লেখা আছে, এই লেখা পড়ে আপনি মিলিয়ে নিতে পারেন আপনি কত দিনের গর্ভবতী। তাহলে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে Mm kit খাওয়ার পর আপনার সাধারণত কত দিন রক্তপাত হতে পারে।

এম এম কিট কতবার খাওয়া যায়?

এম এম কিট খাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি হওয়ার কারণে এই কিট বেশি না খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। এম এম কিট খাওয়ার সবচেয়ে বড় ও মূল ঝুঁকি হলো পরবর্তী গর্ভধারণের অনিশ্চয়তা। আপনি চাইলে বার বার এই কিট খেতে পারবেন, তবে যত বেশি এই কিট খাবেন আপনার পরবর্তী গর্ভধারণের অনিশ্চয়তা ততই বেড়ে যাবে।

তাই এই কিট বার বার খাওয়ার আগে আপনার উচিত এই ব্যপারে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা।

শেষ কথা

অবশেষে এই কথাই বলতে চাই যে, যেকোনো কিট বা ইমার্জেন্সি পিল গ্রহণের পূর্বে বাড়তি সচেতন অবলম্বন করা প্রয়োজন। কারণ গর্ভপাতের ক্ষেত্রে এসব কিট বুলেটের মতো কাজ করলেও পরবর্তীতে তা দেহে বেশ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। 

তাছাড়া পরবর্তীতে বাচ্চা প্রসব করার ক্ষেত্রে এসব কিট ব্যবহারের একটা নেতিবাচক প্রভাব তো থাকেই। তবে যেকোনো বিষয়েরই ভালো-মন্দ দু’টো দিক সমানভাবেই কাজ করে। 

এম এম কিটের উপকারিতার বিষয়টিকে যেমন আমরা ফেলে দিতে পারবো না, ঠিক তেমনই এম এম কিট খাওয়ার ঝুঁকির বিষয়টিকেও আমরা এড়িয়ে চলতে পারবো না। 

এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শকেই সমস্যার কার্যকরী সমাধান মনে করতে হবে৷ তাছাড়া অপ্রয়োজনে গর্ভপাত বা ভ্রূন-হত্যার বিষয়টিকে সমাজ থেকে দূর করার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিটিই নারীর মাতৃত্বই পূর্ণতা পাক এবং ভ্রূণ পূর্ণতা পাক সুস্থ মানবরূপে! 

সচরাচর জিজ্ঞাসা

এম এম কিট খাওয়ার কত দিন পর সহবাস করা যায়?

এম এম কিট খাওয়ার পর সাধারণত মাসিকের মতো রক্তপাত হবে, এবং সুস্থ ও স্বাভাবিক হলে ধীরে ধীরে সহবাস শুরু করা যাবে, রক্তপাত সাধারণত ৭/১৫ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যাওয়ার কথা।

যদি কোন কারণে এর বেশি সময় ধরে হালকা হালকা রক্তপাত হয়, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে, এবং সহবাস থেকে দূরে থাকতে হবে।

এম এম কিট এর দাম কত?

এম এম কিটের দাম বা বর্তমান বাজারমূল্য মাত্র ৩০০ টাকা। তবে স্থানভেদে বিভিন্ন ফার্মেসিতে এই মূল্যের ২/১ টাকার তারতম্য থাকতেই পারে!

এম এম কিট কখন খেতে হয়?

মূলত এম এম কিট গ্রহণের সঠিক এবং একমাত্র সময় হলো গর্ভধারণের দিন থেকে পরবর্তী ৬৩/৬৪ দিন বা ৯ সপ্তাহ। 

তাছাড়া প্রথমবার যদি এম এম কিট কাজ না করে সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী একইভাবে এই কিট গ্রহণ করা যেতে পারে৷

এম এম কিট কিসের ঔষধ?

এম এম কিট মূলত গর্ভপাতের ঔষধ। যা সেবন করার পর ৪ থেকে ৬ ঘণ্টার ভেতরেই গর্ভটিস্যু বের হয়ে যায়। অনেক সময় এর বেশি সময়েরও প্রয়োজন পড়তে পারে।

এম এম কিট কেন খায়?

অপরিকল্পিত গর্ভধারণ ঠেকাতে এম এম কিট খাওয়া হয়। যারা বাচ্চা নিতে চান না, তবে ভুলে মা দুর্ঘটনায় গর্ভধারণ করে ফেলেন তাদের  তারাই সাধারণত এম এম কিট ব্যবহার করে থাকে।

তথ্যসুত্রঃ

Leave a Reply