শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় ডাক্তার আমাদের বিভিন্ন ধরনের ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। এর মধ্যে ফলিক এসিড ট্যাবলেট একটি পরিচিত নাম। তবে আমরা অনেকেই ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর উপকারিতা ও অপকারিতা, কাজ ও গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত নই। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিডের প্রয়োজনীয়তা অনেক।
আমেরিকান একটি গবেষণায় দেখা গেছে ৭৭% মহিলারাই গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড নিয়ে থাকেন।
তাই আজকের লেখার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন ফলিক এসিড কি, ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর উপকারিতা, ফলিক এসিড ট্যাবলেট খেলে কি হয় এবং ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
তাহলে চলুন দেরী না করে প্রথমে দেখে নেই ফলিক এসিড কি?
ফলিক এসিড কি?
ফলিক এসিড হলো এক ধরণের ভিটামিন যা ভিটামিন বি ৯ (Vitamin B9) এর অন্তর্ভুক্ত। ফলিক এসিডকে “ফোলেট” নামেও অভিহিত করা হয়।
এটি পানিতে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন তাই চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনের মতো এর শরীরে মজুদ থাকার কোনো সুযোগ নেই।
প্রাকৃতিক বিভিন্ন খাদ্যে ফলিক এসিড বিদ্যমান থাকে। সবুজ শাকসবজি ফলিক এসিডের একটি বড় উৎস। এছাড়াও আরো কিছু খাদ্যে ফলিক এসিড রয়েছে। যেমনঃ টক ফল,লাল চাল,লাল আটা,ডাল,ডিম ইত্যাদি।
খাবার রান্না করলে সেখানে থাকা ফলিক এসিড সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। আবার আমরা যে ফলিক এসিড গ্রহণ করি, তা শরীর থেকে প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে যায়।
সব মিলিয়ে আমাদের শরীর এটিকে বেশিদিন জমা রাখতে পারে না। আবার আমাদের শরীর ট্যাবলেট থেকে পুরো ফলিক এসিড শুষে নিতে পারে, যা প্রাকৃতিক খাবারের ক্ষেত্রে করে না।
তাই খাদ্য ছাড়াও ফলিক এসিড ট্যাবলেট আকারে রয়েছে যা সেবন করার মাধ্যমে দেহে এর অভাব দূর করা যায়।
ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
ফলিক এসিডের সম্পর্কে জানার পর অবশ্যই ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা জরুরী। কেননা সঠিকভাবে যদি ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন না করা হয় তাহলে কোনোভাবেই এর সঠিক উপকারিতা পাওয়া যাবে না।
ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়ার সঠিক নিয়ম হচ্ছে গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন করা। খাবার খাওয়ার এক বা দুই ঘণ্টা আগে এই ট্যাবলেট সেবন করলে ভালো। কারণ এটি খালি পেটেই ভালো কাজ করে।
উক্ত নিয়মটি গর্ভাবস্থা থেকে সন্তান জন্মের তিন মাস পর পর্যন্ত অব্যাহত রাখা উচিত। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতিত দৈনিক ১০০০ মাইক্রোগ্রামের বেশি ফলিক এসিড গ্রহণ করা উচিত নয়। নিয়মিত ফলিক এসিড ট্যাবলেট গ্রহনের পাশাপাশি অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত।
এছাড়া অন্যান্য প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ প্রতিদিন ১ টি করে ফলিক এসিড ট্যাবলেট সকালে বা রাতে সেবন করতে পারেন। তবে অবশ্যই তা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা উচিত।
কিভাবে খাবেন?
ফলিক এসিড ট্যাবলেট যে কোন খাবারের সাথে কিংবা খাবার ছাড়াই খাওয়া যায়, এমনকি ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাবার পানির সাথে গুড়া করে একটি পরিষ্কার চামুচ দিয়ে নেড়ে পানির সাথে খেতে পারবেন।
যদি আপনার ডাক্তার আপনাকে তরল ফলিক এসিডের বোতল দিয়ে থাকে তাহলে প্লাস্টিকের সিরিঞ্জ অথবা ওষুধের চামুচ দিয়ে এই তরল খেতে পারবেন। অবশ্যই ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিমাণ মতো খেতে হবে, কখনই ওষুধের চামুচ ছাড়া রান্না ঘরের চামুচ ব্যবহার করবেন না, এতে দেখা যাবে ওষুধের পরিমাণ বেশি কিংবা কম হয়ে যাবে।
যদি ফলিক এসিড ট্যাবলেট খেতে ভুলে যান তাহলে কি করবেন?
একবার বা দুইবার এটি খেতে ভুলে গেলে ভয়ের কিছু নাই, তবে অবশ্যই মনে রাখবেন, যদি আপনি এটি খেতে চান না, তাহলে আপনার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করেই তাহলে বন্ধ করবেন।
আপনি যদি এটি খেতে ভুলে যান তাহলের নিচের নিয়মগুলি অনুসরণ করবেন।
দিনে একবার ভুলে গেলেঃ
ধরুন আপনার ডাক্তার আপনাকে দিনে ২ বার ট্যাবলেটটি খেতে বলেছেন, তাহলে এটি সকালে ও রাতে খেতে হবে, এমতাবস্থায় যদি সকালে এটি খেতে ভুলে যান তাহলে মনে হওয়ার সাথে সাথেই এটি খেয়ে নিবেন।
যদি দেখেন আপনার মনে হতে হতে রাত হয়ে গেছে তাহলে সকালের ডোজের কথা ভুলে যান আবার রাতের ডোজ থেকে শুরু করেন।
সপ্তাহে ১ বার ভুলে গেলেঃ
যদি আপনার ডাক্তার আপনাকে সপ্তাহে ১বার এই ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, ভুলে যাওয়ার পর যখনই মনে হবে তখনই এটি খেয়ে নিবেন। খিয়াল রাখতে হবে এই সময় যেনো আপনি methotrexate গ্রহণ না করেন। যদি আপনি methotrexate নিয়ে থাকেন তাহলে ১ দিন অপেক্ষা করুন, এবং পরে ফলিক এসিড ট্যাবলেটটি খান, এবং পরে আপনার সাপ্তাহিক নিয়ম মেনে চলুন।
রিলেটেডঃ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় ২০২৩
ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর উপকারিতা:
অনেকের মনেই এই প্রশ্ন ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর কাজ কি? মূলত ফলিক এসিড মানবদেহের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান। বিশেষ করে এটি গর্ভবতী নারী ও নবজাতক শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্যাবলেট।
তবে এর আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে যার জন্য এটি সব বয়সের নারী ও পুরুষের জন্য দরকার। ফলিক এসিড ট্যাবলেট গ্রহনের ফলে নিম্নোক্ত উপকারিতা পাওয়া যায়:-
- ফলিক এসিড ট্যাবলেট ভিটামিন বি ১২ এর সাথে মিলে লোহিত রক্ত কণিকা গঠন করে যা অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।
- এটি ডিএনএ গঠন,কোষ বিভাজন এবং ডিএনএ মেরামত করতে সাহায্য করে। এজন্য এটি গর্ভাবস্থা ও নবজাতকের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান।
- ফলিক এসিড রক্ত কনিকা বৃদ্ধি ও দেহে প্রোটিন তৈরিতে অংশ নেয়।
- এটি গর্ভের শিশুর মস্তিষ্ক, মাথার খুলি ও স্নায়ুতন্ত্র গঠনে বিশেষভাবে সহায়তা করে।
- ফলিক এসিড গর্ভের নিউরাল টিউব গঠনে সহায়তা করে। এই নিউরাল টিউব গর্ভাবস্থার প্রথম সপ্তাহে বিকশিত হয়। এর মাধ্যমে শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের অন্যান্য অংশ তৈরি হয়।
- মহিলারা যদি গর্ভধারণের চেষ্টা করার কয়েক মাস আগে থেকে ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ শুরু করেন, তবে ক্রোমোসোমাল বা জন্মগত ত্রুটিযুক্ত শিশুর জন্মের সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
- গবেষণায় দেখা গেছে, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি যে সব গর্ভবতী মায়েরা অতিরিক্ত ফলিক এসিড গ্রহণ করছেন তাদের গর্ভজাত শিশুদের মধ্যে স্নায়ুতন্ত্রের ও মস্তিষ্কের এসব ত্রুটি শতকরা ৬০ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত কমানো সম্ভব হয়েছে।
- ফলিক এসিড ডিম্বাণুকে সুস্থ রাখতে এবং কোন রোগসৃষ্টিকারী এজেন্ট থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে।
- ফলিক এসিড মায়ের জন্য বিভিন্নভাবে উপকারী। গর্ভাবস্থায় জটিলতা,গর্ভস্রাব, হৃদরোগ, স্ট্রোক ইত্যাদি প্রতিরোধে ফলিক এসিড কার্যকর ভূমিকা রাখে।
- ফলিক এসিড গর্ভের শিশুর নানান জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করে।
- ফলিক এসিড পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করে। যা তার সঙ্গীকে গর্ভধারণ করতে সাহায্য করে।
- ফলিক এসিড নারীদের ডিম্বানুর গুণগত মান উন্নয়নেও সহায়তা করে।
- ফলিক এসিড রক্তনালীর নমনীয়তা হ্রাস করে, যার ফলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন সঠিকভাবে পৌঁছায়।
- শরীরে যেন আয়রন ভালো মতো কাজ করতে পারে তার পরিবেশ তৈরিতে ফলিক এসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- কোলোন ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার, সারভাইক্যাল ক্যান্সার, প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার, স্টোমাক ক্যান্সার ইত্যাদি প্রতিরোধে ফলিক এসিড কার্যকর ভূমিকা রাখে।
- দেহে ফলিক এসিডের অভাবে হিমোসিসটিন নামক এক ধরনের জৈব রাসায়নিক পদার্থ মজুদ হতে থাকে , যার কারণে হার্টের অসুখ হয়। এজন্য ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন হার্টের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলিক এসিড গ্রহণের মাধ্যমে হোমোসিসটিনের মাত্রা স্বাভাবিক রেখে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। কারণ রক্তে হোমোসিসটিনের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস বৃদ্ধির যোগসূত্র বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।
- ফলিক এসিড হৃদপিন্ডে কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য হৃদপিন্ডে কোলেস্টেরল জমা করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
- নিয়মিত ফলিক এসিড ট্যাবলেট গ্রহনে দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- বয়স্কদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ফলিক এসিড সাহায্য করে।
- ফলিক এসিড চোখের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। এটি বয়স সম্পর্কিত ম্যাকুলার অবক্ষয়ের ঝুঁকি কমায়,যা বয়স্কদের অন্ধত্বের একটি প্রধান কারণ।
- শরীরে ভিটামিন বি ৯ এর অভাব থাকলে ফলিক এসিড ট্যাবলেট তা পূরণ করতে সহায়তা করে।
- ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন করলে দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি ও ভিটামিন সরবরাহ নিশ্চিত হয় ফলে ত্বক, চুল ও নখ ভালো থাকে।
- ফলিক এসিড স্বাস্থ্যকর কোষ উৎপাদন করে এবং তাদের বিভাজিত করার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, ফলে চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হয়।
- পেশী গঠনে এবং পেশীর টিস্যু বজায় রাখতে এবং এর বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে ফলিক এসিড। ফলে অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে।
- ফলিক এসিড অন্ত্রের স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির মাধ্যমে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- ফলিক এসিড লিভারের জন্যও উপকারী। এটি বিভিন্ন লিভারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- ফলিক এসিড ট্যাবলেট বিষন্নতা, ডাইমেনসিয়া সহ আরো অনেক ধরনের রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।
- এটি অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর করে।
এসব উপকারিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ফলিক এসিড কৃত্রিমভাবে সংযোজন করা বাধ্যতামূলক করেছে।
রিলেটেডঃ পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় ২০২৩
ফলিক এসিডের অভাবে কি হয়?
ফলিক এসিড যেহেতু আমাদের দেহে নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে তাই এর অভাবে দেহে অনেক ধরনের জটিলতা দেখা দেয়।
দেহে ফলিক এসিডের অভাবে বেশ কিছু উপসর্গ দেখা দেয়।
- ক্লান্তিভাব বেড়ে যায়। সহজেই কোনো কাজে অনীহা সৃষ্টি হয়।
- মুখে ঘা হয় ও জিহ্বা ফুলে যায়। অনেকসময় মুখে আলসার জনীত সমস্যা দেখা দেয়।
- চুল ধূসর হয়ে যায় এবং ত্বকের রং ফ্যাকাশে হয়ে যায়।
- ফলিক অ্যাসিডের অভাবের কারণে অনেক সময় শরীরের বৃদ্ধি ধীরগতির হয়ে যেতে পারে।
- এছাড়াও ফলিক অ্যাসিডের অভাবে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে।
- ফলিক এসিডের অভাব হলে শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের অন্যান্য অংশের গঠনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমন ক্ষেত্রে শিশু নানান জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মায়।
- বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।
তাই উপরোক্ত এসব সমস্যা প্রতিরোধে নিয়মিত ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
রিলেটেডঃ চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম, পুষ্টিগুণ
ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ফলিক এসিড ট্যাবলেট অবশ্যই নিয়ম মেনে সেবন করতে হয়। বেশিরভাগ নারী ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবনে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন না । তবে অতিরিক্ত মাত্রায় ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন করলে নিম্নোক্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে:-
- বমি বমি ভাব
- হজমে সমস্যা
- দুর্বলতা এবং সাধারণ অস্বস্তি
- অ্যালার্জি বা চুলকানি
- ডায়রিয়া
- পেটে গ্যাস, পেটে অস্বস্তি এবং ব্যাথা
- ত্বকে ফুসকুড়ি
- শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে অসুবিধা
- অনিদ্রা
ফলিক এসিড ট্যাবলেট কোথায় পাওয়া যায়?
দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গর্ভবতী নারীদের বিনামূল্যে ফলিক এসিড ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়।
এছাড়া নিকটবর্তী যেকোনো ফার্মেসী বা হাসপাতাল থেকেও ফলিক এসিড ট্যাবলেট সংগ্রহ করা যায়।
ফলিক এসিড ট্যাবলেটের দাম কত?
ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর দাম কোম্পানি ভেদে বিভিন্ন মূল্যের হয়ে থাকে। তবে এর দাম প্রতি পিস ৪ থেকে ৬ টাকা হয়ে থাকে।
তাই এসব সমস্যা এড়াতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমিত পরিমাণে ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন করা উচিত।
পরিশেষে বলা যায়
দেহের সুস্থতায় অন্যান্য ভিটামিনের মতো ফলিক এসিডও একটি অপরিহার্য উপাদান। সঠিকভাবে ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন করার মাধ্যমে এর উপকারিতা গুলো গ্রহন করা যায়। তাই ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম মেনে এটি খেতে হবে।
যদি সঠিক নিয়ম মেনে খান তাহলে ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর উপকারিতাগুলি খুব সহজেই পেয়ে যাবেন, অন্যথায় এটি অনেক সময় হিতে-বিপরীত হতে পারে।
তো বন্ধুরা এই ছিলো আজকের লেখা ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা ও অপকারিতা, যদি লেখাটি ভালো লাগে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না, আর যদি এই লেখা নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আজকের মতো এখানেই বিদায় দেখা হবে আগামী লেখাতে। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
Tag: ফলিক এসিডের অপকারিতা, ফলিক এসিড ট্যাবলেট কখন খেতে হয়, ফলিক এসিড ট্যাবলেট খেলে কি হয়
সচরাচর জিজ্ঞাসা
শুধু খাবার থেকেই কি পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায় নাকি ট্যাবলেটেরও প্রয়োজন?
ফলিক অ্যাসিড যুক্ত খাবারের পাশাপাশি স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে গর্ভবতী মায়েদের নিয়ম করে ফলিক অ্যাসিডের ট্যাবলেটও খাওয়া আবশ্যিক।
সন্তানের জন্মের পরে স্তন্যপান করানোর সময়েও মায়ের শরীরে এই ভিটামিন প্রয়োজন হয়। তাই সুস্থ সন্তানের পাশাপাশি মাকেও ভাল রাখতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবার ও ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া উচিত।
ফলিক এসিড ট্যাবলেট কখন খাওয়া উচিত?
বাচ্চা নেয়ার চেষ্টা করছেন এমন সময়ে এবং গর্ভাবস্থায় প্রথম ১২ সপ্তাহে ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এমন সময়ে ফলিক এসিডের প্রয়োজন অনেক বেশি হয়।
এছাড়াও ডাক্তার যাদের শরীরে ফলিক এসিডের ঘাটতি রয়েছে তাদের এই ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
দেহে ফলিক এসিডের অভাবের কারণ কি?
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত অ্যালকোহল পান, পুষ্টিকর খাদ্য না খাওয়া এসবের কারণে দেহে ফলিক এসিডের অভাব সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়াও কারো কারো জন্মগতভাবেই বিভিন্ন জিনের কারণে এই এসিডের ঘাটতি থাকতে পারে।
ফলিক এসিড ও ফোলেট কি একই?
ফলিক এসিড এবং ফোলেট অভিন্ন উপাদান। তবে ভিটামিন বি ৯ এর প্রাকৃতিক রূপকে ফোলেট বলে। আর এর কৃত্রিম রূপকে ফলিক এসিড বলে। কিন্তু এদের উভয়ের উপকারিতা একই।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক কি পরিমাণে ফলিক এসিড গ্রহন করা উচিত?
চিকিৎসকদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন অন্তত ২০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড গ্রহণ করা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি ডাক্তার বা ডায়েটিশিয়ান দ্বারা সুপারিশকৃত খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করা উচিত।